ঢাকা ১০:৫৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৫, ৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সিলেটে মায়ের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে মেয়ে বললেন আমি স্বেচ্ছায় বিয়ে করেছি

  • Channel Jainta News 24
  • প্রকাশিত: ০৫:৫৫:৩৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২ আগস্ট ২০২৫
  • ১৫ পড়া হয়েছে
১৭

অনলাইন ডেস্ক :: স্বেচ্ছায় বিয়ে করেন কলেজ পড়ুয়া তরুণী। সেই বিয়ে মেনে নিতে পারেনি তার পরিবার। এতে পরিবারের লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে তরুণীর স্বামী ও স্বামীর পরিবার, আত্মীয়-স্বজনের নামে অপহরণ মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ পাওয়া গেছে।

 

শুধু অপহরণ মামলা নয়, উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে কাল্পনিক বিভিন্ন ঘটনা সাজিয়ে উপুর্যপরি মামলা দিয়ে তার স্বামীসহ স্বামীর পরিবারকে ঘায়েল করার অপচেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন শিওরখাল কদমতলা গ্রামের লিটন আহমদের স্ত্রী খাদিজা বেগম হাবিবা (২১)।

হাবিবা শিওরখাল বড়জমাত গ্রামের আব্দুল হক ও হেপি বেগম দম্পত্তির মেয়ে।

 

২আগস্ট সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে হাবিবা আরো বলেন, ২৮জুলাই আমার মা হেপি বেগম বালাগঞ্জ উপজেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে করা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার আমি সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে আমার বক্তব্য তুলে ধরছি।

 

আমি প্রাপ্ত বয়স্ক একজন মেয়ে। দেশের প্রচলিত আইনে আমার ভবিষ্যৎ সম্পর্কে সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও মতামত প্রদানের এখতিয়ার রয়েছে। আমি অপহৃত হয়েছি তা সঠিক নয়।

 

২৮ এপ্রিল আমার পার্শ্ববর্তী শিওরখাল-কদমতলা গ্রামের আব্দুল খালিকের ছেলে লিটন আহমদের সাথে আমি স্বেচ্ছায় মুসলিম পারিবারিক আইনে ইসলামি শরিয়া মোতাবেক বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হই। ২লক্ষ টাকা দেনমোহরে আমাদের বিয়ের কাবিন করা হয়েছে। আমাকে কেউ অপহরণ করেনি।

 

বিয়ের প্রায় ৩মাস অতিবাহিত হয়ে গেছে, আমরা বাসা ভাড়া করে লুকিয়ে থেকেছি। শশুর বাড়িতেও যেতে পারিনি। আমার বাবাসহ তাদের পক্ষের লোকজন আমাদের বিয়ে মেনে নিচ্ছেন না।

 

 

আমার পিতা-মাতা প্রতিশোধ পরায়ণ হয়ে তাদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে আমাকে অপহরণের অভিযোগ সাজিয়ে আমার স্বামী, স্বামীর পরিবার, গ্রামের সালিশ ও রাজনৈতিক নিরপরাধ ব্যক্তিদের জড়িয়ে বিভিন্ন মিথ্যা মামলায় হয়রানি করা হচ্ছে। এতে আমি ও আমার স্বামী এবং স্বামীর পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।

 

আমার মাতা-পিতার এমন অন্যায়-অনৈতিক কর্মকান্ডে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। হাবিবা বলেন, ৩ জুন সিলেটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে আমার মায়ের দায়ের করা মামলার পরিপ্রেক্ষিতে ২১ জুলাই পিবিআই’র তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের মাধ্যমে ২২জুলাই ট্রাইব্যুনালের বিজ্ঞ বিচারকের সামনে উপস্থিত হয়ে আমি ও আমার স্বামী জবানবন্দি দিয়েছি।

 

জবানবন্দিতে আমি জানিয়েছি, লিটন আহমদের সাথে আমার ৮ বছরের প্রেমের সম্পর্কের বিষয়টি আমার পরিবারকে জানাই। তার সাথে বিয়ে দিতে রাজি হননি।

 

সম্পর্ক ছিন্ন করার জন্য আমাকে চাপ দেন, নির্যাতন করেন। জোর করে আমাকে অন্যত্র বিয়ে দিতে চান। আমার বিয়ের পর থেকে একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে আমার স্বামী ও স্বামীর পরিবারকে হয়রানি করা হচ্ছে।

