মোঃ আমীর হোসেন সোহাগ স্টাফ রিপোর্টার :জীবনের কঠিনতম অধ্যায়ে সাহস আর ভালোবাসার প্রতীক হয়ে উঠেছেন জবা পাল, পেশায় একজন প্রাইমারীর সহকারী শিক্ষিকা।
তার স্বামী রজত পাল ছিলেন সিলেট প্রধান ডাকঘরের একজন কর্মকর্তা। সংসার ছিল ভালোবাসা ও স্বপ্নে ভরা, কিন্তু হঠাৎই ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে স্বামীকে হারিয়ে ফেলেন তিনি অল্প বয়সেই।
দুই সন্তান — কন্যা জয়িতা পাল শ্রেয়া ও পুত্র রিতম পাল রিককে নিয়ে শুরু হয় তার জীবনের নতুন লড়াই।
বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে তিনি নিজে পরিশ্রম করে সন্তানদের গড়ে তুলেছেন সৎ মানুষ ও প্রতিভাবান নাগরিক হিসেবে।
তার বড় মেয়ে জয়িতা পাল শ্রেয়া বর্তমানে সরকারি অগ্রগামী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী।
ছোটবেলা থেকেই গান, নাচ, অভিনয় ও আবৃত্তিতে তার প্রবল আগ্রহ। মায়ের অনুপ্রেরণা ও প্রচেষ্টায় জয়িতা এই সব ক্ষেত্রেই প্রশিক্ষণ নিচ্ছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে এবং ধীরে ধীরে নিজেকে তৈরি করছে একজন প্রতিভাবান সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে।
ছোট ছেলে রিতম পাল রিক বর্তমানে দুর্গা কুমার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র।
তার মেধা ও সৃজনশীলতার পরিচয় মিলেছে ইতিমধ্যেই, কবিতা আবৃত্তি,একক অভিনয়, লোক সঙ্গীত ও ম্যাজিক দেখানোর পাশাপাশি সিলেট বিভাগের মধ্যে বিটিভির “নতুন কুঁড়ি” প্রতিযোগিতার ফাইনাল রাউন্ডে স্থান করে নিয়েছে সে।
শুধু তাই নয়, বিটিভির পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে তার “অনুভূতির স্বাক্ষর”, যা তার প্রতিভা এবং মায়ের অদম্য পরিশ্রমের এক জীবন্ত প্রমাণ।
জবা পালের মুখে হাসি, চোখে অশ্রু — কিন্তু সেই অশ্রু তৃপ্তির, বিজয়ের।
তিনি বলেন,“আমি একা নই, আমার সন্তানরাই আমার শক্তি, আমার আনন্দ, আমার জয়।”
আজ জবা পাল শুধু একজন মা নন — তিনি মা-ই বাবা, বাবা-ই মা,
এক সংগ্রামী নারী, যিনি শিখিয়েছেন কীভাবে হার না মেনে জীবনকে জেতা যায়।
তার জীবনের প্রতিটি অধ্যায় যেন বলে —
“ত্যাগই আসল সৌন্দর্য, আর ভালোবাসাই জীবনের প্রকৃত শক্তি।”