
নোমান আহমেদ।। প্রায় দুই/তিন বছর ধরে ট্রাক, পিকআপ,বাস,নোহার যাতায়াত সময়ের সাথে সাথে বৃদ্ধি পেতে থাকে সিলেট-ভোলাগঞ্জ মহাসড়কে।
দিবারাত্রি সিলেট-ভোলাগঞ্জ মহাসড়কের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা অংশের লাচুখাল,টুকেরবাজার, বউবাজার,সাকেরা পয়েন্ট সহ বিভিন্ন জায়গায় ট্রাক পার্কিং করে রাখায় প্রতিনিয়ত ঘটছে দূর্ঘঠনা!আতংকিত সাধারণ যাত্রী,স্কূল কলেজগামী ছাত্র,ব্যবসায়ী ও পর্যটক।এমনই চিত্র নিত্যদিনের বলে অভিযোগ স্থানীয় জনসাধারণের যা প্রায়ই তীব্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
একসময় রাস্তাটি ছিলো ছোট ব্রীজ আর খানা খন্দকে ভরপুর। যাতায়াত ছিলো প্রায় একদশক যাবৎ অসহনীয় পর্যায়ের দূর্ভোগের।
গণমানুষের মানববন্ধন,সভা, সমাবেশের পর অবশেষে তৎকালীন আওয়ামিলীগ সরকার ভারী যানবাহন,পর্যটন শিল্পের বিকাশে মহসড়কে রুপান্তর করে ২০১৬ সালে। একনেক অনুমোদনে আরসিসি ঢালাইয়ের আওতায় এনে কয়েক ধাপে ৭০০ কোটি টাকা ব্যয়ে সিলেট টু ভোলাগঞ্জ জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত টেন্ডার মাধ্যম প্রক্রিয়া এক্সপেট্রা কোম্পানি তার নির্ধারিত সময়েই কাজ সম্পন্ন করায় সুফল ভোগ করেন উত্তর সিলেটবাসী।
দ্রুত সময়ে প্রয়োজনীয় যাতায়াতের ব্যবস্থা হলেও এখন ট্রাকের সারি সারি লাইনে মহাসড়ক দখলে রাখায় যাত্রী সাধারণ এক নিরাপত্তাহীনতায় পারাপার করতে হচ্ছে এমনটা অভিযোগ স্থানীয় সচেতন মহলের।স্কুল কলেজ গামী ছাত্র,আগন্তুক যাত্রীদের।
বিষয়টি নিয়ে পাড়ুয়া স্কূল এন্ড কলেজগামী ছাত্র আরিফ জানান,প্রায় সময়ই আমরা প্রতিনিয়ত কলেজে যেতে দূর্ঘঠনার শিকার হই।গতকাল একটি ট্রাকের সাথে অটোরিকশার ধাক্কায় অন্তত তিনজন আহত হওয়ার ঘটনা ঘঠে। বিশেষ করে সাকেরা এলাকায় প্রচুর সংখ্যক ট্রাক পার্কিং থাকায় আতংক বিরাজ করে কখন জানি পার্শ রাস্তা হতে হুমড়ি খেয়ে মূল রাস্তায় উঠতে দূর্ঘঠনার শিকার হই। অতীতে ও অনেক মায়ের বুক খালি হয়েছে এ রাস্তায়। আমরা এমনটা কামনা করিনা বিষয়টি প্রশাসনের নজরে এনে ট্রাক পার্কিং বন্ধ করতে উপজেলা প্রশাসন কোম্পানীগঞ্জ এর দৃষ্টি আকর্ষণ জরুরি বলে জানান।
এম,সাইফুর রহমান কলেজ গামী ছাত্র সোহেল জানান, দীর্ঘদিন ধরে আতংকে কলেজে আসা যাওয়া করতে হয়।টুকের বাজার,বউ বাজার,সাকেরা পয়েন্ট যত্রতত্র গাড়ীগুলো পার্কিং থাকে ফলে অনেক সময় নিরাপত্তাহীনতায় ভোগী আমরা।অবিলম্বে মহাসড়কটি নিরাপদ করতে প্রশাসন,জনপ্রতিনিধি, ট্রাক শ্রমিক নেতারা আমলে নেয়ার জোর দাবি জানান।
কোম্পানীগঞ্জ ছাত্র পরিষদ (কোছাপ)সভাপতি হেলাল আহমদ বলেন অতীতে কোছাপ প্যাডে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর কোম্পানীগঞ্জস্থ মহাসড়কে অবৈধ ট্রাক পার্কিং বন্ধে স্মারক লিপিসহ মানববন্ধন সভা সমাবেশ করেছি। ফলপ্রসূ না হওয়ায় জেলা প্রশাসক বরাবর ও স্মারকলিপি দেয়া আছে।তবুও অবৈধ পার্কিং বন্ধ না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে ইতিমধ্যে ফের কোছাপ নেতৃবৃন্দ নিয়ে আলোচনায় বসে প্রয়োজনে স্কুল কলেজগামী ছাত্র-ছাত্রীদের যাতায়াত নিরাপত্তা,জনদূর্ভোগ লাঘবে প্রয়োজনে রাস্তা অবরোধের ডাক দেয়া হবে বলে জানান কোছাপ সভাপতি।
