ইউএনও উম্মে সালিক রুমাইয়ার কোলে মানসিক ভারসাম্যহীন নারীর সদ্য ভুমিষ্ঠ হওয়া শিশু। ছবি সংগৃহীত

পাগলিটাও মা হয়েছে, তবে বাবা হয়নি কেউ। পাগলি বলে যায়নি ছেড়ে, প্রসব ব্যথার ঢেউ। রাস্তায় ঘুরে কাটে দিন, আর রাস্তায় কাটে রাত। পাগলি বলে স্বামী হয়নি, পায়নি সংসার স্বাদ। পাগলিও কি করেছিল যৌন আহ্বান?

নিলাদ্র নাজিমের জনপ্রিয় একটি কবিতার কয়েকটি লাইনের বাস্তবায়ন হয়েছে সিলেটের জৈন্তাপুরে কোনো এক মানুষরূপী জানোয়ারের লালসার শিকার এক মানসিক ভারসাম্যহীন নারীর কোলজুড়ে এসেছে ফুটফুটে এক কন্যাসন্তান।

ব্যস্ততম সিলেট তামাবিল জাফলং  মহাসড়কের পাশে অবস্থিত এ বাজারের খোলা আকাশের নিচে তার গর্ভজাত সন্তানের জন্ম হয়। বুধবার  সন্ধ্যায় কনকনে শীতের রাতে ঘটনাটি ঘটেছে জৈন্তাপুর উপজেলার ৬নং চিকনাগুল ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত স্থানীয় চিকনাগুল বাজারে। মানসিক ভারসাম্যহীন এই নারীর সন্তানের মা হলেও বাবা পরিচয়ে এগিয়ে আসেননি কেউ।

 

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার (১লা জানুয়ারি) সন্ধ্যার পর ভবঘুরে ওই মহিলার গর্ভ হতে বাচ্চাটির জন্ম হয়। পরে খবর পেয়ে স্হানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামারুজ্জামান চৌধুরী এলাকার গন্যমান্য ব্যাক্তিবর্গদের নিয়ে সন্তান ও মায়ের পরিপূর্ণ যত্ন ও লালন পালনের ব্যবস্থা করেন।

 

এদিকে মানসিক ভারসাম্যহীন নারীর গর্ভে সন্তান প্রসবের খবর পেয়ে রাতে চিকনাগুল এলাকায় মা ও সদ্য ভুমিষ্ঠ হওয়া শিশু সন্তানকে দেখতে ও খোঁজ খবর নিতে ছুটে আসেন জৈন্তাপুর উপজেলার বিদায়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার উম্মে সালিক রুমাইয়া। এ সময় তিনি পিতৃপরিচয়হীন মেয়ে সন্তানটিকে কোলে তুলে নেন। সদ্য ভূমিষ্ট শিশু সন্তানকে কোলে তুলে নেয়ার ছবিটি ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক ভাইরাল হয় এবং জৈন্তাপুরসহ সর্বমহলে প্রশংসিত হয়েছে। এ সময় ইউএনও’র পক্ষ থেকে বাচ্চাটির সঠিক যত্ন চিকিৎসা ও প্রসুতি মায়ের চিকিৎসাসহ বাচ্চাটি লালন পালনে আইনানুগ সকল ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে ঘোষনা করেছেন।