ঢাকা ০৫:২১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৫, ৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

লোভাছড়া কোয়ারীর সব ধরণের কার্যক্রম ও পাথর পরিবহনে নিষেধাজ্ঞা

  • Channel Jainta News 24
  • প্রকাশিত: ১০:৫১:০৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২০ আগস্ট ২০২৫
  • ১৪ পড়া হয়েছে
২২

কানাইঘাট প্রতিনিধিঃ

সিলেটের কানাইঘাট লোভাছড়া পাথর কোয়ারীর সব ধরণের কার্যক্রম ও পাথর পরিবহনে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো বিএমডি। উচ্চ আদালতের রিট মামলার শুনানীর নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত কোয়ারীর কার্যক্রম বন্ধ থাকবে বলে গতকাল মঙ্গলবার কোয়ারী এলাকা পরিদর্শন করে বিষয়টি জানিয়েছেন খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো বিএমডি’র সহকারী পরিচালক এজাজুল ইসলাম স্থানীয় সাংবাদিকদের জানান। মঙ্গলবার দিনভর এজাজুল ইসলাম কোয়ারী এলাকা পরিদর্শন করে পরিবেশ অধিদপ্তর কর্তৃক লোভাছড়া দুপাড়ে জব্দকৃত পাথরের স্তুপ ও কোয়ারী এলাকার পরিবেশ ঘুরে দেখেন। পরিদর্শন শেষে গণমাধ্যম কর্মীদের তিনি বলেন, লোভাছড়া কোয়ারী এলাকায় রাখা জব্দকৃত পাথরের মধ্যে ৪৫ লক্ষ ঘনফুট পাথর নিলাম নেন সিলেটের পিয়াস এন্টার প্রাইজ। নিলামে শর্ত অনুযায়ী গত ২৩ জুলাই তাদের পাথর পরিবহনের সময় সীমা শেষ হয়। জানা যায় নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নিলামকৃত পাথর কোয়ারী থেকে সরাতে না পেরে পিয়াস এন্টার প্রাইজ খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরোর কাছে আরো সময় চাইলে তাদের আবেদন খারিজ করা হয়। এতে পিয়াস এন্টার প্রাইজের স্বত্বাধিকারী কামরুল হাসান তুহিন মহামান্য হাই কোর্টে নিলামকৃত পাথর পরিবহনের সময় চেয়ে গত ২৭ জুলাই একটি রিট পিটিশন দায়ের করেন। রিটের প্রেক্ষিতে উচ্চ আদালত গত ৩১ জুলাই পাথর পরিবহনে আরো তিন মাসের সময় দেওয়ার জন্য খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরোকে নির্দেশ প্রদান করেন। এতে এই আদেশের বিষয়টি চ্যালেঞ্জ করে খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো আপিল করে।

আজ বুধবার রিট পিটিশন মামলাটি শুনানি অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে। কিন্তু উচ্চ আদালতের মামলার শুনানি ও পরবর্তী আদেশ না দেওয়া পর্যন্ত পিয়াস এন্টারপ্রাইজ বা অন্য কেউ কোয়ারী এলাকায় বর্তমানে মজুতকৃত পাথর পরিবহণ, অপসারণ কিংবা অবৈধ ভাবে পাথর উত্তোলন সহ কোন ধরণের কার্যক্রম করতে পারবে না বলে খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরোর সহকারী পরিচালক এজাজুল ইসলাম জানিয়েছেন। তিনি আরো জানান কোয়ারীতে রাখা পাথরের দেখা শুনা করবে কানাইঘাট থানা পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসন। তাদের নজরদারী সেখানে সার্বক্ষণিক থাকবে।

এদিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানিয়া আক্তার গত ২৩ জুলাই নিলামকৃত পাথরের সময়সীমা শেষ হওয়ার পরপরই কোয়ারী এলাকার পরিবেশ বজায় রাখা সহ জব্দকৃত পাথরের সুরাহ করার জন্য তিনি সিলেটের জেলা প্রশাসক সহ সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে একাধিক চিঠি পাঠিছেন। এছাড়াও তিনি কোয়ারীতে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করেন।

