সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলায় স্কুলছাত্র সুমেল আহমদ শুকুর হত্যা মামলার রায়ে ৮ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৭ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বুধবার (৩০ জুলাই) সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ তৃতীয় আদালতের বিচারক এ রায় ঘোষণা করেন। নিহত সুমেলের পরিবারের সদস্যরা রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

 

সিলেট জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) অ্যাডভোকেট কামাল হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মামলায় মোট ৩৪ জন আসামির মধ্যে ৮ জনের মৃত্যুদণ্ড এবং ৭ জনের যাবজ্জীবন সাজা দেওয়া হয়েছে। অপরদিকে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় বাকিদের খালাস দেওয়া হয়েছে।

 

মামলার নথি অনুযায়ী, ২০২১ সালের ১ মে জমি দখল নিয়ে বিরোধের জেরে চৈতনগর গ্রামের ইব্রাহিম আলী সিজিল গংদের নিজস্ব জমিতে মাটি কাটতে থাকেন সাইফুল ও তার সহযোগীরা। এ সময় বাধা দিতে গেলে সশস্ত্র সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে শাহজালাল হাইস্কুলের ১০ম শ্রেণির ছাত্র সুমেল আহমদ শুকুর গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয় এবং হাসপাতালে নেওয়ার পর তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় সুমেলের বাবা ও চাচাসহ আরও তিনজন আহত হন।

 

হত্যাকাণ্ডের তিন দিন পর, ৩ মে, নিহত সুমেলের চাচা ইব্রাহিম আলী সিজিল বিশ্বনাথ থানায় ২৭ জনের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ঘটনার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান তৎকালীন সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি মফিজ উদ্দিন এবং পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন। তদন্তে গাফিলতি ও আলামত নষ্টের অভিযোগে বিশ্বনাথ থানার তৎকালীন অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শামিম মুসা, এসআই নূর ও এসআই ফজলুল হককে ক্লোজড করা হয়।

 

পরবর্তীতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) রমা প্রসাদ চক্রবর্তী ৩২ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন। মামলায় মোট ২৩ জন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দেন। যুক্তিতর্ক শেষে আদালত ৩০ জুলাই চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করেন।

 

রায়ে আরও উল্লেখ করা হয়, অভিযুক্তদের মধ্যে কেউ কেউ বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের সাজা পেয়েছেন। এদের মধ্যে কিছু আসামি ইতোমধ্যে হাজতবাসের মাধ্যমে সাজা ভোগ করেছেন, ফলে তারা মুক্তি পাবেন। মামলার প্রধান আসামি সাইফুল প্রায় সাড়ে তিন বছর ধরে কারাগারে রয়েছেন। এজাহারভুক্ত আরেক আসামি মামুনুর রশীদ এখনও পলাতক।