বড়লেখা প্রতিনিধি:: বিএনপির ঘোষিত রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফা ও প্রথম ১৮০ দিনের কর্মপরিকল্পনা জনগণের মাঝে তুলে ধরতে মৌলভীবাজার-১ (বড়লেখা ও জুড়ী) আসনে ধানের শীষের মনোনয়ন প্রত্যাশী, কাতার বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সাবেক উপদেষ্টা শরিফুল হক সাজু শুক্রবার সন্ধ্যায় বড়লেখা উপজেলার সুজানগর ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ড ও রাত ৮ ঘটিকায় ৪ নং ওয়ার্ডে পরপর দুটি উঠান বৈঠকে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন।

এলাকার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ, শিক্ষক, চাকরিজীবী, তরুণ ও প্রবীণদের অংশগ্রহণে দুই বৈঠকই জনসভায় পরিণত হয় ।

ভোলারকান্দি উঠান বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শরিফুল হক সাজু বলেন, আমি ভোলারকান্দি গ্রামের প্রতিটি মানুষের কষ্ট খুব কাছ থেকে দেখেছি। এই গ্রামের রাস্তা দিয়ে চলাচল করা এখন দুঃস্বপ্নের মতো হয়ে গেছে। স্কুলে যাওয়া বাচ্চা হোক, অসুস্থ রোগী হোক সবার কষ্ট একই। মানুষ বৃষ্টির দিনে হাঁটতে পারে না, মোটরসাইকেল চলে না, গাড়ি ঢুকতে পারে না। এই কষ্ট আমার নিজের পরিবারের কষ্টের মতো লাগে।

আমি আপনাদের একটি কথা আজ এখানেই বলে রাখছি যদি আল্লাহ তায়ালা চান, যদি দল আমাকে মনোনয়ন দেয় এবং যদি বিএনপি সরকার গঠন করে, তাহলে আমার প্রথম কাজ হবে ভোলারকান্দির এই রাস্তাটি সংস্কার করা। এই রাস্তা শুধু ইট-বালুর রাস্তা না এটা আপনাদের জীবনের রাস্তাও। এই রাস্তা ভালো হলে বাজারে যেতে সুবিধা হবে, বাচ্চারা স্কুলে যেতে পারবে, অসুস্থ রোগীরা হাসপাতালে যেতে পারবে, কৃষকরা ফসল নিয়ে বাজারে যেতে পারবে। উন্নয়ন মানে শুধু বিল্ডিং নয়, মানুষের জীবনের সুবিধা তৈরি করা।

তিনি গ্রামবাসীর উদ্যেশ্যে বলেন, আমি এমপি হই বা না হই, আমি জনগণের পাশে থাকবো ইনশাআল্লাহ। রাজনীতি আমার কাছে ক্ষমতা নয়, এটা সেবার মাধ্যম। আমি কথা দিলাম প্রতিটি ঘর থেকে বাচ্চাকে যদি স্কুলে পাঠান, প্রয়োজনে আমি নিজের বাবার টাকায় আরেকটি প্রাইমারি স্কুল করে দিবো কারণ শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড।

তিনি আরও বলেন, প্রতি বছর বন্যা এলেই মানুষকে কষ্ট করে আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে হয়। অনেকের ঘরবাড়ি এবং গবাদিপশুর ক্ষতি হয় আমি তাদের সেই কান্না শুনেছি, সেই ব্যথা দেখেছি। আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি এমন ব্যবস্থা করবো যাতে ভবিষ্যতে বন্যা হলেও মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে না হয়। এবং ব্যবস্থা করে দিবো যেখানে মানুষ নিজের ঘরেই নিরাপদে থাকতে পারবে। আমরা এমন বাংলাদেশ গড়তে চাই যেখানে মানুষ নিরাপদ, সম্মানিত ও সুখীভাবে বাঁচতে পারবে। আমি রাজনীতি করি মানুষের জন্য, ক্ষমতার জন্য নয়। আমি চাই, বাচ্চারা স্কুলে যাক, কৃষকের হাসি ফুটুক, মা-বোনেরা নিশ্চিন্তে রাস্তায় চলুক। আজ যারা ভোলারকান্দিতে আছেন, তারা আমার পরিবারের মতো। আপনাদের দুঃখ-সুখে পাশে থাকবো ইনশাআল্লাহ। আপনারা শুধু আমার জন্য নয়, নিজের গ্রামের উন্নয়নের জন্য ঐক্যবদ্ধ থাকবেন এটাই আমার অনুরোধ।

তরুণদের উদ্দেশ্যে সাজু বলেন, পরিবর্তনের শক্তি আপনারাই। তারেক রহমান তরুণদের হাতেই নতুন বাংলাদেশের দায়িত্ব দিতে চান। তাই আসুন, আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে ধানের শীষকে বিজয়ী করে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনি।

উঠান বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন ৬ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মনির উদ্দিন, এবং ৪ নং ওয়ার্ডে উঠান বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রবীণ মুরব্বী হাজী মশাই আলী পরিচালনা করেন সুজানগর ইউনিয়ন বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক সম্পাদক খালেদ আহমদ।

উঠান বৈঠকে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন বড়লেখা উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি নছিব আলী, জুড়ী উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মামুনুর রশীদ, সাংগঠনিক সম্পাদক রুমেল উদ্দিন, ফুলতলা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জামাল উদ্দিন সেলিম, সুজানগর ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাদের আহমদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন, ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক মকবুল হোসেন সেবুল, এবং উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব এম. আরিফুল ইসলাম।

এছাড়াও সুজানগর ইউনিয়ন সহ বড়লেখা ও জুড়ী উপজেলার বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবকদল, শ্রমিকদলসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।