
বড়লেখা(মৌলভীবাজার)প্রতিনিধি:
বঙ্গোপসাগরের নিম্নচাপের প্রভাবে বৃহস্পতিবার থেকে রোববার সকাল পর্যন্ত মৌলভীবাজারের বড়লেখায় টানা ভারি ও হালকা বৃষ্টিপাত আর পাহাড়ী ঢলে প্লাবিত হয়েছে রাস্তাঘাট, হাটবাজার ও শহর। বাড়িঘরে বানের পানি ঢুকে মারাত্মক দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ। বানের পানিতে ধসে পড়েছে কয়েকশ কাচা ঘর। টানা বর্ষণ আর ঝড়ো বাতাসে জনজীবন বির্পযস্ত হয়ে ওঠেছে। টানা বৃষ্টিপাতের কারণে অধিকাংশ ব্যবসায়িরা খুলেননি দোকানপাট। রাস্তাঘাট ও হাটবাজারে দেখা দিয়েছে তীব্র জলাবদ্ধতা। ভারি বৃষ্টিপাত আর পাহাড়ি ঢলে হাকালুকি হাওরপাড়ের ইউনিয়নগুলোতে বন্যার আশংকা দেখা দিয়েছে।
সরেজমিনে জানা গেছে, বঙ্গোপসাগরের নিম্নচাপের প্রভাবে গত কয়েকদিন ধরে গুড়িগুড়ি বৃষ্টি ও দমকা হাওয়া বইলেও তা ছিল থেমে থেমে। কিন্ত বৃহস্পতিবার সকাল থেকে টানা ভারি ও হালকা বৃষ্টির সাথে ঝড় বইতে থাকলে জনজীবনে নামে চরম ভোগান্তি। ভারি বর্ষণ আর পাহাড়ি ঢলে খাল-বিল ও ছড়ার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হওয়ার কারণে প্লাবিত হয়েছে রাস্তাঘাট ও ফসলের মাঠ। দেখা দিয়েছে তীব্র জলাবদ্ধতা। হাকালুকি হাওরের পানি ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে হাওরপাড়ের তালিমপুর, বর্নি ও সুজানগর ইউনিয়নে বন্যার আশংকা রয়েছে। তাছাড়া অবিরাম ভারি বৃষ্টিতে কুলাউড়া-চান্দগ্রাম আঞ্চলিক মহাসড়কের অন্তত ৬/৭ স্থানে রাস্তার উপর দিয়ে বানের পানি প্রবাহিত হচ্ছে। মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে যান চলাচল করছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, কুলাউড়া-চান্দগ্রাম আঞ্চলিক মহাসড়কের বাছিরপুর, হাতলিয়া, দক্ষিণভাগ, রতুলি, কাঠালতলি, পানিধার এলাকায় সড়কের বিভিন্ন স্থানে ৩/৪ ফুট পর্যন্ত নিমজ্জিত থাকতে দেখা গেছে। রাস্তা তলিয়ে যাওয়ায় হাল্কা যানবাহনের সরাসরি চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। ভারি যানবাহন মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করেছে। টানা ভারি বৃষ্টিতে উপজেলার দক্ষিণভাগ, কাঠালতলী, পৌরশহর, শাহবাজপুরসহ প্রত্যেকটি হাটবাজার ও পৌর শহরের অলিগলি তলিয়ে যায়। দোকানের ভেতর পানি ঢুকে ব্যবসায়িদের কোটি কোটি টাকার মালামাল নষ্ট হয়ে গেছে। দিনভর বৃষ্টি আর রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় কেউ ঘর থেকে বের হতে পারেনি। বিপাকে পড়ে খেটে খাওয়া মানুষ। খুলেনি কেউ দোকানপাট।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মিজানুর রহমান জানান, টানা বৃষ্টিপাত হলেও এখনও মারাত্মক ক্ষতির কোনো তথ্য পাননি। তবে, হাকালুকি হাওরপাড়ের ইউনিয়নগুলোর চেয়ারম্যানগণ জানিয়েছেন পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং এভাবে টানা বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে বন্যা দেখা দিবে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ক থেকে ২২ টি আশ্রয়কেন্দ্র ঘোষনা করা হয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার মনোয়ার হোসেন জানান, প্রায় ৬০ ভাগ জমিতে আউশ রোপণ সম্পন্ন হয়েছে। বৃষ্টিতে এখনও ফসলের কোনো ক্ষতি হয়নি। বন্যায় নিমজ্জিত হলে আউশের ক্ষতির আশংকা রয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাহমিনা আক্তার জানান, উপজেলার প্রত্যেকটি ইউনিয়ন বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে ক্ষয়ক্ষতির ব্যাপারে খোঁজখবর নিতে বলেছেন।