ঢাকা ০৮:০৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৫, ৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সীমান্তের পাথররাজ্যে ধ্বংসের ছাপ, সাদা পাথর নিঃশেষের শঙ্কা

  • Channel Jainta News 24
  • প্রকাশিত: ০৬:৩৭:১৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ আগস্ট ২০২৫
  • ১২ পড়া হয়েছে
১৬

কোম্পানীগঞ্জ সিলেট::

সিলেটের সীমান্তবর্তী ভোলাগঞ্জের সাদা পাথর একসময় ছিল পাহাড়ি নদীর বুকে ঝলমলে সৌন্দর্যের প্রতীক, দেশি-বিদেশি পর্যটকদের প্রিয় গন্তব্য। এখন সেখানে দাঁড়ালে চোখে পড়ে ধূসর বালুচর, খোঁড়াখুঁড়িতে তৈরি গর্ত আর ফাঁকা নদীতল। ২০২৪ সালের আগস্টের পর থেকে চলা লাগাতার অবৈধ পাথর উত্তোলনে ধ্বংস হয়ে গেছে প্রাকৃতিক এই স্থান, যা নিয়ে উদ্বিগ্ন স্থানীয় বাসিন্দা ও পরিবেশকর্মীরা।

 

সরেজমিনে দেখা গেছে, ধলাই নদীর উৎসমুখ থেকে শত শত নৌকায় পাথর তোলা হচ্ছে প্রকাশ্য দিবালোকে। বড় পাথর যেমন নেই, তেমনি ছোট-বড় সব ধরণের পাথরের স্তূপও উধাও। নদীর তলদেশে জেগে উঠেছে বালুচর, সৃষ্টি হয়েছে গভীর গর্ত। স্থানীয়রা জানান, এভাবে চলতে থাকলে দেশের অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র সাদা পাথর বিলীন হয়ে যাবে, কমে যাবে সরকারি রাজস্ব আয়ও।

 

পরিবেশ আন্দোলনের কর্মীরা বলছেন, গত এক বছরে প্রায় দেড় কোটি ঘনফুট পাথর এখান থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে, যার বাজারমূল্য দুই শত কোটি টাকার বেশি। তাদের অভিযোগ, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা ও দুর্বল নজরদারির কারণেই অবৈধ উত্তোলন থামানো যায়নি। মাঝে মাঝে অভিযান হলেও তা স্থায়ী প্রভাব ফেলতে পারেনি।

 

পরিবেশ রক্ষা আন্দোলনের প্রতিনিধিরা মনে করেন, সিলেট অঞ্চলের প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষায় দীর্ঘদিন ধরে কাঠামোগত পরিকল্পনা ও কার্যকর পদক্ষেপের অভাব রয়েছে। তারা প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, অবৈধ পাথর উত্তোলন বন্ধে কঠোর অভিযান ও আইন প্রয়োগ নিশ্চিত করতে।

 

কোম্পানীগঞ্জ থানার কর্মকর্তারা জানান, সাদা পাথরকেন্দ্রিক ঘটনায় ইতোমধ্যে একাধিক মামলা হয়েছে এবং বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। তবে স্থায়ী সমাধানের জন্য বড় ধরনের সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন।

 

পরিবেশ অধিদপ্তরের স্থানীয় কার্যালয় জানায়, সাদা পাথর এলাকা ইকোলজিক্যালি সংরক্ষিত না হওয়ায় তাদের এককভাবে অভিযান চালানোর এখতিয়ার নেই। জেলা প্রশাসনের নেতৃত্বে অভিযান হলে তারা সহযোগিতা করেন।

 

স্থানীয় সচেতন মহল মনে করছে, যেকোনো রাজনৈতিক বা সামাজিক পরিচয় নির্বিশেষে অবৈধ উত্তোলনের সঙ্গে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। একইসঙ্গে পর্যটন ও প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষায় দীর্ঘমেয়াদি নীতি গ্রহণ জরুরি।

 

জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সাদা পাথরের অবৈধ উত্তোলন বন্ধে নিয়মিত অভিযান চলছে এবং তা অব্যাহত থাকবে।

ট্যাগ:

কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনি কমেন্ট করতে ইচ্ছুক?

