সিলেটের গোয়াইনঘাটে দীর্ঘ দুই যুগ পর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদলের কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। স্থানীয় নেতাকর্মীদের প্রাণচাঞ্চল্য আর উপস্থিতিতে মুখরিত ছিল শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ। সম্মেলনে রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা বাস্তবায়নের প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয় এবং উপজেলা যুবদলের নতুন কমিটি গঠনের অঙ্গীকারের মধ্য দিয়ে কর্মসূচি প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে।
শুক্রবার (২২ আগস্ট) বিকেলে আয়োজিত এ কর্মী সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন গোয়াইনঘাট উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট শাহজাহান সিদ্দিকী এবং অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন উপজেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক খালেদ আহমদ। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিলেট জেলা যুবদলের সভাপতি অ্যাডভোকেট মোমিনুল ইসলাম মোমিন। প্রধান বক্তা ছিলেন জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মকসুদ আহমদ।
সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন সিলেট জেলা যুবদলের সহ সভাপতি কবির উদ্দিন, মির্জা জাহেদ, ডিএইচ খান মিশু ও আবু হানিফ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জিএম শফিক, সহ সম্পাদক সেলিম আহমদ সেলু ও এনামুল হক শামীম। এ ছাড়া জেলা সদস্য বেলাল আহমেদ বিপিদেব শুভ, মাসুক আহমেদ ও আব্দুল বাছিতসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সিলেট মহানগর যুবদলের পক্ষ থেকে অংশ নেন সহ সভাপতি মোঃ মঈনুল ইসলাম, জুয়েল আহমদ জুবেদ, মালেক বকস ও সল্টিবদাস। উপস্থিত ছিলেন মহানগর জলবায়ু বিষয়ক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন রাজু ও মিনহাজ আহমেদ মিনার।
গোয়াইনঘাট উপজেলা যুবদলের সম্ভাব্য নেতৃত্বে উঠে আসা প্রার্থীদের মধ্যে জাহাঙ্গীর আলম, মাসুক আহমদ, হাবিবুর রহমান, দেলোয়ার হোসেন, এম এ মন্নান, ফখরুল ইসলাম, আবু হানিফ, আব্দুল মান্নান, মিজানুর রহমান হেলোয়ার, আবু কালাম, আব্দুল লতিফ, ছালেহ, রেদোয়ান রাজু, আলিম উদ্দিন, এখলাছুর রহমান, কয়েস আহমদ ও ওয়ারিছ উদ্দিনের নাম আলোচনায় উঠে আসে।
বক্তারা বলেন, বিএনপির ঘোষিত ৩১ দফা বাস্তবায়নই জবাবদিহিমূলক ও গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠার মূল হাতিয়ার। সাধারণ মানুষের কাছে দলের প্রতিনিধি হয়ে কাজ করতে হবে যুবদলের প্রতিটি নেতাকর্মীকে। তারা আশা প্রকাশ করেন, একটি নিরপেক্ষ অন্তবর্তী সরকার জনগণের অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন উপহার দেবে। বক্তারা আরও উল্লেখ করেন, জনগণের আস্থা অর্জনই রাজনীতির মূল শক্তি এবং এ জন্য জনসেবামূলক কাজকে গুরুত্ব দিতে হবে।
প্রধান অতিথি অ্যাডভোকেট মোমিনুল ইসলাম মোমিন তাঁর বক্তব্যে বলেন, যুবদলকে জনগণের আস্থার প্রতীক হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। ৩১ দফা বাস্তবায়ন ছাড়া গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র কাঠামো প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। তরুণ প্রজন্মকে মাঠে থাকতে হবে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে।
প্রধান বক্তা মকসুদ আহমদ বলেন, যুবসমাজের ঐক্যই আগামী দিনের রাজনীতির শক্তি। গোয়াইনঘাটের কর্মী সম্মেলন থেকে আমরা নতুন নেতৃত্ব গড়ে তুলতে চাই, যারা বিএনপির আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে। জনগণের অধিকার রক্ষায় এই নেতৃত্বই ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা দেবে।
প্রায় দুই যুগ পর এ কর্মী সম্মেলনকে কেন্দ্র করে গোয়াইনঘাটের সর্বত্র ছিল উৎসবমুখর পরিবেশ। উপজেলা ও ইউনিয়ন যুবদলের নেতাকর্মীরা মিছিলসহকারে সমাবেশে যোগ দেন। এতে স্থানীয় রাজনীতিতে নতুন প্রাণ সঞ্চার হয়েছে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন উপস্থিত নেতৃবৃন্দ।
গোয়াইনঘাটে এ কর্মী সম্মেলন প্রমাণ করেছে, মানুষের আশা ও প্রত্যাশা এখনও গণতান্ত্রিক আন্দোলনের প্রতি অটুট। বক্তারা বলেন, জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্র কাঠামো গঠনে যুব সমাজের ঐক্যই হতে পারে সবচেয়ে বড় শক্তি। জনগণের আস্থা ও ভালোবাসার মাধ্যমেই রাজনীতির সার্থকতা আসে-এই উপলব্ধি নিয়েই গোয়াইনঘাট থেকে নতুন নেতৃত্ব গঠনের পথযাত্রা শুরু হলো।