ঢাকা, ২১ আগস্ট (২০২৫):
উন্নয়ন সংস্থা অ্যাকশন ফর সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট (এএসডি), এডুকো বাংলাদেশ এবং শাপলা নীড় বাংলাদেশ-এর যৌথ উদ্যোগে "গৃহকাজে নিয়োজিত শিশুদের অধিকার ও সুরক্ষা নিশ্চিতকরণে সুনির্দিষ্ট আইন প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তা” শীর্ষক এক সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। চাইল্ড লেবার ইলিমিনেশন প্লাটফর্ম এই সংলাপ আয়োজনে সহযোগিতা করে।
আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার একটি হোটেলে আয়োজিত এই সংলাপে গৃহকাজে নিয়োজিত শিশুদের অধিকার ও সুরক্ষা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব জনাব এ.এইচ.এম. সফিকুজ্জামান।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় শ্রম সচিব বলেন, গৃহশ্রমিক তথা গৃহকাজে নিয়োজিত শিশুর অধিকার, মর্যাদা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সমন্বিত উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন। আইএলও কনভেনশন বাস্তবায়ন বাংলাদেশ ILO কনভেনশন C155 (পেশাগত নিরাপত্তা), C187 (অকুপেশনাল সেফটি অ্যান্ড হেলথ), এবং C190 (কর্মক্ষেত্রে নারীর প্রতি সহিংসতা ও হয়রানি রোধ) অনুস্বাক্ষর প্রক্রিয়ার শেষ পর্যায়ে রয়েছে। যা শ্রমিকের অধিকার সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
শ্রম সচিব উল্লেখ করেন যে, বাংলাদেশ সরকার ২০০১ সালে ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম সম্পর্কিত আইএলও কনভেনশন নং ১৮২ অনুস্বাক্ষর করেছে এবং এরই ধারাবাহিকতায় শিশুদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ ৪৩ ধরনের কাজের তালিকা প্রকাশ করেছে। তিনি বলেন, “শিশুদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ শ্রমের তালিকায় গৃহ শিশুশ্রম অন্তর্ভুক্ত করার ক্ষেত্রে বাধাসমূহ কী এবং কীভাবে তা দূর করা যেতে পারে, তা আমাদের নির্ধারণ করতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশ সরকার এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাসমূহ শিশু গৃহকর্মীদের অধিকার সুরক্ষার লক্ষ্যে দীর্ঘদিন ধরে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তৎসত্ত্বেও গৃহকাজে নিয়োজিত শিশুদের অধিকার সুরক্ষার বিষয়টি এখনো একটি অন্যতম সমস্যা হিসেবে বিরাজ করছে।” তিনি ২০১৫ সালে প্রণীত ‘গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতি-২০১৫’-এর কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, এই নীতিমালায় ১২ বছরের নিচে কোনো শিশুকে গৃহকাজে নিয়োগ দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তবে ১২ বছর বয়সী শিশু শুধুমাত্র হালকা ধরনের কাজের জন্য বৈধ অভিভাবকদের সঙ্গে আলাপ করে নিয়োগ দেওয়া যেতে পারে বলে নীতিতে উল্লেখ থাকলেও ‘হালকা কাজ’ কী হবে, তা এখনও নির্ধারণ করা হয়নি।
সংলাপে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিভিন্ন দপ্তর ও সংস্থার কর্মকর্তাবৃন্দ, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, ট্রেড ইউনিয়ন নেতা, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা এবং সংশ্লিষ্ট সকল স্টেকহোল্ডারগণ অংশগ্রহণ করেন।