ট্রাভেল এজেন্সি নিবন্ধন ও নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশ ২০২৫ (খসড়া) এর কতিপয় ধারা বাতিলের দাবিতে সিলেটে মানববন্ধন করেছে অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ (আটাব) সিলেট অঞ্চলের সাধারণ সদস্যবৃন্দ। ট্রাভেল এজেন্সি খাতের স্বার্থ রক্ষায় আটাব সিলেট অঞ্চলের উদ্যোগে মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) বেলা ১১ টায় সিলেট নগরীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে বিশাল মানববন্ধন কর্মসূচী পালিত হয়। এতে সিলেটের কয়েক শতাধিক ট্রাভেল এজেন্সী ও ট্যুর অপারেটর প্রতিষ্ঠানের সদস্যবৃন্দ অংশ নেন।
এদিকে মানববন্ধন শেষে মঙ্গলবার দুপুরে সিলেটের জেলা প্রশাসক বরাবরে আটাব সিলেট অঞ্চলের সাধারণ সদস্যবৃন্দের পক্ষ থেকে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
নগরীর চৌহাট্টাস্থ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে আটাব সিলেট জোনের চেয়ারম্যান আলহাজ¦ মোঃ আতাউর রহমানের সভাপতিত্বে, দেওয়ান রুশো চৌধুরীর পরিচালনায় ও মৌলানা আবুল কালাম আজাদের পবিত্র কুরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত এক ঘন্টার কর্মবিরতি ও মানববন্ধনে সিলেটের সকল ট্রাভেল এজেন্সি মালিকগণ অংশ নেন। এরপর নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে সিলেটের জেলা প্রশাসক বরবরে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন আটাবের সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান খান রেজওয়ান, হাব সিলেট অঞ্চলের চেয়ারম্যান ও আটাব বাংলাদেশের সদ্য সাবেক সহ সভাপতি আব্দুল হক, আটাবের সাবেক সেক্রেটারি ও হাব সিলেট অঞ্চলের সেক্রেটারি আব্দুল কাদির, আটাব সিলেট অঞ্চলের সাবেক তিন বারের চেয়ারম্যান আব্দুল জব্বার জলিল, আটাব ও হাবের সাবেক চেয়ারম্যান মোতাহার হোসেন বাবুল, আটাব বাংলাদেশের সাবেক সহ সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী, হাব সিলেট অঞ্চলের সাবেক চেয়ারম্যান খাজা মঈনুদ্দিন জালালাবাদি, হাবের সাবেক চেয়ারম্যান জহুরুল কবির চৌধুরী শিরু।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- ট্রাভেল ব্যবসায়ী আব্দুল গফুর, আবুজাফর, জামাল তারেক বুলবুল, মোজাম্মেল হোসেন রুবেল, কবির আহমদ, এ কে এম আব্দুল্লাহ, আব্দুল মুকতাদির, আব্দুল বাসিত, ইসমাইল হোসেন, জনাব আব্দুল্লাহ এ মাসুম, তাজুল ইসলাম, তাজ উদ্দিন, দিদার আহমদ, মোহাম্মদ ফারুক সহ টোয়াব ও ট্যুরিষ্ট ক্লাবের নেতৃবৃন্দ ও আটাবের সদস্যবৃন্দ।
মানববন্ধনে নেতৃবৃন্দ বলেন, আটাব কমিটি বাতিল করে সংগঠনকে দুর্বল করার নীলনকশা বাস্তবায়নের ষড়যন্ত্র চলছে। এটি পুরো দেশের পুরো ট্রাভেল শিল্পের জন্য মারাত্মক ক্ষতি এবং লাখো মানুষের জীবিকা হুমকির মুখে পড়বে। আমরা ভ্যাট-ট্যাক্স দিয়ে ব্যবসা করছি, তবুও আমাদের ব্যবসা বন্ধের কালো আইন দেশের অর্থনীতির জন্য নতুন করে সঙ্কট সৃষ্টি হবে। অবৈধ আইন নয়, ট্রাভেল এজেন্সি বাঁচার আইন চাই।
তারা বলেন- ট্রাভেল এজেন্সি নিবন্ধন ও নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশ ২০২৫ (খসড়া) আইনে কিছু ধারা রয়েছে, যা দেশের ট্রাভেল ট্রেডের জন্য চরম ক্ষতিকর। বিশেষ করে অফলাইন ট্রাভেল এজেন্সির জন্য ১০ লাখ টাকা জামানতের প্রস্তাব, এক এজেন্সির সাথে অন্য এজেন্সির ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধ করা এবং জেল-জরিমানা বৃদ্ধির প্রস্তাব সবকিছুই অযৌক্তিক ও ব্যবসাবান্ধব নয়। এমনিতেই দেশের ট্রাভেল ও ট্যুরিজম খাত ইতিমধ্যে কঠিন সময় অতিক্রম করছে। এমন পরিস্থিতিতে নতুন আইন দিয়ে ব্যবসা বন্ধ করে দেওয়ার মতো ধারা প্রণয়ন করা হলে লাখো মানুষের জীবিকা হুমকির মুখে পড়বে। এই খাতের উন্নয়ন চাইলে সরকারকে উদ্যোক্তাদের সঙ্গে আলোচনা ছাড়া এমন আইন প্রণয়ণের আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত থেকে অবশ্যই সরে আসতে হবে।
স্মারকলিপিতে নেতৃবৃন্দ বলেন-আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি সম্প্রতি উপদেষ্টা পরিষদ এর বৈঠকে বাংলাদেশ ট্রাভেল এজেন্সী (নিবন্ধন ও নিয়ন্ত্রন) (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫- এর খসড়া অনুমোদন করেছে। এই অধ্যাদেশ এর বিভিন্ন ধারা বাংলাদেশের ট্রাভেল ব্যবসাকে স্থবির করে দিতে পারে একই সাথে লাখো কর্মসংস্থান ঝুঁকিতে ফেলতে পারে। আমরা বিশ্বাস করি, সরকারের উদ্দেশ্য স্বচ্ছতা, সুশাসন ও অভিবাসী কর্মীদে সুরক্ষা নিশ্চিত করা- যা আমরা আন্তরিকভাবে সমর্থন করি। কিন্তু প্রস্তাবিত অধ্যাদেশ এর বিভিন্ন ধারা বাস্তবতা বিবর্জিত, অতিরিক্ত কঠোর এবং ব্যবসাবান্ধব নয়। এগুলো প্রয়োগ হলে বাংলাদেশ এর ট্রাভেল খাত, ট্যুরিজম সেক্টর ও অভিবাসন নির্ভর অর্থনীতি গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। লাখো লাখো মানুষ বেকার হবে।