ঢাকা ১০:০৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৫, ৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গোয়াইনঘাটের টেকনাগুল রাস্তার বেহাল দশা : ভোগান্তিতে স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীসহ গ্রামবাসী 

  • Channel Jainta News 24
  • প্রকাশিত: ০১:০৯:১৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ১০ পড়া হয়েছে
১৪

গোয়াইনঘাট (সিলেট) প্রতিনিধি:

সামান্য বৃষ্টিতেই চলাচলের অনুপযোগী হয়ে যায় সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার ১নং রুস্তমপুর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের পুরান টেকনাগুল গ্রামের মাঝের রাস্তা ও পুরান রাস্তা।

দু’টি রাস্তা মিলে প্রায় ২ কি:মি রাস্তা হবে। যেখানে যুগযুগ ধরে ১২শ’র অধিক মানুষ এই গ্রামীন রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করছে। গ্রামের ভেতরে প্রবেশ করতে পারে না জরুরি সেবার কোনো গাড়ি। এমনকি গোরস্থান বা শ্মশানে যেতেও চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় এলাকাবাসীর। কাঁদা মাড়িয়েই স্কুল-কলেজে যেতে হয় শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের।

 

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, রাস্তাটি মাটি ও বৃষ্টির পানির সংমিশ্রণে কাদার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। এলাকাবাসী জানান, গ্রামবাসী সবাই মিলে গোয়াইনঘাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও গোয়াইনঘাট উপজেলা প্রকৌশলীর কাছে রাস্তাটি সংস্কারের জন্য বেশ কয়েকবার দাবি জানিয়েছেন। কিন্তু কেউ কোনো কাজ করেননি। তাই ভোগান্তি নিয়েই কয়েক যুগ ধরেই এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে, স্কুল, কলেজ, মসজিদ, মাদ্রাসার কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রী সহ গ্রামের ১২শ’র অধিক বাসিন্দারা।

 

গোয়াইনঘাট উপজেলা জিয়া পরিষদের সহ সভাপতি নাসির উদ্দীন বলেন, দীর্ঘ ৫-৬ বছর আগে গ্রামবাসীর নিজস্ব অর্থায়নে ও সাহাব উদ্দিন শিহাব চেয়ারম্যানের সহযোগীতায় টেকনাগুল পুরান রাস্তা ও মাঝের রাস্তায় মাঠি কাজ করানো হয়। এরপর থেকে আর রাস্তার সংস্কার কাজ হয় নাই। এতে কোন রকম কাঁদা মাড়িয়ে স্কুল, কলেজ, মসজিদ, মাদ্রাসা সহ গ্রামবাসী খুব কস্ট করে যাতায়াত করছে। এসময় তিনি প্রশাসন সহ রুস্তমপুর ইউনিয়নের সচেতন মহল ও শাহাব উদ্দিন সিহাব চেয়ারম্যানের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন গ্রামবাসীর দুর্ভোগ লাগবে অতি দ্রুত এই টেকনাগুল পুরান রাস্তা ও মাঝের রাস্তার সংস্কারের যেন ব্যাবস্থা করা হয়।

 

এদিকে ২০২২ সালের স্মরণ কালের ভয়াবহ বন্যায় রাস্তার মাঠি সরে গিয়ে বিভিন্ন জায়গায় বড় বড় গর্ত ও ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়। এতে করে যানচলাচলতো দূরে কথা পায়ে হেঁটে চলার অনপোযোগী হয়ে পড়ে। ফলে সামান্য বৃষ্টিতে কিছু কিছু জায়গায় হাঁটু পর্যন্ত কাদা হয়ে যায়। এছাড়াও পাশের মাঠের সব ফসল এই রাস্তা দিয়ে বাড়ি নিতে হয়। এই রাস্তা দিয়েই কৃষি পণ্য বাজারজাত করা হয়। পাশাপাশি টেকনাগুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থীদের খুব কস্টে করে কাদা মাড়িয়ে যেতে হয় স্কুলে।

 

গ্রামের সচেতন সমাজ ও স্কুলের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা বলেন, প্রতিদিন এ রাস্তা দিয়ে শতাধিক শিক্ষার্থী বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাতায়াত করে। তাদের চলতে খুবই সমস্যা হয়। জরুরি সেবার কোনো গাড়ি বা যেকোনো গাড়ি গ্রামে প্রবেশ করতে পারে না। অসুস্থ কোনো ব্যক্তিকে দ্রুত হাসপাতাল নিয়ে যাওয়ার কোনো ব্যবস্থা নেই। অতি প্রাচীন রাস্তাটি সংস্কার এখন সময়ের দাবি।

 

টেকনাগুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দু’জন শিক্ষিকা এ প্রতিবেদকে বলেন, একটি জনদুর্ভোগ এলাকায় টেকনাগুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় হওয়ায় আমরা ও আমাদের স্কুলের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা খুব কষ্টে স্কুলে আসা যাওয়া করি। সামান্য বৃষ্টি হলেই ছাত্র ছাত্রীরা রাস্তায় প্রচুর পরিমান কাঁদা থাকার জন্য স্কুলে আসতে পারে না। ফলে ছাত্র ছাত্রীদের লেখাপড়ায় বিঘ্নতা ঘটছে। এমনকি কোন শিক্ষক ও এই স্কুলে পাঠদান করাতে আসতে চায় না।

 

রুস্তমপুর ইউনিয়ন বিএনপির সহ সাধারণ সম্পাদ আব্দুল মালিক ও বৃহত্তর রুস্তমপুর ইউনিয়নের কৃষকদলের সাধারণ সম্পাদক ফরিদ উদ্দিন (ফরিজুল) বলেন গ্রামবাসীর পাশাপাশি রুস্তমপুর ইউনিয়নের মাটিকাপা ও জামকান্দি গ্রামসহ বেশকটি গ্রামের মানুষের চলাচলের একমাত্র রাস্তাটি সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন।

 

উক্ত বিষয়ে রুস্তমপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাহাব উদ্দিন শিহাব বলেন টেকনাগুল মাঝের রাস্তাটি অতি গুরুত্বপূর্ণ, যেহেতু এই রাস্তা টেকনাগুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষকদের চলাচল ও গ্রামবাসীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি রাস্তা তাই আমরা গত কয়েক বছর আগে দুটি রাস্তা মিলে ১৩-১৫ লক্ষ টাকা খরচ করে গ্রামবাসীর সহযোগিতায় চলাচলের ব্যাবস্থা করে দেই। বৃষ্টি হলেই রাস্তায় কাঁদা হয়ে যায় তাই আগামীতে রাস্তাটি সংস্কার করে দেওয়ার পরিকল্পনা আমাদের আছে। যেহেতু এখন কোন বাজেট নেই তাই বাজেট যখন আসবে আমরা রাস্তাটি সংস্কারের ব্যাবস্থা করব।

 

এ বিষয়ে গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার রতন কুমার অধিকারীর কাছে জানতে চাইলে তিনি অসুস্থ হয়ে মেডিকেলে ভর্তি থাকায় কোন বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

ট্যাগ:

কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনি কমেন্ট করতে ইচ্ছুক?

সাংবাদিকদের তথ্য
ডেস্ক নিউজ

ডেস্ক নিউজ

জনপ্রিয় সংবাদ

হবিগঞ্জে হত্যা, র‍্যাবের অভিযানে চট্টগ্রাম থেকে আসামি গ্রেফতার

Follow for More!

গোয়াইনঘাটের টেকনাগুল রাস্তার বেহাল দশা : ভোগান্তিতে স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীসহ গ্রামবাসী 

প্রকাশিত: ০১:০৯:১৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
১৪

গোয়াইনঘাট (সিলেট) প্রতিনিধি:

সামান্য বৃষ্টিতেই চলাচলের অনুপযোগী হয়ে যায় সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার ১নং রুস্তমপুর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের পুরান টেকনাগুল গ্রামের মাঝের রাস্তা ও পুরান রাস্তা।

দু’টি রাস্তা মিলে প্রায় ২ কি:মি রাস্তা হবে। যেখানে যুগযুগ ধরে ১২শ’র অধিক মানুষ এই গ্রামীন রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করছে। গ্রামের ভেতরে প্রবেশ করতে পারে না জরুরি সেবার কোনো গাড়ি। এমনকি গোরস্থান বা শ্মশানে যেতেও চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় এলাকাবাসীর। কাঁদা মাড়িয়েই স্কুল-কলেজে যেতে হয় শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের।

 

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, রাস্তাটি মাটি ও বৃষ্টির পানির সংমিশ্রণে কাদার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। এলাকাবাসী জানান, গ্রামবাসী সবাই মিলে গোয়াইনঘাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও গোয়াইনঘাট উপজেলা প্রকৌশলীর কাছে রাস্তাটি সংস্কারের জন্য বেশ কয়েকবার দাবি জানিয়েছেন। কিন্তু কেউ কোনো কাজ করেননি। তাই ভোগান্তি নিয়েই কয়েক যুগ ধরেই এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে, স্কুল, কলেজ, মসজিদ, মাদ্রাসার কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রী সহ গ্রামের ১২শ’র অধিক বাসিন্দারা।

 

