
সিলেট ::
জাতীয় এবং আঞ্চলিক মহাসড়ক ব্যতিত সিলেট সিটি কর্পোরেশন এলাকায় বৈধভাবে ব্যাটারি চালিত রিক্সা-ইজিবাইক চালানোর অস্থায়ী অনুমতি প্রদানের দাবিতে সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ এর কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেছেন সিলেট মহানগর ব্যাটারি চালিত রিক্সা/ইজিবাইক মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের নেতৃবৃন্দ।
সোমবার (২৮ এপ্রিল) দুপুরে সিলেট মহানগর ব্যাটারি চালিত রিক্সা/ইজিবাইক মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আবু বকর সিদ্দিক এর নেতৃত্বে জেলা প্রশাসকের হাতে এই স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সভাপতি আনোয়ার হোসেন আনাই, প্রচার সম্পাদক আব্দুস সোবহান, সাংগঠনিক সম্পাদক জহুরুল হক, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আক্কাস আলী, সহ সাধারণ সম্পাদক হোসেন আহমদ, কোষাধ্যক্ষ মিজানুর রহমান মুল্লা, ক্রীড়া সম্পাদক মোবারক আলী, সহ ক্রীড়া সম্পাদক আবুল কাশেম, শ্রমিক নেতা আইয়ুব আলী, রেনু মিয়া, আব্দুর রহমান কাঞ্চন, হারুনুর রশিদ, জালাল আহমদ, আব্দুল জলিল, বাহার উদ্দিন প্রমুখ।
স্মারকলিপিতে বলা হয়- সিলেট মহানগর ব্যাটারী চালিত রিক্সা/ইজিবাইক মালিক ও শ্রমিকরা দীর্ঘদিন যাবত সরকারের কাছে বৈধভাবে নাম্বার প্লেট দিয়ে রিক্সা চলাচলের জন্য দাবি করে আসছেন। মালিক শ্রমিকরা বিভিন্ন সংস্থা থেকে ঋণ ও কিস্তি তুলে রিক্সা বানিয়ে সংসার চালিয়ে যাচ্ছেন। ইতিপূর্বে বাংলাদেশের শ্রমিকরা বিভিন্নভাবে অনেক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। সেই ক্ষতির পাশাপাশি বর্তমানে সিলেট সিটি কর্পোরেশন ও পুলিশের হয়রানির স্বিকার হচ্ছেন প্রতিনিয়ত। ব্যাটারী চালিত রিক্সা/ইজিবাইকের সাথে মহানগরীতে প্রায় ১৫-২০ হাজার মানুষ জড়িত আছেন। এমতাবস্থায় ব্যাটারী চালিত রিক্সা বন্ধ করে দিলে এসব মানুষগুলো বেকার হয়ে যাবে। দরিদ্র মানুষগুলো বেকার হয়ে গেলে তারা অপরাধমূলক কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ার সম্ভবনা রয়েছে। স্বাধীনতার ৫৪ বছর হলেও আজও রিক্সা চালকরা মানুষ হয়ে মানুষ টানেন। বর্তমান সরকারের উন্নয়নের অংশ হিসেবে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে উঠলেও এতে রিক্সা চালকদের উন্নয়নের কোন ছোয়া লাগেনি। তাই ডিজিটালের অংশ হিসেবে রিক্সা চালকদের সিলেট সিটি কর্পোরেশনে ব্যাটারী চালিত রিক্সা চলাচলের অনুমতি দিলে স্বল্প আয়ের মানুষ উপকৃত হবেন। ব্যাটারী চালিত রিক্সা/ইজিবাইক বাংলাদেশের অন্যান্য জেলায় অবাধে চলাচল করলেও আমাদের সিলেটে কেন ব্যাটারী চালিত রিক্সা চলাচল করতে পারবে না।
বর্তমানে সিলেট শহর এলাকায় সকল রিক্সা/ইজিবাইক চলাচলে বাধা দেওয়ার কারণে মালিক/শ্রমিক এবং তাদের পরিবার আর্থিক ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। অন্যদিকে নগরবাসী, স্কুল ও কলেজগামী ছাত্র-ছাত্রীরা এবং তাদের অভিভাবকগণদের যাতায়াতে ব্যাপক অসুবিধা হচ্ছে। পরিবহনের অভাবে অফিস আদালতে নগরবাসীগণ কিংবা নগরের বাহির থেকে আসা জনসাধারণ সময় মতো অফিসে পৌছাতে পারেন না। সবদিক বিবেচনা করে সিলেট সিটি কর্পোরেশন এলাকায় অস্থায়ীভাবে ব্যাটারী চালিত রিক্সা/ইজিবাইক (লাইন্সে ও রেজি: ইস্যু পূর্ব পর্যন্ত) চালাচলে অনুমতি দেওয়া জন্য জোর দাবি জানানো হয়।
স্মারকলিপি নেতৃবৃন্দ ১০ দফা দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো হচ্ছে- ব্যাটারি চালিত রিক্সা ও ইজিবাইকের রোড পারমিট দেওয়া, রেকার বিল ১০০ টাকা কার্যকর করা, যেখানে-সেখানে জরিমানা না করে পয়েন্টে জরিমানা করা, রিক্সা শ্রমিকদের জন্য আলাদা স্ট্যান্ড তৈরি করে দেওয়া, শ্রমিকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়া, শ্রমিকদের রেশনের আওতায় আনা, সরকারিভাবে শ্রমিকদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা, সরকারিভাবে শ্রমিকদের বাসস্থানের ব্যবস্থা করে দেওয়া, ট্রাফিক পুলিশের হয়রানী বন্ধ করা, রিক্সাচালক আয়নাল আলালের খুনিদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার জোর দাবি জানান।
এ ব্যাপারে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সিলেট সার্কেলের সহকারী পরিচালক, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সংস্থা বনানী ঢাকার চেয়ারম্যান ও শ্রম অধিদপ্তর সিলেটের উপ-মহাপরিচালক বরাবরে পৃথক পৃথকভাবে অনুলিপি প্রদান করা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তি