সিলেট ৭ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৩শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১২ই মহর্‌রম, ১৪৪৭ হিজরি

বিচারের অপেক্ষায় এটিএম তুরাবের পরিবার

admin
প্রকাশিত জুলাই ৬, ২০২৫, ০৯:৪১ পূর্বাহ্ণ
বিচারের অপেক্ষায় এটিএম তুরাবের পরিবার

২০২৪ সালের মে মাসে বিয়ের দিন মা, বড় ভাই, দুই ভাবি ও ভাতিজির সঙ্গে সাংবাদিক এ টি এম তুরাব। —ফাইল ছবি

 

ডেস্ক নিউজ ::  ১৯ জুলাই, শুক্রবার। জুমার নামাজের পর আন্দোলনকারীদের স্লোগানে উত্তাল হয়ে উঠে সিলেট নগরী। শহরের বন্দরবাজার মধুবন মার্কেটের সামনে মিছিলের ছবি তোলার সময় গুলিবিদ্ধ হন সাংবাদিক আবু তাহের মুহাম্মদ তুরাব। যদিও তিনি সাংবাদিক লেখা চেস্টগার্ড ও হেলমেট পরা ছিলেন। এরপরও তাকে গুলি করা হয়। নিহত হন তিনি। ১৯ জুলাই সিলেটের তৎকালীন অতিরিক্ত কমিশনার, উপকমিশনার, দুই থানার ওসি এবং আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগসহ ১৮ জনের নাম উল্লেখ করে সিলেটের মহানগর দায়রা আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন সাংবাদিক তুরাবের বড় ভাই আবুল আহসান মো. আযরফ (জাবুর)। বর্তমানে মামলাটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন।সিলেট ভ্রমণ গাইড

 

আবুল আহসান আজরফ বলেন, ‘আমার ভাইয়ের শরীরে সাংবাদিকের জ্যাকেট ও মাথায় হেলমেট পরা ছিল। এরপরও তাকে লক্ষ্য করে ৯৮ রাউন্ড গুলি করা হয়েছে। তার শরীরটা ঝাঁঝরা করে ফেলে। সংবাদ সংগ্রহ করাটাই কি তার অপরাধ ছিল।’ তিনি বলেন, ‘আন্দোলনের এক বছর হয়ে গেছে, এখনও আসামিদের গ্রেফতার করা হয়নি। বিচার কাজ শেষ হয়নি। এ সরকার বিচার না করলে অন্য সরকার কি বিচার করবে?’

 

নিহত সাংবাদিক তুরাব বিয়ানীবাজারে আব্দুর রহিমের ছেলে। তার বাবাও একজন সাংবাদিক ছিলেন। তিনি বিয়ানীবাজারের প্রেসক্লাবের তিনবার সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে তুরাব ছিলেন সবার ছোট। গত বছরের ১২ মে লন্ডন প্রবাসী তানিয়া ইসলামের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল তুরাবের। বিয়ের ২ মাস ৬ দিনের মাথায় নিহত হন এই সাংবাদিক।

 

মা মমতাজ বেগম তুরাবের কথা মনে করতে চাইলেই অসুস্থ হয়ে যান। বড় ছেলে আহসান মো. আজরফ জাবুরকে চোখের সামনে পেলেই প্রশ্ন ছোড়েন—‘আসামি ইগুনতর (আসামিদের) ফাঁসি অইতো নায়নি (হবে না)?’ কখনো বলেন, ‘আসামি ইগুনতরে ধরছেনি?’ মাকে আশ্বস্ত করে করে ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন জাবুর। তুরাবের ভাই জাবুরও মায়ের সঙ্গে প্রশ্ন করেন, ‘যে বাংলাদেশ চেয়েছিলাম, তা কি পেলাম?’ আক্ষেপ নিয়ে বললেন, ‘প্রায় এক বছর হতে চলল, এখনো যেহেতু ভাই হত্যার সুষ্ঠু বিচার পাইনি—তাহলে তো আগের বাংলাদেশই রয়ে গেল।’

 

ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে ২০২৪ সালের ১৯ জুলাই সিলেট নগরের কোর্ট পয়েন্টে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে পুলিশের গুলিতে নিহত হন দৈনিক নয়া দিগন্তের সিলেট প্রতিনিধি এ টি এম তুরাব। তার গ্রামের বাড়ি বিয়ানীবাজার পৌরশহরের ফতেহপুর গ্রামে।

সংবাদটি শেয়ার করুন