
প্ররোচনায় না পড়ে দ্রুত নির্বাচন দিন প্রধান উপদেষ্টাকে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম
নিজস্ব সংবাদদাতা::
সিলেট নগরীর আমান উল্লাহ কনভেনশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত হয়েছে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাগফেরাত, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি ও সুস্থতা এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দীর্ঘায়ু কামনায় দোয়া মাহফিল ও ঈদ পুনর্মিলনী। জাতীয়তাবাদী আদর্শে বিশ্বাসী সিলেটের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের অংশগ্রহণে এই অনুষ্ঠান আয়োজন করেন সিলেট মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য বদরুজ্জামান সেলিম।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম বলেন, জাতীয় নির্বাচন বিলম্বিত করতে একটি মহল সুপরিকল্পিতভাবে কাজ করছে। প্রধান উপদেষ্টার প্রতি আহ্বান, আপনি যেন কোনো চাপ বা প্ররোচনায় না পড়েন। জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠায় দ্রুত নির্বাচন দিন।
তিনি আরও বলেন, জনগণ এখনো শহীদ জিয়াউর রহমানের নামেই ভোট দেয়। থার্মোমিটার দিয়েও যদি জনপ্রিয়তা মাপা হয়, দেখা যাবে সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা জিয়া। আওয়ামী লীগ হলো দুর্নীতির আশ্রয়স্থল, আর বিএনপি হলো গণতন্ত্রের প্রতীক। ভারত সীমান্ত থেকে যেসব পুশ-ইন হচ্ছে তা নিয়েও আমরা উদ্বিগ্ন। নির্বাচিত সরকার থাকলে এসব কখনোই হতো না। একমাত্র বিএনপিই ভারতের সঙ্গে সমমর্যাদায় কথা বলতে পারে।
সভাপতির বক্তব্যে বদরুজ্জামান সেলিম বলেন, আমি কোনো পদ-পদবির জন্য রাজনীতি করিনি। শহীদ জিয়ার আদর্শের একজন সাধারণ কর্মী হিসেবে দীর্ঘদিন রাজনীতিতে সক্রিয় থেকেছি। আজকের এই আয়োজন আমার ভালোবাসা ও দায়বদ্ধতার প্রকাশ। আপনারা জেনে খুশি হবেন, এই মিলনমেলার রান্না করা সিন্নি থেকে আমি আমাদের প্রিয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জন্য একজন আপনজনের মাধ্যমে একটি অংশ পাঠিয়েছি। তিনি আমাদের মা, তাই এই ভালোবাসা তাঁকেও পৌঁছে দেওয়া আমার দায়িত্ব মনে করেছি।
আবেগময় কণ্ঠে তিনি বলেন, আমি বহুবার নির্বাচনে অংশ নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করলেই কেউ না কেউ এসে বলে, আপনার সময় আছে, পরে করবেন। কিন্তু আমি আজ স্পষ্টভাবে বলছি, এখন আর আমার সময় নেই। আমার বয়স ৬৪ পার হয়েছে। অনেকেই আমার কালো চুল দেখে ভাবে বয়স কম, কিন্তু সময় আর হাতে নেই। এবার না হলে আর কোনো দিন নয়।
তিনি আরও বলেন, আমি জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জের মানুষের পাশে থেকে সেবা করতে চাই। এমপি হওয়া আমার উদ্দেশ্য নয়, আমার লক্ষ্য মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়া। অনেক কর্মীকে গড়ে তুলেছি, তারা আজ নেতা হয়েছেন। আমি তাদের নিয়ে গর্বিত, তবে নিজের জন্যও চাই ন্যায্য সুযোগ ও সম্মান। করুণা নয়, ভালোবাসা চাই।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, ড. এনামুল হক চৌধুরী, এম এ মালেক, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকী, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার এম এ সালাম, সহ-ক্ষুদ্র ও ঋণ বিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক, কেন্দ্রীয় সদস্য মিজানুর রহমান চৌধুরী, মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, ফয়সল আহমদ চৌধুরী, জাসাস সভাপতি হেলাল খান, নাসিম হোসাইন, মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী, জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইশতিয়ার সিদ্দিকীসহ সিলেট জেলা ও মহানগরের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ।
দোয়া পরিচালনা করেন হযরত শাহজালাল (রহ.) দরগাহ মসজিদের প্রধান ইমাম। দোয়ার পর উপস্থিত সবাইকে আপ্যায়ন করানো হয়।
দেশপ্রেম ও গণতন্ত্রের মুক্তির এই সংগ্রামে বদরুজ্জামান সেলিম ও তার সংগঠন সিলেটের জনগণের আশা ও বিশ্বাসের প্রতীক। আগামী দিনের বাংলাদেশ গড়তে তাদের এই উদ্যোগ ও প্রত্যয় অব্যাহত থাকবে বলে প্রত্যাশা প্রকাশ করেছেন নেতৃবৃন্দ।
সকল নেতাকর্মী ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করার আহ্বান জানানো হয়েছে।