ঢাকা ০৯:৩১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৫, ৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

তামাবিল স্থলবন্দর ও কাষ্টমে দূর্নীতির মহোৎসব: মাসে ৩ কোটি রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার

  • Channel Jainta News 24
  • প্রকাশিত: ১০:৩৪:৩৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১১ আগস্ট ২০২৫
  • ১৫ পড়া হয়েছে
২৪

জৈন্তাপুর (সিলেট) প্রতিনিধি ::

সিলেটের সর্ববৃহত স্থল বন্দর তামাবিলে দূর্নীতির মহোৎসব চলছে। নানা অনিয়ম ও দূর্নীতির কারনে রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। আঙ্গুল ফুলে কলাগাছে পরিনত হচ্ছে অসাধু কর্মকর্তা ও সিএনএফ এজেন্টরা। ক্ষতির সম্মুখিন হয়ে দিশেহারা ব্যবসায়ীরা। যেন দেখার কেউ নেই!!

 

সরজমিনে তামাবিল স্থল বন্দর ঘুরে দেখা যায়, ভারতীয় পাথর বাহি প্রতি ট্রাকের কারপার্স এর বিপরিতে প্রাথমিক ভাবে পোর্ট কর্তৃপক্ষ ৭০টাকা ও কাষ্টম কর্তৃপক্ষ ৩শত টাকা হারে নিচ্ছে। দ্বিতীয় ধাপে কারপার্স এর বাহিরে অতিরিক্ত পণ্যের ট্যাক্স বাবত আরও ৭৯০টাকা হারে সিএনএফ এজেন্ট রফিক সরকার (লাইসেন্সধারী), রফিক আহমদ (লাইসেন্সধারী), সালমান হোসেন (লাইসেন্স বিহীন), মাসুম আহমদ (লাইসেন্স বিহীন) এর মাধ্যমে সংগ্রহ করছেন।

 

অনুসন্ধানে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য জানাযায়, পণ্য আনলোড করার পর বিধি মোতাবেক সর্বনিম্ন ৩০% খালি গাড়ী ওজন (পরিমাপ) করার বিধান রয়েছে। তামাবিল স্থল বন্দর, কাষ্টম ও সিএনএফ যোগসাজেসে খালি গাড়ী ওজন (পরিমাপ) না করে সাড়ে ৭টন হতে ৮টনের খালি গাড়ীকে এ্যাভারেজ ৯টন ধরে ওজন নির্ণয় করছেন। যার কারনে সরকারের ব্যাপক রাজস্ব হারাচ্ছে। ব্যবসায়ী সূত্রে জানাযায় প্রতিদিন তামাবিল স্থল বন্দরে অন্তত ৪শতাধিক হতে সাড়ে ৪শতাধিক পাথর বাহি ট্রাক প্রবেশ করে। ফলশ্রুতিতে কারপার্স এর বাহিরে অতিরিক্ত পণ্যের ট্যাক্স বাবত আরও ৯৭০টাকা হারে ট্যাক্স আদায় করছে কর্তৃপক্ষ। অতিরিক্ত আদয়কৃত রাজস্বের পুরোটাই রাজস্ব কোষাগারে জমা না দিয়ে নিজেদের পকেটস্থ করছেন কাষ্টম, পোর্ট ও সিএনএফ এজেন্টরা অভিযোগ ব্যবসায়ীদের। এছাড়া গাড়ী প্রতি প্রাথমিক ৩৭০টাকা হারে আদায় বাকী রয়েছে। ব্যবসায়ী সূত্রে জানায় প্রতিদিন গড়ে অন্তত ১০লক্ষ টাকা হারে মাসে ২ হতে ৩ কোটি সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে আসছে কাষ্টম, বন্দর (পোর্ট) ও সিএনএফ এজেন্টরা।

 

ব্যবসায়িক ঝামেলা এড়াতে নাম প্রকাশ না করার শর্তে তামাবিলের ২০/২৫জন ব্যবসায়ীরা জানান, কাষ্টম ও পোর্ট কর্তৃপক্ষ সিএনএফ এজেন্টের মাধ্যমে আমাদেরকে নি:স্ব করে দিচ্ছেন। যার কারনে ইতোমধ্যে নামকরা অনেক ব্যবসায়ীরা ক্ষতির সম্মুখিন হয়ে তাদের ব্যবসা বন্দ করে দিয়েছেন। তারা বলেন, বিভাগীয় তদন্ত করলে নদীর স্বচ্ছ জলের মত বেরিয়ে আসবে তামাবিল স্থল বন্দরের রাজস্ব ফাঁকির এই মহোৎসব।

