সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি:
সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলায় জেলেদের বিরুদ্ধে খাঁই হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ কেটে মাছ ধরার অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে শান্তিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন স্থানীয় কৃষকরা।
তাদের দাবি বাঁধ কেটে মাছ আহরনের ফলে হাওরে সেচ সংকট দেখা দেয়ার পাশাপাশি ফসলরক্ষা বাঁধটি আগাম বন্যার ঝুঁকিতে পড়বে।
সরজমিনে পরিদর্শন করলে দেখা যায়, শান্তিগঞ্জ উপজেলার বীরগাঁও গ্রামের পাশে খাঁই হাওরের বেশ কয়েকটি স্থানে ফসলরক্ষা বাঁধ কেটে মাছ আহরণ করছেন স্থানীয় জেলেরা। হাওরের স্বাভাবিক পানি প্রবাহের পথে বাঁশ, চটি পাটি ও পলিথিন দিয়ে পানি প্রবাহ রোধ করে সরু চ্যানেলে মুখে জাল পেতে মাছ ধরছেন তারা। অন্যদিকে মাহসিং নদীর ওপাড়ে বড়বড় করে বাধ কেটে হাওরের পানি নদীতে ছেড়ে পানি প্রবাহের মুখে বাঁশের বেড়া দিয়ে পানি নিষ্কাশনের মুখে জাল পেতে দিনরাত মাছ ধরছেন আরেক দল জেলে।
অপরিকল্পিতভাবে এসব ফসলরক্ষা বাঁধ কেটে মাছ ধরার ফলে আসন্ন বোরো মৌসুমে তীব্র পানি সংকটের আশংকা করছেন কৃষকরা।
এভাবে ফসলরক্ষা বাঁধ কেটে মাছ ধরার ফলে উপজেলার পূর্ববীরগাও, পশ্চিমবীরগাও, জয়কলস, পাথারিয়া, পূর্বপাগলা পশ্চিমপাগলা সহ ছয়টি ইউনিয়নের লক্ষাধিক কৃষক আসন্ন বোরো মৌসুমে সেচ সংকটের কারনে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার আশঙ্কা করছেন।
কৃষকরা জানান, সরকার হাওরের বোরো ফসল রক্ষার জন্য প্রতিবছর কোটি কোটি টাকা খরচ করে। অন্যদিকে অসাধু জেলেরা বাঁধ কেটে প্রতিবছর মাছ ধরে সরকারের লাখ লাখ টাকা ক্ষতি করে। কৃষকদের অভিযোগ জেলেরা বাঁধ কেটে মাছ ধরার ফলে প্রতিবছর হাওরে সেচ সংকটের সৃষ্টি হয়।
সচেতন মহলের মতে এভাবে বাঁধ কেটে মাছ ধরার কারনে কৃষক ও সরকার উভয় ক্ষতিগ্রস্থ হবেন।
তবে জেলেরা বাঁধ কেটে মাছ ধরার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বাঁধের ভেঙ্গে যাওয়া অংশে পানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করে জাল পেতে আমরা মাছ ধরছি। এতে বাঁধের কোন ক্ষতি হচ্ছে না।
পশ্চিম বীরগাও ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান রুজেল আহমেদ বলেন, বাঁধ কেটে মাছ ধরা হলে কেটে দেয়া অংশের বাঁধ দুর্বল হয়ে পড়ে। পরে বাঁধ মেরামত করলে অনেক বেশি মাটি ফেলতে হয় এতে সরকারের অর্থের ক্ষতি হয়। সেই সাথে কৃষকরাও ক্ষতিগ্রস্থ হন।
শান্তিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুকান্ত সাহা বলেন, হাওরের পানি নিষ্কাষনের জন্য অনেক সময় বাঁধ কাটতে হয়। বাঁধ কেটে দেয়ার জন্য উপজেলা কমিটি রয়েছে। তাদের পরামর্শে বাঁধ কাটার কথা খাই হাওরের বাধ কেটে দেয়া হয়নি এটি প্রাকৃতিক ভাবে ভেঙ্গে যায়। তবে বাধের ভাঙ্গা অংশে মাছ ধরার খবর পেয়ে উপজেলা মৎস্য অফিসার ও পাউবোর উপসহকারী প্রকৌশলী পরিদর্শন করেছেন। পানি প্রবাহে বাধা গ্রস্থ করা হলে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াছ মিয়া বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।