কানাইঘাট প্রতিনিধিঃ
সিলেটের কানাইঘাট লোভাছড়াপাথর কোয়ারী থেকে অবৈধ ভাবে বারকি নৌকা ও সেইভ মেশিন দিয়ে পাথর উত্তোলন বেড়েই চলছে। অবৈধ ভাবে কোয়ারী থেকে পাথর উত্তোলন বদ্ধ এবং পাথর পরিবহণ বদ্ধ করতে স্থানীয় প্রশাসনের অভিযান শুরু হয়েছে। জানা যায় বন্ধ হওয়া লোভাছড়া কোয়ারীতে সব ধরণের পাথর উত্তোলন ও পরিবহণ বন্ধ থাকলেও প্রায় মাসখানিক থেকে কোয়ারী থেকে একটি অসাধু চক্র প্রায় শতাধিক বারকি নৌকা দিয়ে লোভাছড়ার ভাঙ্গনকবলিত মুলাগুল কান্দলা বাজারের পাশে অবস্থিত হারিছ চৌধুরী একাডেমীর সামনে ও সিক্স মার্ডার নামক বাংলাটিলার ঝুকিঁপুর্ণ স্থান থেকে সেইভ মেশিন ও বারকি নৌকা দিয়ে পাথর তুলা হচ্ছে। এছাড়াও কোয়ারীর ভাল্লুক মারা, সাউদগ্রাম, কান্দলা-সতিপুর নামক স্থান থেকেও পাথর উত্তোলন করা হচ্ছে। উত্তোলনকৃত পাথর ট্রেক্টর ও ট্রাক দিয়ে প্রতিদিন পরিবহণ করে মন্তাজগঞ্জ বাজারের সুরমাঘাট ও কারাবাল্লা সুরমা বাজার এলাকায় প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখান থেকে পাশর্^বর্তী জকিগঞ্জ উপজেলার আটগ্রাম বাজারের পাশে মজুদ করে ক্রাশার মেশিন দিয়ে ভেঙ্গে দেশে বিভিন্ন স্থানে পরিবহণ করে একটি অসাধু চক্র। এছাড়াও কানাইঘাটের আন্দোরমুখ বাজার ও চরিপাড়ার লোভামুখ বাজার সহ আশপাশের বেশ কয়েকটি স্থানে পাথর মজুদ করে পরিবহণ করে বাংলাবাজারের পাশে অবস্থিত অবৈধ ক্রাশার মেশিনে ভাঙ্গা হয়। প্রতিদিন লোভাছড়া কোয়ারী থেকে শত শত ঘনফুট পাথর উত্তোলন করা হচ্ছে। হারিছ চৌধুরী একাডেমীর শিক্ষকরা জানিয়েছেন ভাঙ্গনকবলিত বিদ্যালয়ের সামনে থেকে পাথর উত্তোলনে বার বার বাধা দেওয়া সত্বেও পাথর উত্তোলন বন্ধ হচ্ছেনা। পাথর খেকুরা সারা দিন বারকি নৌকা দিয়ে পাথর উত্তোলন করলেও মুলত সন্ধার পূর্বে থেকে রাতভর সেইভ মেশিন দিয়ে পাথর উত্তোলন করে থাকেন। সেই উত্তোলিত পাথরগুলো স্থানীয় প্রশাসেন চোখ ফাকিঁ দিয়ে সকাল বেলায় ইঞ্জিন চালিত বারকি নৌকা দিয়ে পরিবহণ করে তাদের নির্ধারিত স্থানে নিয়ে যায়। অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনের কারনে বিদ্যালয়টি ঝুঁিকর মধ্যে পরতে পারে বলে তারা জানান। এছাড়াও প্রায় গত ৮ বছর পূর্বে লোভাছড়ার বাংলাটিলা নামক স্থান থেকে বারকি নৌকাদিয়ে পাথর উত্তোলন করতে গিয়ে পাথরের চাক ধসে পড়ে ৬জনের মৃত্যু হয়। এরপর থেকে প্রশাসন সেখান থেকে পাথর উত্তোলন করতে স্থায়ী ভাবে নিষিদ্ধ করে। কিন্তু প্রশাসনের সেই নিষিদ্ধ স্থান থেকে বর্তমানে সেইভ মেশিন সহ অবৈধ যন্ত্রপাতি দিয়ে পাথর উত্তোলন করতে দেখা গেছে। কোয়ারীর ঝুঁকিপুর্ণ এলাকা থেকে পাথর উত্তোলন বন্ধে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী জানিয়েছেন সচেতন মহল। এদিকে স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন লোভাছড়া পাথর কোয়ারী থেকে পাথর উত্তোলন ও পরিবহণ বন্ধে অভিযান জোরদার করেছে। গত বুধবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানিয়া আক্তার কানাইঘাটের আন্দুরমুখ ও চরিপাড়ার লোভারমুখ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযানে পাথর পরিবহণের একটি ট্রেক্টরগাড়ির যন্ত্রপাতি বিকল সহ প্রায় হাজারখানিক ঘনফুট পাথর জব্দ করেন। এর দুইদিন পূর্বে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) তাপস চক্রবর্তী তুষার মন্তাজগঞ্জ ও আন্দুরমুখ বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৫শতাধিক ঘনফুট পাথর জব্দ সহ একটি অবৈধ ক্রাশার মেশিন ধ্বংশ করেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানিয়া আক্তার জানিয়েছেন লোভাছড়া পাথর কোয়ারী থেকে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনে প্রশাসন কঠোর অবস্থানে রয়েছে। পাথর উত্তোলন বন্ধে নিয়মিত অভিযান চলছে এবং অবৈধভাবে উত্তোলিত পাথর আমরা জব্দ করেছি। কোয়ারী এলাকায় উপজেলা প্রশাসনের পাশাপাশি বিজিবি ও থানা পুলিশের টহল রয়েছে।