 

এবিষয়ে জানতে তামাবিল কাষ্টম সুপার ইয়াকুব জাহিদ এর সাথে আলাপকালে তিনি জানান, ৭০টাকা কিংবা ৩শত টাকা হারে বা পণ্যের কারপার্সের অতিরিক্ত ৯৭০টাকা আদায়ের বিষয় তার জানা নেই। এছাড়া বন্দরে আসা প্রতিটি গাড়ী পরিমাপ করা হয়। আপনাকে যে এসব তথ্য দিয়েছেন তা সম্পূর্ণ ভূয়া, ভিত্তিহীন, মিথ্যা বলে তিনি দাবী করেন।

 

এবিষয়ে জানতে তামাবিল পোর্ট এর অতিরিক্ত পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান এর সাথে আলাপকালে তিনি জানান, এসব মনগড়া তথ্য দিয়ে বন্দরের সুনাম নষ্ট করার চেষ্টা করছে। এরকম কিছু বন্দরে হচ্ছে না। গাড়ীর ওজন আমাদের নিকট সংরক্ষণ রয়েছে যাহা ব্যবসায়ী পোর্ট ও কাষ্টম কর্তৃপক্ষের সমন্বয়ে হচ্ছে। প্রতিদিন গাড়ীর ওজন নির্ধারন করা সম্ভব হয় না বলে তিনি জানান।

 

এ বিষয়ে জানতে বাংলাদেশ স্থল বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মানজারুল মান্নান বলেন, আমার পোর্টে এরকম কিছু হচ্ছে না, তবুও খোঁজ নিচ্ছি। কাষ্টমের বিষয়টি কাষ্টম কমিশনার সিলেটের সাথে কথা বলেন। তারা এবিষয়ে বলতে পারবে।

ট্যাগ:

কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনি কমেন্ট করতে ইচ্ছুক?

সাংবাদিকদের তথ্য
ডেস্ক নিউজ

ডেস্ক নিউজ

জনপ্রিয় সংবাদ

পরিবেশের দোহাই দেওয়া আর চলবে না আমাদের হিস্যা বুঝিয়ে দিতে হবে’ জৈন্তাপুরে, :আরিফুল হক চৌধুরী

Follow for More!

তামাবিল স্থলবন্দর ও কাষ্টমে দূর্নীতির মহোৎসব: মাসে ৩ কোটি রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার

প্রকাশিত: ১০:৩৪:৩৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১১ আগস্ট ২০২৫
২৪

জৈন্তাপুর (সিলেট) প্রতিনিধি ::

সিলেটের সর্ববৃহত স্থল বন্দর তামাবিলে দূর্নীতির মহোৎসব চলছে। নানা অনিয়ম ও দূর্নীতির কারনে রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। আঙ্গুল ফুলে কলাগাছে পরিনত হচ্ছে অসাধু কর্মকর্তা ও সিএনএফ এজেন্টরা। ক্ষতির সম্মুখিন হয়ে দিশেহারা ব্যবসায়ীরা। যেন দেখার কেউ নেই!!

 

সরজমিনে তামাবিল স্থল বন্দর ঘুরে দেখা যায়, ভারতীয় পাথর বাহি প্রতি ট্রাকের কারপার্স এর বিপরিতে প্রাথমিক ভাবে পোর্ট কর্তৃপক্ষ ৭০টাকা ও কাষ্টম কর্তৃপক্ষ ৩শত টাকা হারে নিচ্ছে। দ্বিতীয় ধাপে কারপার্স এর বাহিরে অতিরিক্ত পণ্যের ট্যাক্স বাবত আরও ৭৯০টাকা হারে সিএনএফ এজেন্ট রফিক সরকার (লাইসেন্সধারী), রফিক আহমদ (লাইসেন্সধারী), সালমান হোসেন (লাইসেন্স বিহীন), মাসুম আহমদ (লাইসেন্স বিহীন) এর মাধ্যমে সংগ্রহ করছেন।

 

