সিলেট ২৫শে আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১০ই ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২রা রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

একজন দুর্নীতি মুক্ত সৎ ও মানবিক পুলিশ অফিসার:: রতন শেখ

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত আগস্ট ২৪, ২০২৫, ০৬:৩৭ অপরাহ্ণ
একজন দুর্নীতি মুক্ত সৎ ও মানবিক পুলিশ অফিসার:: রতন শেখ

নিজস্ব সংবাদদাতা  ::

বাংলাদেশ পুলিশে যখন নানান প্রশ্ন ওঠে দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার কিংবা জনসাধারণের সাথে দূরত্ব নিয়ে তখনও কিছু পুলিশ কর্মকর্তা আছেন যারা সততা, ন্যায়পরায়ণতা ও মানবিকতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে ওঠেন। এমনই একজন হলেন ওসি মো. রতন শেখ পিপিএম। তিনি দায়িত্ব নিলেই সাধারণ মানুষের মনে ভরসা জাগে, অপরাধীরা আতঙ্কে থাকে, আর পুলিশ ফিরে পায় জনগণের আস্থা।

 

ঘুষের প্রলোভনে কখনো নতি স্বীকার করেননি তিনি। বরং সততার উদাহরণ স্থাপন করে দেখিয়েছেন, ঘুষ দিলে কিংবা নিতে চাইলে কী ভয়াবহ পরিণতি হতে পারে। তাই জনগণ তাকে শুধু একজন পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবেই নয়, একজন মানবিক অভিভাবক হিসেবে দেখে।

 

ব্যক্তিগত জীবন

 

ওসি রতন শেখ ১৯৭৩ সালের ৫ নভেম্বর জন্মগ্রহণ করেন বাগেরহাট সদর থানার হরিণখানা গ্রামে। মরহুম ইসমাইল শেখ ও মরহুমা রিজিয়া বেগমের ছয় সন্তানের মধ্যে তিনি দুই ভাইয়ের একজন। সহধর্মিণী নিগার সুলতানা একজন গৃহিণী, তাঁদের একমাত্র কন্যা আরিশা নূর রাইসা এবছর এসএসসি পাস করেছে।

 

শৈশব থেকেই ইসলামি মূল্যবোধে বেড়ে ওঠা রতন শেখ ছোটবেলা থেকেই সৎ, ন্যায়পরায়ণ ও মানবিক ছিলেন। পড়াশোনা শেষ করেন বাগেরহাট সরকারি পিসি কলেজ থেকে বিএ ডিগ্রি নিয়ে।

 

কর্মজীবন

 

১৯৯৪ সালে সরাসরি এসআই পদে বাংলাদেশ পুলিশে যোগ দেন তিনি। পুলিশ একাডেমি সারদায় এক বছরের প্রশিক্ষণ শেষে প্রথম পোস্টিং পান মাগুরা সদর থানায়। এরপর তিনি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) তে ছয় বছর জিআরও হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। কুষ্টিয়া ও সাতক্ষীরা জেলায় কোর্ট ইন্সপেক্টর ছিলেন। ২০১০ সালে ইন্সপেক্টর পদে পদোন্নতি পান এবং একই বছরে সাতক্ষীরায় প্রথমবার ওসি তদন্তের দায়িত্ব নেন।

 

তিনি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানার ওসিসহ একাধিক থানায় সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০১৩-২০১৪ সালে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে সুদানে এক বছর কাজ করে আন্তর্জাতিক প্রশংসা অর্জন করেন।

 

পুরস্কার ও সম্মাননা

 

চাকরি জীবনে সততা ও নিষ্ঠার জন্য বহুবার সম্মানিত হয়েছেন ওসি রতন শেখ। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য-

 

আইজিপি ব্যাজ (২ বার)

 

জাতিসংঘ শান্তি মিশন পদক

 

শুদ্ধাচার পুরস্কার

 

 

দর্শন ও জনপ্রিয়তা

 

তিনি বিশ্বাস করেন, সরকারি চাকরিজীবীরা যদি সৎ থাকেন, তাহলে দেশ বদলে যায়। এই বিশ্বাসই তাঁকে প্রেরণা দেয় দুর্নীতির বিরুদ্ধে আপসহীন থাকতে, গরিব মানুষের পাশে দাঁড়াতে এবং রাতদিন মাঠে থেকে অপরাধ দমন করতে।

 

তার বদলির বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষ একাধিকবার আন্দোলন করেছে, স্মারকলিপি দিয়েছে। কারণ মানুষ তাকে শুধু একজন দায়িত্বশীল পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবেই নয়, একজন মানবিক অভিভাবক ও নিরাপত্তার প্রহরী হিসেবে চেনে।

 

শেষ কথা

 

বাংলাদেশে মানবিক ও সৎ পুলিশ কর্মকর্তা অনেক আছেন, কিন্তু ওসি রতন শেখ তাদের মধ্যে ব্যতিক্রম এক নাম। দুর্নীতি যেখানে নিত্যদিনের খবর, সেখানে তিনি হয়ে উঠেছেন অঘোষিত প্রতিরোধ। তার জীবনের গল্প আমাদের শেখায় সততা, নিষ্ঠা ও সাহস থাকলে পুলিশ মানেই কেবল রেইড নয়, জনগণের ভরসার আরেক নাম।

সংবাদটি শেয়ার করুন