অপরদিকে কোয়ারী থেকে পাথর পরিবহন সহ সব ধরণের কার্যক্রম খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো গতকাল মঙ্গলবার থেকে বন্ধ করে দেওয়ায় পাথর ব্যবসায়ীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অনেক পাথর ব্যবসায়ী জানিয়েছেন পিয়াসএন্টার প্রাইজের কাছ থেকে পাথর কিনেছেন। কিন্তু সুরমা ও লোভা নদীতে এ বছর বর্ষা মৌসুমে পানি কম থাকায় তাদের পাথর দেশের বিভিন্ন এলাকায় নদী পথে পরিবহন করতে না পারায় বিপাকে পড়েছেন।

পিয়াস এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী কামরুল হাসান তুহিনের অভিযোগ তিনি ৪৫ লক্ষ ঘনফুট পাথর ২৩ কোটি টাকায় নিলাম নিলেও নিদিষ্ট সময়ের মধ্যে পাথর পরিবহনে নানা ধরণের বাধার সম্মুখীন হন। এমনকি নদীতে পানি কম থাকার কারনে পাথর পরিবহন চরম ভাবে ব্যহত হয়। ৪৫ লক্ষ ঘনফুট পাথরের মধ্যে তারা মাত্র ২০লক্ষ ঘনফুট পাথর তারা পরিবহণ করেছেন এখনো তাদের নিলামকৃত পাথরের মধ্যে প্রায় ২৫ লক্ষ ঘনফুট পাথর কোয়ারী এলাকায় তাদের রয়ে গেছে বলে দাবী করছেন।

এদিকে পিয়াস এন্টারপ্রাইজ এ পর্যন্ত কোয়ারী থেকে বৈধ-অবৈধ ভাবে প্রায় ৬০ লক্ষ ঘনফুট পাথর পরিবহন করেছে বলে পিয়াস এন্টারপ্রাইজের প্রতিপক্ষের লোকজন জানিয়েছেন। তবে বর্তমানে কোয়ারী এলাকায় যেসব পাথর রয়েছে তা যেন, কেউ লুট করে পরিবহন এবং অবৈধ ভাবে উত্তোলন করতে না পারেন সে বিষয়টি কঠোর ভাবে নজরদারী রাখার জন্য স্থানীয় প্রশাসনের প্রতি দাবী জানিয়েছেন সচেতন মহল।

ট্যাগ:

কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনি কমেন্ট করতে ইচ্ছুক?

সাংবাদিকদের তথ্য
ডেস্ক নিউজ

ডেস্ক নিউজ

জনপ্রিয় সংবাদ

Follow for More!

লোভাছড়া কোয়ারীর সব ধরণের কার্যক্রম ও পাথর পরিবহনে নিষেধাজ্ঞা

প্রকাশিত: ১০:৫১:০৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২০ আগস্ট ২০২৫
২২

কানাইঘাট প্রতিনিধিঃ

সিলেটের কানাইঘাট লোভাছড়া পাথর কোয়ারীর সব ধরণের কার্যক্রম ও পাথর পরিবহনে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো বিএমডি। উচ্চ আদালতের রিট মামলার শুনানীর নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত কোয়ারীর কার্যক্রম বন্ধ থাকবে বলে গতকাল মঙ্গলবার কোয়ারী এলাকা পরিদর্শন করে বিষয়টি জানিয়েছেন খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো বিএমডি’র সহকারী পরিচালক এজাজুল ইসলাম স্থানীয় সাংবাদিকদের জানান। মঙ্গলবার দিনভর এজাজুল ইসলাম কোয়ারী এলাকা পরিদর্শন করে পরিবেশ অধিদপ্তর কর্তৃক লোভাছড়া দুপাড়ে জব্দকৃত পাথরের স্তুপ ও কোয়ারী এলাকার পরিবেশ ঘুরে দেখেন। পরিদর্শন শেষে গণমাধ্যম কর্মীদের তিনি বলেন, লোভাছড়া কোয়ারী এলাকায় রাখা জব্দকৃত পাথরের মধ্যে ৪৫ লক্ষ ঘনফুট পাথর নিলাম নেন সিলেটের পিয়াস এন্টার প্রাইজ। নিলামে শর্ত অনুযায়ী গত ২৩ জুলাই তাদের পাথর পরিবহনের সময় সীমা শেষ হয়। জানা যায় নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নিলামকৃত পাথর কোয়ারী থেকে সরাতে না পেরে পিয়াস এন্টার প্রাইজ খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরোর কাছে আরো সময় চাইলে তাদের আবেদন খারিজ করা হয়। এতে পিয়াস এন্টার প্রাইজের স্বত্বাধিকারী কামরুল হাসান তুহিন মহামান্য হাই কোর্টে নিলামকৃত পাথর পরিবহনের সময় চেয়ে গত ২৭ জুলাই একটি রিট পিটিশন দায়ের করেন। রিটের প্রেক্ষিতে উচ্চ আদালত গত ৩১ জুলাই পাথর পরিবহনে আরো তিন মাসের সময় দেওয়ার জন্য খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরোকে নির্দেশ প্রদান করেন। এতে এই আদেশের বিষয়টি চ্যালেঞ্জ করে খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো আপিল করে।