কথা হয় উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক রাইসুল ইসলাম রাজনের সাথে তিনি জানান, হাইওয়ে পর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় এভাবে সারি সারি ট্রাকের দখলে রাখায় প্রায়শই দূর্ঘঠনা ঘঠে।বিগত দিনে একস্কুল শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে বলে প্রতিক্রিয়ায় ভবিষ্যতে যাত্রী নিরাপত্তা ও নিরাপদ সড়ক নির্মাণে প্রশাসনের নজরদারির গুরুত্ব প্রয়োজন বলে মনে করেন।
উপজেলা পাথর ব্যবসায়ী সমিতির সেক্রেটারি জসিমুল ইসলাম আঙ্গুর প্রতিবেদকের সাথে আলাপকালে বলেন,বিষয়টি নিয়ে পত্র পত্রিকায় বারংবার লেখালেখি হচ্ছে! তবুও ট্রাক শ্রমিকরা তাদের ট্রাকগুলো রাস্তায়ই রাখে!দীর্ঘদিন ধরে রাস্তায় বিশেষ করে সাকেরা পয়েন্টে ট্রান্সপোর্ট কতৃক ট্রাক চালান নেয়ার অজুহাতে দীর্ঘ ট্রাকের সারিতে যান চলাচল ব্যাহত হয়।প্রায়সময় ঘঠে দূর্ঘঠনা, তিনি ব্যস্ততম সাকেরা এলাকা হতে ট্রান্সপোর্ট অফিসগুলো অন্যত্র নেয়ার অভিমত ব্যক্ত করেন।
“ট্রাকের অবৈধ পার্কিংয়ে দূর্ভোগে যাত্রীসাধারণ! শ্রমিক সংগঠন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা শাখার সভাপতি কবির আহমদ ও সেক্রেটারি মাহফুজ এর দৃষ্টি আকর্ষণ করলে প্রতিবেদককে জানান বিষয়টি অনুচিত,আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি মহাসড়ক থেকে ট্রাকের সারি উচ্ছেদে অতীতের ন্যায় নির্দেশনা দিতে। সভাপতি কবির আহমদ বলেন, নির্ধারিত পার্কিং এরিয়া সংগঠন কতৃক বরাদ্দ তবুও কিছুসংখ্যক ড্রাইভাররা রাস্তায় গাড়ী রাখে এতে জনসাধারণের দূর্ভোগ হয় তা আমরা চাইনা।শীঘ্রই আমরা এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিয়ে পার্কিং এরিয়ায় ট্রাক রাখার নির্দেশনা বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করবো।
এ বিষয়ে সিলেট জেলা ট্রাক-পিকআপ কাভর্ডভ্যান শ্রমিক সংগঠন এর নতুন সেক্রেটারি নাজিম উদ্দীন লস্কর এর বক্তব্যে তিনি বলেন,সিলেট ভোলাগঞ্জ কোম্পানীগঞ্জ রাস্তাটি এখন মহাসড়কের অন্তর্ভূক্ত। হাজার হাজার ট্রাক কোম্পানীগঞ্জে প্রবেশ করে।জনদূর্ভোগ হউক আমরাও এটা চাইনা।বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় সরকারি ট্রাক টার্মিনাল স্থাপনের দাবি জানান তিনি। পাশাপাশি বর্তমান পরিস্থিতিতে শ্রমিক সংগঠন ও স্থানীয় প্রশাসনের যৌথ আলোচনায় মহাসড়কে ট্রাক পার্কিংয়ের বিষয়টি সমাধানের অভিমত ব্যক্ত করেন। এক প্রশ্নের জবাবে জেলা সেক্রেটারি ট্রাক টার্মিনাল কোম্পানীগঞ্জে স্থাপনের লিখিত আবেদন রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই লিখিত দাবি সরকারের কাছে তুলে ধরবেন বলে জানান।
সিলেট জেলা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আমির হোসেন এর দৃষ্টি আকর্ষণ করলে প্রতিবেদককে তিনি জানান, ভোলাগঞ্জ -সিলেট মহাসড়কে অবৈধ ট্রাক পার্কিংয়ের বিষয়টি তার জানা নেই। এক প্রশ্নের জবাবে অবৈধ ট্রাক পার্কিংয়ে জনদূর্ভোগের বিষয়টি যেহেতু জানা নেই সেজন্য ফোনালাপ ব্যতীত সরাসরি অফিসে সাক্ষাৎ পর্বে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবেন বলে জানান প্রতিবেদককে।
উপজেলা প্রশাসন কোম্পানীগঞ্জ এর নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রবিন মিয়ার সাথে এ বিষয়ে জানতে চাইলে অবৈধ ট্রাক পার্কি উচ্ছেদে শীঘ্রই অভিযান পরিচালনা করা হবে বলে জানান তিনি।
Channel Jainta News 24 














