সিলেট ১৯শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৬ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২১শে শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

মেঘনায় জাহাজে ৭ খুনের ঘটনায় যা জানাল র‍্যাব

admin
প্রকাশিত ডিসেম্বর ২৬, ২০২৪, ০৬:১২ পূর্বাহ্ণ
মেঘনায় জাহাজে ৭ খুনের ঘটনায় যা জানাল র‍্যাব

অনলাইন ডেস্ক:: দীর্ঘদিনধরে বেতন-ভাতা না পাওয়া ও দুর্ব্যবহারের ক্ষোভ থেকে ‘এমভি আল বাখেরা’ জাহাজের মাস্টার গোলাম কিবরিয়াকে হত্যা করেন গ্রেপ্তারকৃত আকাশ মন্ডল ওরফে ইরফান। পরে জাহাজে থাকা অন্য সদস্যরা বিষয়টি ফাঁস করে দিতে পারেন, এমন আতঙ্ক থেকে বাকি সাতজনকে গলা কেটে ও কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা করেন।এর মধ্যে মাস্টারসহ সাতজনের মৃত্যু হলেও প্রাণে বেঁচে যান জাহাজের সুকানি জুয়েল।

 

তবে এই হত্যাকাণ্ডের আগে সবার খাবারের সঙ্গে দুই পাতা ঘুমের ওষুধ মেশান অভিযুক্ত ইরফান।তাকে গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য জানা গেছে বলে দাবি করেছেন র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনীম ফেরদৌস।

 

বুধবার  কুমিল্লায় সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাব-১১ দাবি করেছে, জাহাজের মাস্টার গোলাম কিবরিয়া দীর্ঘ ৮ মাস ধরে কোনো প্রকার বেতন-ভাতা দিতেন না, এমনকি তিনি দুর্ব্যবহারও করতেন। এসবের ক্ষোভ থেকে আকাশ মন্ডল ওরফে ইরফান সবাইকে হত্যা করেন।

 

ইরফানের দেওয়া তথ্যমতে র‍্যাব আরও দাবি করে, জাহাজের বাজার করা ইরফান পাবনার একটি বাজারে নেমেছিলেন।সেখান থেকে তিনি ৩ পাতা ঘুমের ওষুধ কেনেন। আর যে চাইনিজ কুড়াল দিয়ে সবাইকে কুপিয়ে হত্যা করা হয় সেটি আগেই জাহাজেই ছিল।কুড়ালটি জাহাজের নিরাপত্তার জন্য রাখা হয়েছিল।

 

র‍্যাব আরও জানায়, ইরফান প্রথমে খাবারের মধ্যে ঘুমের অষুধ খাইয়ে সবাইকে অচেতন করে।পরে হাতে গ্লাভস পরে চাইনিজ কুড়াল দিয়ে সবাইকে কুপিয়ে হত্যা করে। এরপর সবার মৃত্যু নিশ্চিত করে নিজে জাহাজ চালিয়ে হাইমচর এলাকায় এসে অন্য একটি ট্রলারে করে পালিয়ে যান।

 

মাস্টার গোলাম কিবরিয়াকে হত্যার সময় অন্যরা দেখে ফেলায় ইরফান তাদেরও হত্যা করেন বলে দাবি করে র‍্যাব।

 

খুন হওয়া ব্যক্তিরা হলেন- মাস্টার গোলাম কিবরিয়া, গ্রিজার সজিবুল ইসলাম, লস্কর মাজেদুল ইসলাম, শেখ সবুজ, আমিনুর মুন্সী, ইঞ্জিন চালক সালাউদ্দিন ও বাবুর্চি রানা কাজী। এ ছাড়া আহত ব্যক্তি হলেন- সুকানি জুয়েল।

 

এর আগে চাঁদপুরের হাইমচরের মাঝিরচর এলাকায় এমভি আল বাকেরা জাহাজে সাত খুনের সঙ্গে জড়িতের ঘটনায় ইরফানকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। তাকে বাগেরহাট জেলার চিতলমারী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

 

গতকাল দায়ের করা মামলায় জানা যায়, ওই জাহাজে ৮ জন নন, ৯ জন ছিলেন। আর ওই ব্যক্তি হলেন আকাশ মন্ডল ওরফে ইরফান। কথা বলতে অপারগ সুকানি জুয়েল লিখে এ তথ্য জানান।

 

পরে গতকালই সাতজনকে খুনের ঘটনায় মামলা করেন জাহাজের মালিক মাহাবুব মুর্শেদ। মামলায় আসামি করা হয়েছে অজ্ঞাতনামা ডাকাত দলকে।

 

এদিকে জাহাজে খুন হওয়া ছয়জনের মরদেহ মঙ্গলবার বিকেলে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করেছে জেলা প্রশাসক মহসীন উদ্দিন ও নৌপুলিশ সুপার সৈয়দ মোশফিকুর রহমান। ওই সময় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহতদের পরিবারের স্বজনদের ২০ হাজার টাকার চেক ও নৌপুলিশের পক্ষ থেকে নগদ ১০ হাজার টাকা করে প্রদান করা হয়। তবে বাবুর্চি রানা কাজীর পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত না হওয়ায় তার মরদেহ হস্তান্তর করা হয়নি।

সংবাদটি শেয়ার করুন