
বিশেষ প্রতিনিধি ::শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এম সরওয়ার উদ্দিন চৌধুরী বলেছেন, জুলাই বিপ্লবের এক বছর পূর্ণ হল।
জুলাইয়ের সকল শহীদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করি, আহতদের দ্রুত সুস্থতা
কামনা করি। সাংবাদিকতা সত্যের মধ্যে থাকতে হবে। বিগত ১৭ বছর অনেক মানুষ
খুন হয়েছে, গুম হয়েছে, আহত হয়েছে, পঙ্গুত্ববরণ করেছে। ফ্যাসিস্ট হাসিনা
সরকার আয়নাঘর তৈরী করে নিরীহ নিরপরাধ মানুষদের নির্যাতন
করছে।শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে আমরা নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি। তিনি বলেন,
আয়নাঘর কালচার আর বাংলাদেশে আমরা ফিরে দেখতে চাই ন। আমরা যে যেখানেই আছি
পৃথিবীর যে কোনো প্রান্তে থাকি না কেনো সাদাকে সাদা বলতে হবে।অনলাইন
গণমাধ্যম পৃথিবীতে দ্রুত এগোচ্ছে। এটি সাইন্স এন্ড কম্পিউটার
রিলেটেড।এখানে এআই এর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রয়েছে। আমি সিলেট অনলাইনে
প্রেসক্লাব এর সাফল্য কামনা করি। তিনি শাবিপ্রবিতে জার্নালিজম বিভাগ
খোলার পরিকল্পনার কথা জানান।
সোমবার বিকেলে চব্বিশের ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে
সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের গৃহীত কর্মসূচির অংশ হিসেবে জুলাই পুনর্জাগরন
আলোচনা, শহীদ পরিবারকে সম্মাননা ও শহীদ সাংবাদিক এটিএম তুরাব বেস্ট
রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড প্রদান এবং নতুন সদস্যদের পরিচিতি সভায় প্রধান
অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের ড. রাগীব আলী মিলনায়তনে ক্লাব সভাপতি মোহাম্মদ
গোলজার আহমদ হেলালের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এম. সাইফুর রহমান
তালুকদার এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপির
জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ্ সিদ্দিকী, সিলেট
অনলাইন প্রেসক্লাবের জীবন সদস্য আফতাব চৌধুরী।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ সাংগঠনিক
সম্পাদক মিফতাহ্ সিদ্দিকী বলেন, ২০২৪ সালের ১৯ জুলাই আমরা একদিকে মিছিল
শুরু করেছি আর অন্যদিকে তুরবকে গুলি করে হত্যা করা হলো। জুলাই-আগস্টে যে
হত্যাকাণ্ড ঘটেছে সকল হত্যাকাণ্ডের বিচার হতে হবে। বাংলাদেশের সৃষ্টির পর
থেকে আমরা যেই বাংলাদেশ চেয়েছিলাম, আমরা একটি কল্যাণমুখী রাষ্ট্র গড়ব,
আমরা সেই রাষ্ট্র গড়তে পার নি। একটি বৈষম্যহীন রাষ্ট্রের স্বপ্ন নিয়ে
এদেশ স্বাধীন হয়েছিল। কিন্তু সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। বিগত
দিনে আমরা দেখলাম একদিকে সম্পদের পাহাড় গড়া হচ্ছে, অন্যদিকে ব্যাংক
লোটপাট হচ্ছে। ফ্যাসিবাদের পতনের পর এখন আমরা সকল মানুষকে নিয়ে আগামীর
সুন্দর দেশ গড়তে পারি, এটাই হোক আমাদের বৈষম্যহীন বাংলাদেশ।
সভাপতির বক্তব্যে সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের সভাপতি মোহাম্মদ গোলজার আহমদ
হেলাল বলেন, বিগত ছাত্র নাগরিক অভ্যুত্থানকালে অনলাইন গণমাধ্যম অগ্রণী
ভুমিকা রেখেছে। অনলাইন মিডিয়ায় সর্বস্তরের জনগণের মত প্রকাশের ব্যাপক
সুযোগ আছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- শহীদ সাংবাদিক এটিএম তুরাবের
বড় ভাই আবু জাবুর, চ্যানেল আই এর সিলেট প্রতিনিধি সাদিকুর রহমান সাকি,
এবি পার্টি যুব বিভাগ সিলেট মহানগরের সভাপতি তানজিল নাফি, সিলেট অনলাইন
প্রেসক্লাবের সহ সাধারণ সম্পাদক মাসুদ আহমদ রনি, কোষাধ্যক্ষ তাওহিদুল
ইসলাম, কার্যকরি পরিষদ সদস্য মো. আব্দুল হাছিব প্রমূখ।
শহীদ সাংবাদিক এটিএম তুরাবের পরিবারের পক্ষে অনুভূতি ব্যাক্ত করেন তাঁর
বড়ভাই আবু জাবুর, নতুন সদস্যদের পক্ষ থেকে অনুভূতি ব্যাক্ত করেন বাংলাদেশ
বেতারের সিলেট জেলা সংবাদদাতা এম.এ রহিম এবং শহীদ সাংবাদিক এটিএম তুরাব
বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড বিজয়ী দৈনিক শ্যামল সিলেটের মাল্টিমিডিয়া
রিপোর্টার আলী হায়দার সিদ্দিকী মিদুল।
অনুষ্ঠানে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে
পুলিশের গুলিতে নির্মমভাবে নিহত শহীদ সাংবাদিক এটিএম তুরাবের পরিবারকে
সম্মাননা এবং বিগত জুলাই আন্দোলনের বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ সাহসিকতার সহিত
পরিবেশন করার জন্য দৈনিক শ্যামল সিলেট এর মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার আলী
হায়দার সিদ্দিকী মিদুলকে সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাব ঘোষিত ‘শহীদ সাংবাদিক
এটিএম তুরাব বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান করা হয়। সবশেষে সিলেট
অনলাইন প্রেসক্লাবের নতুন ১৬জন সদস্যদের মধ্যে সদস্য সনদ বিতরণ করা হয়
এবং ফুল দিয়ে বরণ করা হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন- সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের সদস্য মো. কামরুল আলম,
এমএ ওয়াহিদ চৌধুরী, দেবব্রত রায় দিপন, তারেক আহমদ খান, দেলোয়ার হোসেন
মান্না, আব্দুল হান্নান, সুবর্ণা হামিদ, মো. তাইনুল ইসলাম, জনি কান্ত
শর্মা, ইব্রাহিম খান রনি, এহিয়া আহমদ, মাহমুদ পারভেজ খান, ফাহিম আহমদ,
ছানার আলী সানোয়ার, মোহাম্মদ নুরুল আলম, শেখ জাবেদ আহমদ, অলিউর রহমান,
খায়রুল আমিন রাফসান, মহছিন আহমদ রনি ও নাহিদ আহমদ প্রমূখ।
অনুষ্ঠান শেষে জুলাই বিপ্লবে আত্মদানকারী সকল শহীদদের আত্মার মাগফেরাত
কামনা করে মোনাজাত করা হয়।