অনুসন্ধানে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য জানাযায়, পণ্য আনলোড করার পর বিধি মোতাবেক সর্বনিম্ন ৩০% খালি গাড়ী ওজন (পরিমাপ) করার বিধান রয়েছে। তামাবিল স্থল বন্দর, কাষ্টম ও সিএনএফ যোগসাজেসে খালি গাড়ী ওজন (পরিমাপ) না করে সাড়ে ৭টন হতে ৮টনের খালি গাড়ীকে এ্যাভারেজ ৯টন ধরে ওজন নির্ণয় করছেন। যার কারনে সরকারের ব্যাপক রাজস্ব হারাচ্ছে। ব্যবসায়ী সূত্রে জানাযায় প্রতিদিন তামাবিল স্থল বন্দরে অন্তত ৪শতাধিক হতে সাড়ে ৪শতাধিক পাথর বাহি ট্রাক প্রবেশ করে। ফলশ্রুতিতে কারপার্স এর বাহিরে অতিরিক্ত পণ্যের ট্যাক্স বাবত আরও ৯৭০টাকা হারে ট্যাক্স আদায় করছে কর্তৃপক্ষ। অতিরিক্ত আদয়কৃত রাজস্বের পুরোটাই রাজস্ব কোষাগারে জমা না দিয়ে নিজেদের পকেটস্থ করছেন কাষ্টম, পোর্ট ও সিএনএফ এজেন্টরা অভিযোগ ব্যবসায়ীদের। এছাড়া গাড়ী প্রতি প্রাথমিক ৩৭০টাকা হারে আদায় বাকী রয়েছে। ব্যবসায়ী সূত্রে জানায় প্রতিদিন গড়ে অন্তত ১০লক্ষ টাকা হারে মাসে ২ হতে ৩ কোটি সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে আসছে কাষ্টম, বন্দর (পোর্ট) ও সিএনএফ এজেন্টরা।

 

ব্যবসায়িক ঝামেলা এড়াতে নাম প্রকাশ না করার শর্তে তামাবিলের ২০/২৫জন ব্যবসায়ীরা জানান, কাষ্টম ও পোর্ট কর্তৃপক্ষ সিএনএফ এজেন্টের মাধ্যমে আমাদেরকে নি:স্ব করে দিচ্ছেন। যার কারনে ইতোমধ্যে নামকরা অনেক ব্যবসায়ীরা ক্ষতির সম্মুখিন হয়ে তাদের ব্যবসা বন্দ করে দিয়েছেন। তারা বলেন, বিভাগীয় তদন্ত করলে নদীর স্বচ্ছ জলের মত বেরিয়ে আসবে তামাবিল স্থল বন্দরের রাজস্ব ফাঁকির এই মহোৎসব।

 

এবিষয়ে জানতে তামাবিল কাষ্টম সুপার ইয়াকুব জাহিদ এর সাথে আলাপকালে তিনি জানান, ৭০টাকা কিংবা ৩শত টাকা হারে বা পণ্যের কারপার্সের অতিরিক্ত ৯৭০টাকা আদায়ের বিষয় তার জানা নেই। এছাড়া বন্দরে আসা প্রতিটি গাড়ী পরিমাপ করা হয়। আপনাকে যে এসব তথ্য দিয়েছেন তা সম্পূর্ণ ভূয়া, ভিত্তিহীন, মিথ্যা বলে তিনি দাবী করেন।

 

এবিষয়ে জানতে তামাবিল পোর্ট এর অতিরিক্ত পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান এর সাথে আলাপকালে তিনি জানান, এসব মনগড়া তথ্য দিয়ে বন্দরের সুনাম নষ্ট করার চেষ্টা করছে। এরকম কিছু বন্দরে হচ্ছে না। গাড়ীর ওজন আমাদের নিকট সংরক্ষণ রয়েছে যাহা ব্যবসায়ী পোর্ট ও কাষ্টম কর্তৃপক্ষের সমন্বয়ে হচ্ছে। প্রতিদিন গাড়ীর ওজন নির্ধারন করা সম্ভব হয় না বলে তিনি জানান।

 

এ বিষয়ে জানতে বাংলাদেশ স্থল বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মানজারুল মান্নান বলেন, আমার পোর্টে এরকম কিছু হচ্ছে না, তবুও খোঁজ নিচ্ছি। কাষ্টমের বিষয়টি কাষ্টম কমিশনার সিলেটের সাথে কথা বলেন। তারা এবিষয়ে বলতে পারবে।