আজ বুধবার রিট পিটিশন মামলাটি শুনানি অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে। কিন্তু উচ্চ আদালতের মামলার শুনানি ও পরবর্তী আদেশ না দেওয়া পর্যন্ত পিয়াস এন্টারপ্রাইজ বা অন্য কেউ কোয়ারী এলাকায় বর্তমানে মজুতকৃত পাথর পরিবহণ, অপসারণ কিংবা অবৈধ ভাবে পাথর উত্তোলন সহ কোন ধরণের কার্যক্রম করতে পারবে না বলে খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরোর সহকারী পরিচালক এজাজুল ইসলাম জানিয়েছেন। তিনি আরো জানান কোয়ারীতে রাখা পাথরের দেখা শুনা করবে কানাইঘাট থানা পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসন। তাদের নজরদারী সেখানে সার্বক্ষণিক থাকবে।

এদিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানিয়া আক্তার গত ২৩ জুলাই নিলামকৃত পাথরের সময়সীমা শেষ হওয়ার পরপরই কোয়ারী এলাকার পরিবেশ বজায় রাখা সহ জব্দকৃত পাথরের সুরাহ করার জন্য তিনি সিলেটের জেলা প্রশাসক সহ সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে একাধিক চিঠি পাঠিছেন। এছাড়াও তিনি কোয়ারীতে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করেন।

অপরদিকে কোয়ারী থেকে পাথর পরিবহন সহ সব ধরণের কার্যক্রম খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো গতকাল মঙ্গলবার থেকে বন্ধ করে দেওয়ায় পাথর ব্যবসায়ীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অনেক পাথর ব্যবসায়ী জানিয়েছেন পিয়াসএন্টার প্রাইজের কাছ থেকে পাথর কিনেছেন। কিন্তু সুরমা ও লোভা নদীতে এ বছর বর্ষা মৌসুমে পানি কম থাকায় তাদের পাথর দেশের বিভিন্ন এলাকায় নদী পথে পরিবহন করতে না পারায় বিপাকে পড়েছেন।

পিয়াস এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী কামরুল হাসান তুহিনের অভিযোগ তিনি ৪৫ লক্ষ ঘনফুট পাথর ২৩ কোটি টাকায় নিলাম নিলেও নিদিষ্ট সময়ের মধ্যে পাথর পরিবহনে নানা ধরণের বাধার সম্মুখীন হন। এমনকি নদীতে পানি কম থাকার কারনে পাথর পরিবহন চরম ভাবে ব্যহত হয়। ৪৫ লক্ষ ঘনফুট পাথরের মধ্যে তারা মাত্র ২০লক্ষ ঘনফুট পাথর তারা পরিবহণ করেছেন এখনো তাদের নিলামকৃত পাথরের মধ্যে প্রায় ২৫ লক্ষ ঘনফুট পাথর কোয়ারী এলাকায় তাদের রয়ে গেছে বলে দাবী করছেন।

এদিকে পিয়াস এন্টারপ্রাইজ এ পর্যন্ত কোয়ারী থেকে বৈধ-অবৈধ ভাবে প্রায় ৬০ লক্ষ ঘনফুট পাথর পরিবহন করেছে বলে পিয়াস এন্টারপ্রাইজের প্রতিপক্ষের লোকজন জানিয়েছেন। তবে বর্তমানে কোয়ারী এলাকায় যেসব পাথর রয়েছে তা যেন, কেউ লুট করে পরিবহন এবং অবৈধ ভাবে উত্তোলন করতে না পারেন সে বিষয়টি কঠোর ভাবে নজরদারী রাখার জন্য স্থানীয় প্রশাসনের প্রতি দাবী জানিয়েছেন সচেতন মহল।