
মাহবুবুজ্জামান সেতু – নওগাঁ প্রতিনিধি: ৪৯নওগাঁ–৪ (মান্দা) আসনে বিএনপির মনোনয়ন ঘোষণা ঘিরে তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে তীব্র অস্বস্তি ও বিভাজন দেখা দিয়েছে। কেন্দ্র থেকে ডা. ইকরামুল বারী টিপুকে প্রার্থী ঘোষণা করা হলেও মাঠপর্যায়ের নেতাদের দাবি— “দুঃসময়ের পরীক্ষিত নেতাকেই মনোনয়ন দিতে হবে।”
সোমবার (১৭ নভেম্বর) বিকেলে উপজেলার পাঁজরভাঙ্গা বাজার চারমাথা মোড়ে পূর্ব মান্দা তৃণমূল বিএনপির উদ্যোগে এক ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবকদল, কৃষকদল ও ছাত্রদলের হাজারো নেতাকর্মী এতে অংশ নেন।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন কশব ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আবুল হাসেম সরদার, সাধারণ সম্পাদক লিয়াকত আলী মাস্টার, কাঁশোপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি শাহিদুজ্জামান সোহানসহ অন্যরা।
বক্তারা অভিযোগ করেন, তৃণমূলের মতামত না নিয়েই প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। তাদের ভাষ্য— “বিতর্কিত কাউকে” চূড়ান্ত প্রার্থী করা হলে তা হবে “দলের জন্য আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত।”
তারা বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এবং উপজেলা সভাপতি এম. এ. মতীনকে ধানের শীষের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেওয়ার দাবি জানান।
৩ নভেম্বর গুলশানে বিএনপি কার্যালয়ে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ডা. ইকরামুল বারী টিপুর নাম ঘোষণা করেন। ঘোষণার পরপরই স্থানীয় পর্যায়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়— একপক্ষে পুনর্বিবেচনার দাবি, অন্যপক্ষে তার সমর্থকদের উচ্ছ্বাস।
তৃণমূল নেতারা অভিযোগ করেন, ডা. টিপু অতীতে ‘সংস্কারপন্থী’ রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং ২০০৮ সালের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে সমর্থন করেছিলেন— যা তারা দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গ বলে দাবি করছেন। এ অভিযোগে গত ২৩ অক্টোবর উপজেলা বিএনপি সংবাদ সম্মেলন করে তার সঙ্গে রাজনৈতিক সম্পর্ক ছিন্নের ঘোষণা দেয়।
১০ নভেম্বর উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক তারেক রহমানের কাছে লিখিত আবেদন পাঠান। তাতে ডা. টিপুর মনোনয়ন স্থগিত করে “অধিকতর যাচাইয়ের ভিত্তিতে নতুন প্রার্থী ঘোষণার” দাবি জানানো হয়।
ভালাইন ইউনিয়ন বিএনপি নেতাদের স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বলা হয়—“যিনি দীর্ঘদিন ভিন্ন রাজনৈতিক ধ্যানধারণায় স্বাভাবিক জীবনযাপন করেছেন, তাকে হঠাৎ প্রার্থী করা মানে দলকে ঝুঁকিতে ফেলা।”
স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বিরোধ অব্যাহত থাকলে মান্দা বিএনপির সাংগঠনিক ঐক্যে বড় ধাক্কা লাগতে পারে। তাদের পর্যবেক্ষণ—“যিনি দীর্ঘদিন মাঠে ছিলেন, মানুষের পাশে ছিলেন, তাকেই প্রার্থী করলে মান্দায় বিএনপি শক্ত অবস্থান তৈরি করতে পারবে।”
এর আগে ৪, ৯, ১০ ও ১৩ নভেম্বর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে একই দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ হয়েছে। প্রত্যেক কর্মসূচিতে বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের উল্লেখযোগ্য অংশগ্রহণ লক্ষ্য করা গেছে।
তৃণমূল নেতাদের দাবি— “এ আন্দোলন কোনো ব্যক্তির পক্ষে নয়, দলের অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই।”
Channel Jainta News 24 




