গোয়াইনঘাট উপজেলা জিয়া পরিষদের সহ সভাপতি নাসির উদ্দীন বলেন, দীর্ঘ ৫-৬ বছর আগে গ্রামবাসীর নিজস্ব অর্থায়নে ও সাহাব উদ্দিন শিহাব চেয়ারম্যানের সহযোগীতায় টেকনাগুল পুরান রাস্তা ও মাঝের রাস্তায় মাঠি কাজ করানো হয়। এরপর থেকে আর রাস্তার সংস্কার কাজ হয় নাই। এতে কোন রকম কাঁদা মাড়িয়ে স্কুল, কলেজ, মসজিদ, মাদ্রাসা সহ গ্রামবাসী খুব কস্ট করে যাতায়াত করছে। এসময় তিনি প্রশাসন সহ রুস্তমপুর ইউনিয়নের সচেতন মহল ও শাহাব উদ্দিন সিহাব চেয়ারম্যানের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন গ্রামবাসীর দুর্ভোগ লাগবে অতি দ্রুত এই টেকনাগুল পুরান রাস্তা ও মাঝের রাস্তার সংস্কারের যেন ব্যাবস্থা করা হয়।

 

এদিকে ২০২২ সালের স্মরণ কালের ভয়াবহ বন্যায় রাস্তার মাঠি সরে গিয়ে বিভিন্ন জায়গায় বড় বড় গর্ত ও ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়। এতে করে যানচলাচলতো দূরে কথা পায়ে হেঁটে চলার অনপোযোগী হয়ে পড়ে। ফলে সামান্য বৃষ্টিতে কিছু কিছু জায়গায় হাঁটু পর্যন্ত কাদা হয়ে যায়। এছাড়াও পাশের মাঠের সব ফসল এই রাস্তা দিয়ে বাড়ি নিতে হয়। এই রাস্তা দিয়েই কৃষি পণ্য বাজারজাত করা হয়। পাশাপাশি টেকনাগুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থীদের খুব কস্টে করে কাদা মাড়িয়ে যেতে হয় স্কুলে।

 

গ্রামের সচেতন সমাজ ও স্কুলের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা বলেন, প্রতিদিন এ রাস্তা দিয়ে শতাধিক শিক্ষার্থী বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাতায়াত করে। তাদের চলতে খুবই সমস্যা হয়। জরুরি সেবার কোনো গাড়ি বা যেকোনো গাড়ি গ্রামে প্রবেশ করতে পারে না। অসুস্থ কোনো ব্যক্তিকে দ্রুত হাসপাতাল নিয়ে যাওয়ার কোনো ব্যবস্থা নেই। অতি প্রাচীন রাস্তাটি সংস্কার এখন সময়ের দাবি।

 

টেকনাগুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দু’জন শিক্ষিকা এ প্রতিবেদকে বলেন, একটি জনদুর্ভোগ এলাকায় টেকনাগুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় হওয়ায় আমরা ও আমাদের স্কুলের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা খুব কষ্টে স্কুলে আসা যাওয়া করি। সামান্য বৃষ্টি হলেই ছাত্র ছাত্রীরা রাস্তায় প্রচুর পরিমান কাঁদা থাকার জন্য স্কুলে আসতে পারে না। ফলে ছাত্র ছাত্রীদের লেখাপড়ায় বিঘ্নতা ঘটছে। এমনকি কোন শিক্ষক ও এই স্কুলে পাঠদান করাতে আসতে চায় না।

 

রুস্তমপুর ইউনিয়ন বিএনপির সহ সাধারণ সম্পাদ আব্দুল মালিক ও বৃহত্তর রুস্তমপুর ইউনিয়নের কৃষকদলের সাধারণ সম্পাদক ফরিদ উদ্দিন (ফরিজুল) বলেন গ্রামবাসীর পাশাপাশি রুস্তমপুর ইউনিয়নের মাটিকাপা ও জামকান্দি গ্রামসহ বেশকটি গ্রামের মানুষের চলাচলের একমাত্র রাস্তাটি সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন।

 

উক্ত বিষয়ে রুস্তমপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাহাব উদ্দিন শিহাব বলেন টেকনাগুল মাঝের রাস্তাটি অতি গুরুত্বপূর্ণ, যেহেতু এই রাস্তা টেকনাগুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষকদের চলাচল ও গ্রামবাসীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি রাস্তা তাই আমরা গত কয়েক বছর আগে দুটি রাস্তা মিলে ১৩-১৫ লক্ষ টাকা খরচ করে গ্রামবাসীর সহযোগিতায় চলাচলের ব্যাবস্থা করে দেই। বৃষ্টি হলেই রাস্তায় কাঁদা হয়ে যায় তাই আগামীতে রাস্তাটি সংস্কার করে দেওয়ার পরিকল্পনা আমাদের আছে। যেহেতু এখন কোন বাজেট নেই তাই বাজেট যখন আসবে আমরা রাস্তাটি সংস্কারের ব্যাবস্থা করব।

 

এ বিষয়ে গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার রতন কুমার অধিকারীর কাছে জানতে চাইলে তিনি অসুস্থ হয়ে মেডিকেলে ভর্তি থাকায় কোন বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।