সাংবাদিকদের তথ্য
ডেস্ক নিউজ

ডেস্ক নিউজ

জনপ্রিয় সংবাদ

পরিবেশের দোহাই দেওয়া আর চলবে না আমাদের হিস্যা বুঝিয়ে দিতে হবে’ জৈন্তাপুরে, :আরিফুল হক চৌধুরী

Follow for More!

সীমান্তের পাথররাজ্যে ধ্বংসের ছাপ, সাদা পাথর নিঃশেষের শঙ্কা

প্রকাশিত: ০৬:৩৭:১৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ আগস্ট ২০২৫
১৬

কোম্পানীগঞ্জ সিলেট::

সিলেটের সীমান্তবর্তী ভোলাগঞ্জের সাদা পাথর একসময় ছিল পাহাড়ি নদীর বুকে ঝলমলে সৌন্দর্যের প্রতীক, দেশি-বিদেশি পর্যটকদের প্রিয় গন্তব্য। এখন সেখানে দাঁড়ালে চোখে পড়ে ধূসর বালুচর, খোঁড়াখুঁড়িতে তৈরি গর্ত আর ফাঁকা নদীতল। ২০২৪ সালের আগস্টের পর থেকে চলা লাগাতার অবৈধ পাথর উত্তোলনে ধ্বংস হয়ে গেছে প্রাকৃতিক এই স্থান, যা নিয়ে উদ্বিগ্ন স্থানীয় বাসিন্দা ও পরিবেশকর্মীরা।

 

সরেজমিনে দেখা গেছে, ধলাই নদীর উৎসমুখ থেকে শত শত নৌকায় পাথর তোলা হচ্ছে প্রকাশ্য দিবালোকে। বড় পাথর যেমন নেই, তেমনি ছোট-বড় সব ধরণের পাথরের স্তূপও উধাও। নদীর তলদেশে জেগে উঠেছে বালুচর, সৃষ্টি হয়েছে গভীর গর্ত। স্থানীয়রা জানান, এভাবে চলতে থাকলে দেশের অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র সাদা পাথর বিলীন হয়ে যাবে, কমে যাবে সরকারি রাজস্ব আয়ও।

 

পরিবেশ আন্দোলনের কর্মীরা বলছেন, গত এক বছরে প্রায় দেড় কোটি ঘনফুট পাথর এখান থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে, যার বাজারমূল্য দুই শত কোটি টাকার বেশি। তাদের অভিযোগ, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা ও দুর্বল নজরদারির কারণেই অবৈধ উত্তোলন থামানো যায়নি। মাঝে মাঝে অভিযান হলেও তা স্থায়ী প্রভাব ফেলতে পারেনি।

 

পরিবেশ রক্ষা আন্দোলনের প্রতিনিধিরা মনে করেন, সিলেট অঞ্চলের প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষায় দীর্ঘদিন ধরে কাঠামোগত পরিকল্পনা ও কার্যকর পদক্ষেপের অভাব রয়েছে। তারা প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, অবৈধ পাথর উত্তোলন বন্ধে কঠোর অভিযান ও আইন প্রয়োগ নিশ্চিত করতে।

 

কোম্পানীগঞ্জ থানার কর্মকর্তারা জানান, সাদা পাথরকেন্দ্রিক ঘটনায় ইতোমধ্যে একাধিক মামলা হয়েছে এবং বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। তবে স্থায়ী সমাধানের জন্য বড় ধরনের সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন।

 

পরিবেশ অধিদপ্তরের স্থানীয় কার্যালয় জানায়, সাদা পাথর এলাকা ইকোলজিক্যালি সংরক্ষিত না হওয়ায় তাদের এককভাবে অভিযান চালানোর এখতিয়ার নেই। জেলা প্রশাসনের নেতৃত্বে অভিযান হলে তারা সহযোগিতা করেন।

 

স্থানীয় সচেতন মহল মনে করছে, যেকোনো রাজনৈতিক বা সামাজিক পরিচয় নির্বিশেষে অবৈধ উত্তোলনের সঙ্গে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। একইসঙ্গে পর্যটন ও প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষায় দীর্ঘমেয়াদি নীতি গ্রহণ জরুরি।

 

জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সাদা পাথরের অবৈধ উত্তোলন বন্ধে নিয়মিত অভিযান চলছে এবং তা অব্যাহত থাকবে।