
অনলাইন ডেস্ক : বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার বলরামপুরে তানিয়া আক্তার মৌমিতা (২৩) নামে তরুণীর গায়েহলুদের আগের দিন রাতে মৃত্যু হয়েছে। তার মৃত্যু বিয়ের আনন্দকে বিষাদে পরিণত করেছে। গতকাল শনিবার রাতে বিয়ের কেনাকাটা করে বাড়ি ফেরার পথে স্ট্রোক করেন। হাসপাতালে নেওয়ার পথে মৃত্যু হয়। রবিবার গায়েহলুদের কথা থাকলেও এদিন দুপুরে তাকে দাফন করতে হয়েছে।
পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রায় দুই মাস আগে এক সৌদিপ্রবাসীর সঙ্গে কাবিন হয়েছিল কলেজছাত্রী মৌমিতার। রবিবার গায়েহলুদের কথা ছিল। সোমবার বধূ সেজে শ্বশুরবাড়িতে যাওয়ার কথা। শনিবার রাতে গায়েহলুদের সরঞ্জাম কিনতে বাবা-মায়ের সঙ্গে বগুড়া শহরে গিয়ে স্ট্রোক করেন। গায়েহলুদের দিন রবিবার সকালে দুই পরিবারের সবাইকে কাঁদিয়ে কবরবাসী হয়েছেন। এমন মৃত্যুতে শুধু তার ও শ্বশুরবাড়িতে নয়; পুরো গ্রাম ও আত্মীয়-স্বজনদের মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
স্বজনরা জানান, মৌমিতা শিবগঞ্জ উপজেলার কিচক ইউনিয়নের বলরামপুর গ্রামের বাসিন্দা ও চলনাগাতি ফাজিল ডিগ্রি মাদ্রাসার আরবি বিভাগের প্রভাষক গাজীউর রহমানের একমাত্র মেয়ে। তিনি জয়পুরহাট মহিলা কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সম্মান দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। সেখানে মেসে থেকে লেখাপড়া করতেন। গত ২১ সেপ্টেম্বর অনার্স প্রথম বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষা দিয়ে বিয়ের জন্য বাড়িতে আসেন। প্রায় দুই মাস আগে বগুড়া সদরের শাখারিয়া ইউনিয়নের উলিপুর গ্রামের প্রবাসী রফিকুল ইসলামের সঙ্গে তার কাবিন হয়। সোমবার পারিবারিকভাবে বিয়ের দিন ধার্য করা হয়েছিল। এ উপলক্ষে বাড়ি সাজানো, গেট নির্মাণ, আত্মীয়-স্বজনকে দাওয়াত, বাজার করা হয়েছিল। দুই পরিবারে চলছিল আনন্দ উৎসব। রবিবার দুপুরে কনের গায়েহলুদের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এজন্য কিছু কেনাকাটা বাকি থাকায় শনিবার বিকালে বাবা-মায়ের সঙ্গে বগুড়া শহরের মার্কেটে যান। কেনাকাটা করার একপর্যায়ে রাতে মৌমিতা অসুস্থ হয়ে পড়েন। মাথা ঘুরে পড়ে যান। দ্রুত বগুড়ার টিএমএসএস মেডিক্যাল কলেজ ও রফাতউল্লাহ কমিউনিটি হাসপাতালে নিলে
চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। রাতেই লাশ বাড়িতে আনা হয়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে দুই পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনদের মাঝে শোকের ছায়া নেমে আসে। বিয়ের আনন্দ বিষাদে পরিণত হয়।
মৌমিতার বান্ধবীর বাবা একই গ্রামের মোত্তাসিম বলেন, ‘বিয়ের একদিন আগে মেয়েটার মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমেছে। রবিবার দুপুরে বলরামপুর শাহসুলতান কোল্ডস্টোরেজ মাঠে জানাজা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। জানাজায় হবু স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন উপস্থিত ছিলেন।’
Channel Jainta News 24 

























