সিলেট ৭ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৩শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৫ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

সেনাবাহিনী- কাস্টমসে হামলা মামলার আসামি যুবদল সভাপতি প্রার্থী ফারুক : রাজনৈতিক অঙ্গনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত সেপ্টেম্বর ৫, ২০২৫, ০১:৫০ অপরাহ্ণ

স্টাফ রিপোর্টার::

সিলেটের জৈন্তাপুরে সেনাবাহিনীর ওপর হামলার ঘটনায় দায়ের করা আলোচিত মামলার ৭ নং আসামি – ও তামাবিল কাস্টমসের মালামাল নিলামে বাগিয়ে নেয়ার সংঘর্ষের ঘটনায় ৬ নং অভিযুক্ত ফারুক আহমদ আসন্ন জৈন্তাপুর উপজেলা যুবদল কমিটিতে সভাপতি প্রার্থী হয়েছেন। এ খবরে স্থানীয় রাজনৈতিক মহল ও জনমনে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।

 

এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ২৭ মার্চ মধ্যরাতে হরিপুর বাজার এলাকায় সেনাবাহিনীর একটি টহল দল সীমান্ত এলাকা থেকে আসা মহিষবোঝাই পিকআপ আটক করে। এসময় সেনা সদস্যরা মহিষগুলো ক্যাম্পে নিয়ে যেতে চাইলে স্থানীয় একদল লোকজন বাধা প্রদান করে। পরিস্থিতি এক পর্যায়ে সহিংস রূপ নেয়। দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে বিবাদীরা সেনা সদস্যদের ওপর হামলা চালায় এবং ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে একজন ক্যাপ্টেনসহ কয়েকজন সেনা সদস্য গুরুতর আহত হন।

 

ঘটনার এজাহারে ফারুক আহমদসহ মোট ৭০ জনের নাম উল্লেখ করা হয় এবং অজ্ঞাতনামা আরও ১০০ থেকে ১৫০ জনকে আসামি করা হয়। এজাহারে বলা হয়, হামলাকারীরা শুধু সেনা সদস্যদের আহতই করেনি, সেনাবাহিনীর সরকারি গাড়ি ভাঙচুর করে প্রায় ৩০ হাজার টাকার ক্ষতি সাধন করেছে।

 

এছাড়াও গত (২৮ আগস্ট) সিলেট তামাবিল কাস্টমসের মালামাল নিলামে বাগিয়ে নেয়ার সংঘর্ষের ঘটনায় তামাবিল স্থলবন্ধন শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন বাদী হয়ে, যুবদল ‘স্বেচ্ছাসেবকদল ও ছাত্রদলের ৮ জনের নামে গোয়াইনঘাট থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এই অভিযোগে ফারুক আহমেদ( সুইট) কে ৬ নম্বরে অভিযুক্ত করা হয় । এঘটনায় হামলাকারীরা প্রায় দেড় লাখ টাকা লুটে নেয়ারও অভিযোগ করা হয়।

 

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ফারুক আহমদ দীর্ঘদিন ধরেই সীমান্ত এলাকায় চোরাচালান ও গরু-মহিষ ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে আলোচিত। এর আগেও তার বিরুদ্ধে অনুরূপ কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছিল। তবে তিনি এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন।

 

ফারুক আহমদের যুবদল সভাপতি প্রার্থী হওয়াকে ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে নানান আলোচনা চলছে। বিএনপি-যুবদলের একাংশ বলছে, তার বিরুদ্ধে মামলা এখনো বিচারাধীন, তাই সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ পদে তাকে আনা হলে দলীয় ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হতে পারে। অন্যদিকে ফারুকপন্থীরা দাবি করছেন, মামলাটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং তাকে বিতর্কিত করার জন্যই এজাহারে নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

 

এ বিষয়ে স্থানীয় সাধারণ মানুষের মতামতও ভিন্ন। অনেকে মনে করছেন, সেনাবাহিনীর মতো একটি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের ওপর হামলার মামলায় অভিযুক্ত একজনকে রাজনৈতিক নেতৃত্বে আনা ভবিষ্যতের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। অন্যদিকে কেউ কেউ বলছেন, আদালতের রায় না আসা পর্যন্ত কাউকে অপরাধী সাব্যস্ত করা উচিত নয়।

 

নাম বলতে অনিচ্ছুক একাধিক নেতাকর্মী জানিয়েছেন আগামীকাল (৩০ আগস্ট) দীর্ঘদিন পরে যুবদলের কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। দীর্ঘদিন পরে জৈন্তাপুর উপজেলা যুবদল নতুন নেতৃত্ব পাবে। এ উপলক্ষে নেতা কর্মীদের মাঝে উৎসাহ উদ্দীপনা বিরাজ করছে। যুবদল একটি সুশৃঙ্খল সংগঠন এই সংগঠনের নেতৃত্বে যদি একজন সক্রিয় চোরাকারবারি ও চাঁদাবাজ টেন্ডারবাজী সহ যার বিরুদ্ধে অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে। এই ধরনের মানুষ যদি দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে যদি দায়িত্ব পায়। সংগঠন ও জাতীয়তাবাদী পরিবারের জন্য ক্ষতিকর হয়ে দাঁড়াবে। আমরা আশাবাদী জেলা এবং স্থানীয় নেতৃবৃন্দ তৃণমূল পর্যায় থেকে যারা রাজনীতি করে এসেছেন যাচাই বাছাই করে তাদেরকেই মূল্যায়ন করবেন এবং যুবদলের গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব দিবেন। কোনভাবেই যেন চাঁদাবাজ কালোবাজারী আমাদের সংগঠন বিরোধী মানুষ যেন বিএনপি পরিবারের কোনো সংগঠনে দায়িত্বশীল পদে আসতে না পারে সে বিষয়ে জেলা নেতৃবৃন্দর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

 

সবমিলিয়ে, ফারুক আহমদের প্রার্থিতা জৈন্তাপুরের রাজনীতিতে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে এবং আগামী দিনে এর প্রভাব রাজনৈতিক সমীকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

সংবাদটি শেয়ার করুন