সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেছেন, কল্যাণরাষ্ট্র গঠন করতে হলে প্রবীণদের অতীত অভিজ্ঞতা, জ্ঞানের আলো আর জীবনের বাস্তবতা নিয়ে নবীনদের সৃজনশীলতার সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন।

তিনি বলেন, আমাদের ঘরে, পরিবারে বা সমাজে যারা প্রবীণ তাদের সমস্যাগুলো আমরা বুঝবো, সমাধানের চেষ্টা করবো, তাদের পাশে থেকে আশার হাত বাড়িয়ে দেবো। কারণ নবীন ও প্রবীণ এই দুই প্রজন্ম আলাদা নয়; বরং একটিই জীবন, যার দুই অধ্যায়। আজকের নবীন আগামী দিনের তারাই প্রবীণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রবীণ ও নবীনদের অভিজ্ঞতা আর উদ্যম মিলেই তো গড়ে উঠবে একটি পরিপূর্ণ সমাজ তথা কল্যাণময়ী রাষ্ট্র।

শনিবার (০১ নভেম্বর) ঢাকায় খিলগাঁও পল্লীমা সংসদ কনফারেন্স হলে ‘নবীন-প্রবীণ আন্তঃপ্রজন্ম স্বনির্ভর ক্লাব’ আয়োজিত দিনব্যাপী ‘নবীন-প্রবীণ আন্তঃপ্রজন্ম মিলনমেলা-২০২৫’ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।

 

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ , সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোঃ সাইদুর রহমান খান, অতিরিক্ত পরিচালক এম এম মাহমুদুল্লাহ, বাংলাদেশ সিনিয়র সিটিজেন ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সাইদুজ্জামান চপল, প্রবীণদের মধ্যে ফজলুল কবির এবং নবীদের মধ্যে এডভোকেট নীলাঞ্জনা রিফাত সুরভি, ছোঁয়া,ও আনিকা আনজুম প্রমুখ। স্বাগত বক্তৃতা করেন নবীন প্রবীণ আন্তঃপ্রজন্ম স্বনির্ভর ক্লাবের মুখ্য উদ্যোক্তা ও আহবায়ক মু. হাফিজুর রহমান ময়না।

উপদেষ্টা বলেন, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের কাজ স্পর্শকাতর এবং কাজের পরিধি বিশাল। তিনি বলেন, এদেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সেবামূলক কাজ করাই এ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব।

উপদেষ্টা বলেন, এ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেওয়ার পর সুশাসন ফিরিয়ে আনতে অবকাঠামগত পরিবর্তন করেছি এবং আমার নিজের অংশ গ্রহণের মধ্য দিয়ে সফলতায় আনতে চেষ্টা করেছি।

তিনি বলেন, বয়স্ক ভাতা ৬১ লাখে উন্নীত করেছি, বিধবা ভাতা ৩৫ লক্ষে উন্নত করেছি এবং সকল ভাতার পরিমাণ বৃদ্ধি করা হয়েছে তা সকলের জানা। এছাড়াও বয়স্ক মানুষের জন্য বিদেশে অর্থায়নে ৪০০টি ক্লাবের পাশাপাশি আরো ৬০০টি ক্লাব তৈরির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। যাতে প্রবীণরা একঘেয়েমি জীবন থেকে পরিত্রাণের জন্য একে অপরের সাথে গল্প করতে পারে, চা খেতে পারে। তিনি বলেন, এক্ষেত্রগুলোতে প্রতিমাসে যদি নবীন- প্রবীণদের মিলনমেলার আয়োজন করতে পারেন তাহলে এই ১০০০ বাচ্চাদের সৃজনশীলতা পরামর্শ কাজে একে অপরের সংস্পর্শ করতে পারবেন। তিনি দাদু আর নানুদের পুরনো জায়গাগুলো ফেলে দেওয়ার নয় উল্লেখ করে বলেন, দাদু আর নানুদের জীবনটা আনন্দময় হয়ে ওঠে বাচ্চাটি তার সাথে থাকে বলেই। তিনারা বলেন, শিশুদের জন্য ডেকেয়ার সেন্টার, হাসপাতালে চিকিৎসা সেবাসহ সর্বোপরি সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সার্বিক কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।

উপদেষ্টা আরো বলেন, এই মন্ত্রণালয় ব্রিজ নিয়ে কাজ করে না, নির্মাণ নিয়ে কাজ করে না, অসচ্ছল মানুষের উন্নতি কিভাবে করা যায় সেই কাজ করে থাকে। এই কারণে এ মন্ত্রণালয়ের কাজ অত্যন্ত স্পর্শকাতর এবং বিশাল। এ মন্ত্রণালয়ের ভিতরে অন্তর্নিহিত বিশাল শক্তি আছে।

উপদেষ্টা বলেন, আগামীতে যদি আমরা সত্যিকারের একটি কল্যাণময়ী রাষ্ট্র করতে পারি তাহলে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের যে ক্ষেত্রগুলো আছে সে কাজগুলো জোরালো করতে পারলে এদেশের মানুষ জানলে খুব খুশি হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

তিনি প্রবীণদের বলেন, আপনারা নবীনদের নিয়ে বসুন, আলোচনা করুন কিভাবে দেশকে আরো উন্নতির দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায় এবং সুন্দর বাংলাদেশ গড়ে তোলা যায়।