সিলেট ২০শে আগস্ট, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৫ই ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২৬শে সফর, ১৪৪৭ হিজরি

একডো প্রকল্প সমাপনী সভা: নিজেদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন হচ্ছেন নারী চা শ্রমিকরা

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত আগস্ট ২, ২০২৫, ০৯:০৬ পূর্বাহ্ণ
একডো প্রকল্প সমাপনী সভা: নিজেদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন হচ্ছেন নারী চা শ্রমিকরা

নিউজ ডেস্ক::

নারী চা শ্রমিকদের নিয়ে গঠিত লিডারশিপ ডেভেলপমেন্ট অব টি গার্ডেন ওমেন ওয়ার্কারস অন দেয়ার রাইটস প্রকল্পের আজ সমাপনী সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (১ আগস্ট) সিলেট নগরীর মির্জাজাঙ্গালস্থ নির্ভানা ইন হোটেলের হলরুমে এথনিক কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশনের (একডো) আয়োজিত সভায় চা শ্রমিক নারীরা মত প্রকাশ করেন।

সভায় দলদলী চা বাগানের গীতা কুর্মী বলেন, এত বছর চা বাগানে কাজ করি। কিন্তু আমাদের জন্যও যে আইন আছে সেটা জানা ছিল না। মজুরি পাওয়া ছাড়াও যে আমাদের আইনি অধিকার আছে সেটা যানতাম না। আমরা মনে করতাম বাগানে চিকিৎসা ব্যবস্থা নাই এটা সমস্যা, আমরা ভাল খাবার পাই না এটা আমাদের আর্থিক অসচ্ছলতা। কিন্তু একডোর সাথে সম্পৃক্ত হয়ে জানতে পারি এগুলো আমাদের সমস্যা না। এসব সেবা পাওয়া আমাদের অধিকার। এবং এই অধিকার বুঝিয়ে দেওয়া রাষ্ট্রের দায়িত্ব।

 

গীতা কুর্মীর মত নিজেদের অধিকার সচেতন হওয়ার কথা বলেন কেওয়া ছড়া চা বাগানের গঙ্গা দাস, ভারতী দাস, বিনতা দাস, দলদলী চা বাগানের সীমা মুন্ডা, রিতা দাস, হরিতা দাস, সন্ধ্যা দাস, ঊষা মুন্ড, গীতা কুর্মী

 

হিলুয়াছড়া চা বাগানের অনামিকা নায়েক, খুশুমনি দাস, মনি বাউড়ি, কুসুম ভৌমিক, জানকি কালেন্দি।

 

]আয়োজকরা জানান, লিডারশিপ ডেভেলপমেন্ট অব টি গার্ডেন ওমেন ওয়ার্কারস অন দেয়ার রাইটস প্রকল্পটি ২০২৪ সালের জুলাই মাসে শুরু হয়। এই সময়ের মধ্যে তিনটি চা বাগানে (দলদলি চা বাগান, কেওয়াছড়া চা বাগান, হিলুয়াছড়া) ৩৬টি গ্রুপে ৭২০ জন সদস্যদের লিডারশিপ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এছাড়া বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের সাথে সভা, সেমিনারের মাধ্যমে চা শ্রমিকদের সংযোগ স্থাপন করে দেওয়া হয়। ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন ও অক্সফামের অর্থায়নে এই লিডারশিপ ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের সমাপনী সভায় ৯৫ জন চা শ্রমিক অংশগ্রহণ করেন।

 

এথনিক কমিউনিটি ডেভলপমেন্ট অর্গানাইজেশনের নির্বাহী পরিচালক লক্ষ্মীকান্ত সিংহের সভাপতিত্বে সমাপনী সভায় প্রধান অতিথি একডোর সভাপতি মিনতি দেবী। একডোর প্রকল্প সমন্নয়কারী মোমতাহিনুর রহমান চৌধুরীর সঞ্চালনায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন একডোর সহসভাপতি শংকর সিংহ, কোষাধ্যক্ষ যোগেশ্বর সিংহ, সিলেট উইমেনস জার্নালিস্ট ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শাকিলা ববি,আমরা পারবো (নারী ও কিশোরী) সংগঠনের সভাপতি সন্ধ্যা রানী ভৌমিক, সাধারণ সম্পাদক বৈশাখী রাওতিয়া।

 

দিনব্যাপী সমাপনী সভায় ছিল, দলগত কাজ, মুক্ত আলোচনা, আলোচনা সভা ও নাটক ‘সবুজ বৃক্ষের নীল কষ্ট’ প্রদর্শিত হয়।

 

সভায় প্রধান অতিথি একডোর সভাপতি মিনতি দেবী বলেন, চা বাগানের নারীদের নেতৃত্ব দিতে পারদর্শী করা এবং নেত্রীদের শক্তিশালী নেটওয়ার্ক তৈরি করতে, নারী চা-শ্রমিকদের শ্রম আইন, মজুরি এবং উপযুক্ত কমর্ক্ষেত্রসহ তাদের আইনি অধিকার সম্পর্কে সচেতন করাই আমাদের এই প্রক্লপের লক্ষ্য উদ্দেশ্য ছিল। আমরা চেষ্টা করেছি চা শ্রমিক নারীদের নেতৃত্বের দক্ষতা বিকাশ করতে। তবে যেহেতু চা শ্রমিক নারীর পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী তাই তারা বেশিরভাগ সময় নূন্যতম মজুরির জন্য লড়ছেন। তাই তাদের নেতৃত্ব বিকাশে তাদের নিয়ে দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা দরকার। আশাকরি আমরা ভবিষ্যতে আরও কাজ করবো চা শ্রমিকদের নিয়ে।

সংবাদটি শেয়ার করুন