খলিলুর রহমান:: সিলেট-তামাবিল মহাসড়কের হরিপুরে সেনাসদস্যদের ওপর চোরাচালানিদের হামলা মামলা ও গ্রেফতারের পর উত্তরপূর্ব সিলেটের চোরাচালান হাট’র পরিবর্তন ঘটেছে। জৈন্তাপুর উপজেলা সদর বাজার এখন ভারতীয় চোরাই পশু ও পণ্যের মহাআড়তে পরিনত হয়েছে। উপজেলার সীমান্ত চোরাচালানের প্রধান লাইনম্যান ও, নিয়ন্ত্রক করিম আহমদ ওরফে বেন্ডিস করিমকে এবার ওই বাজারের ইজাদার বানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

 

প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা উপজেলা আওয়ামী লীগের পলাতক সাধারণ সম্পাদক লিয়াকত আলী ওরফে লিয়াকত লিলা’র আশীর্বাদে স্বৈরাচার আমলে বেন্ডিস করিমের নিয়ন্ত্রনে চলে যায় জৈন্তাপুর সীমান্তের সার্বিক।

চোরাচালান। স্বৈরাচার আওয়ামী সরকারে পতন ঘটলেও পতন ঘটেনি সরকারর দলের প্রেতাত্মা চোরাচালানের শীর্ষ লাইনম্যান বেন্তিস করিমের।

 

স্থানীয় সূত্র জানায়, বুঙ্গার প্রধান লাইনম্যান থাকাবস্থায় চলতি বাংলা সনের জন্য জৈন্তাপুর সদর বাজারটিও করিম আহমদ ওরফে বেন্ডিস করিমের নামে ইজারা নিয়ে নেওয়া হয়। প্রায় ১শ বুঙ্গাড়ী ও রাজনৈতিক নেতা হোতারা সুক্ষ্ম কৌশলী টেন্ডারবাজির মাধ্যমে কম ইজারামূল্যে বাজারটি করিমের নামে নিয়ে নেন। এর পর বাজারটি চোরাচালানের মহা আড়তে পরিনত করে তুলেছেন চোরাচালান সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা। জৈন্তাপুর মডেল থানা পুলিশকে ম্যানেজ করেই বাজারটিকে বুঙ্গার (চোরাই মালের) মহাআড়ৎ বানানো হয়েছে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

 

স্থানীয়রা জানান, জৈন্তাপুর বাজার আগে সন্ধ্যার পরপরই নিরব হয়ে যেতো। বেন্ডিস করিমের নিয়ন্ত্রনে যাওয়ার পর সম্পূর্ণ বদলে গেছে বাজারের সময়, ব্যবসা-বাণিজ্যের ধরণ ও গতি-প্রকৃতি। এখন রাত যতো ঘনিয়ে আসে জৈন্তাপুর বাজার ততো সরগরম হয়ে ওঠে। রাতভর জমে থাকে ভারতীয় গরু-মহিষ এবং মাদকসহ বিবিধ চোরাই পণ্যের সমারোহ ও বেআইনী আমদানী ও রফতানী।

তাই পুরো রাতই জেগে থাকেন বাজারের ব্যসায়ী ও চোরা কারবারীরা। বাজারের একাধিকব ব্যবসায়ী জানিয়েছেন, বর্তমানে

 

প্রতিদিন প্রায় শত কোটি টাকার চোরাই ব্যবসা হয় জৈন্তাপুর বাজারে। শুধু জৈন্তাপুর সীমান্ত নয়, পার্শ্ববর্তী গোয়াইনঘাটের বিভিন্ন সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে। আসা ভারতীয় গরু-মহিষ এবং পণ্যও জৈন্তাপুর বাজার থেকে হাতবদল হয়ে অন্যত্র সরবরাহ করা হয়ে থাকে। ফলে জৈন্তাপুর সদর বাজার চোরাচালানের ট্রানজিট পয়েন্টে পরিনত হয়ে যেত।

 

জৈন্তাপুর উপজেলার নিজপাট ইউনিয়নের ঘিলাতেল গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা করিম আহমদ ওরফে বেভিস করিম উপজেলা সীমান্তের চোরাই পয়েন্ট শ্রী-পুর, মিনাটিলা, ডিবির হাশুর, রাজবাড়ী, গোয়াবাড়ী লাদাখাল, ডিবির হাওরের ফরিদের বাড়ি, আসমপাড়ার রিভার্স পিলার, মিলাতৈল, তলাল, টিপরামলা, কমলাবাড়ী, কারিমটিলা, ভিতরগোল, গোয়াবাড়ী চোরাই পয়েন্টগুলোর বুজার (সেরাচালান) লাইন এককভাবে মিয়ন্ত্রণ করেন বেন্ডিস করিম নিজেই।

 

এছাড়া সীমান্তের মোকামপুঞ্জি ও শ্রীপুর পয়েন্টে করিমের নিয়োজিত লাইনম্যান হচ্ছে। স্থানীয় মোকামপুঞ্জির মাখাই পাত্র। ছাগল খাউয়ী, মিনাটিলা, কেন্দ্রী ও লম্বাটিল্য পয়েন্টগুলোতে করিমের নিয়োজিত লাইনম্যান হচ্ছে- উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক নেতা করিমের ভাগ্নে ও স্থানীয় কেন্দ্রী গ্রাদের মিজান আহমদ রুবেল।

 

সীমান্ত্রের বাইরাখেল, হর্ণি নয়াগ্রাম চোরাই পয়েন্টের লাইন নিয়ন্ত্রণ করে করিমের ব্যবসায়িক পার্টনার স্থানীয় বাইরাখেল গ্রামের আব্দুল মালেক ওরফে আব্দুল, জালিয়াখলা, সারীনদীর মুখ নিয়ন্ত্রণ করে স্থানীয় কালিজি গ্রামের রহিম উদ্দিন ও তার ভাই তাজউদ্দিন। তার সকলেই বেন্ডিস করিমের অধীনে বিজিবি ও পুলিশের পক্ষে বুজায় লাইন (বখরা) উঠিয়ে থাকে।

 

অভিযোগে আরও প্রকাশ, হরিপুর বাজারে সেনা সদস্যদের উপর হামলায় অড়িত কতো চোরাকারবারি  ও জেলে গেলেও ৭ থেকে ৮ জন হামলাকারী ভারতে চলে গেছেন তারা বেন্ডিস করিমের সহায়তায় চোরাইপথে ভারত পাড়ি দিতে সক্ষম হয়েছেন। বেন্ডিস করিম চেমাত্রই মান আমদানীর পাশাপাশি বেআইনী ভাবে অপরাধী ও রাজনেতিক নেতা হোতাদের ভারত পাচারের সাথেও জড়িত।

 

জৈভাপুর বাজারে চোরাই পণ্যের মহাআড়ৎ সম্পর্কে জানতে চাইলে জৈন্তাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল বাসার মোহাম্মদ বদরুজ্জামান বলেন-‘এ বিষয়ে আমার কিছুই জানা নেই’।।