 

উদ্দেশ্যপ্রণেদিত হয়ে ৩জুনের দায়ের করা অপহরণ মামলায় আমার স্বামীসহ আমার শশুরবাড়ি ও গ্রামের পঞ্চায়েত কমিটির সাবেক সেক্রেটারী বালাগঞ্জ উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তোফায়েল আহমেদ সুহেলসহ নির্দোষ-নিরপরাধ লোকজনকে জড়িয়ে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ ও সামাজিক মান-মর্যাদা বিনষ্ট করা হচ্ছে।

 

এই মামলায় আমার স্বামী লিটন আহমদসহ তার ভাই কয়েস আহমদ, সেজন আহমদ, সাজন আহমদ, বোন রিতা বেগম, হেলিমা বেগম, পশ্চিম হায়দরপুর গ্রামের তারিক উল্যার ছেলে কামাল আহমদ, শিওরখাল বড়জমাত গ্রামের হরুপ মিয়ার ছেলে এমরান আহমদকে অন্যায়ভাবে জড়িয়েছেন।

 

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ২৫মার্চ আমার স্বামীর ভাই কয়েস আহমদ আমার মায়ের কাছ থেকে কোনো টাকা ধার নেননি। টাকা ধার নেওয়ার আলাপ-আলোচনায় ও টাকা উদ্ধারে বড়জমাত গ্রামের পাঞ্চায়েত কমিটির সাবেক সেক্রেটারী বালাগঞ্জ উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক তোফায়েল আহমদ সুহেল জড়িত হওয়ার কোনো প্রশ্নই আসেনা।

 

ধার দেওয়া টাকা ফেরৎ চাওয়ার জেরে আমার মায়ের পরিবারকে ক্ষতিগ্রস্থ, নির্যাতন ও আমাকে অপহরণ করার অভিযোগ করা হয়েছে আমার স্বামী বিরুদ্ধে। এসব অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও সাজানো গল্প ছাড়া আর কিছুই নয়। মেয়ে হয়েও আজ মায়ের বিরুদ্ধে কথা বলতে হচ্ছে। আমার মা একজন মামলাবাজ নারী। কাল্পনিক ঘটনা সাজিয়ে নির্দোষ মানুষদের নামে মামলা করাই তার নেশা। কয়েক বছর আগে আমাদের ঘর জ্বালিয়ে স্থানীয় প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার চেষ্টা করা হয়েছে।

 

২৭মে বালাগঞ্জ থানায় দেয়া আমার মায়ের লিখিত অভিযোগ তদন্তে পুলিশ কোনো সত্যতা না পাওয়ায় মামলা নেয়নি। মামলা না নিতে তোফায়েল আহমদ সুহেল পুলিশকে চাপ দেওয়ার অভিযোগ অসত্যের প্রলাপ। মূলত আমার বিয়ের পর স্থানীয় একজন সালিশ ব্যক্তি হিসেবে তোফায়েল আহমদ সুহেল এই বিষয়টি মীমাংশার উদ্যোগ নেন। এতে আমার মা ক্ষুব্ধ হন। এই সুযোগে স্থানীয় কুচক্রী মহল সালিশ ব্যক্তি বিএনপি নেতা সোহেলকে রাজনৈতিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করতে তার নামে মামলা দিয়ে নাজেহাল করাসহ নানাভাবে মিথ্যাচার করা হচ্ছে।

 

লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, ১৫ জুন আমার পিতা-মাতার বাড়িতে ভাঙচুর, মালামাল লুটপাট, গোয়ালঘর, খড়েরঘর ও বসতঘরে পেট্রোল ছিটিয়ে আগুন লাগিয়ে ক্ষতি করা ও আগুনে ৩টা ষাঁড় গরু মারা যাওয়ার অভিযোগের কোনো সত্যতা নেই। মূলত ষাঁড়গুলো আগুনে পুড়ে মরেনি। এগুলো অন্যত্র বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে, যার প্রমাণাদি রয়েছে। থানা পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে এসব অভিযোগ মিথ্যা প্রতিয়মান হওয়ায় থানা পুলিশ মামলা নেয়নি।

 

অথচ প্রতিহিংসা পরায়ণ হয়ে মামলা না নিতে পুলিশকে বারন করেছেন বলে বিএনপি নেতা সুহেলকে জড়িয়ে মনগড়া অভিযোগ করা হয়েছে। ১৫ জুনের সাজানো ঘটনায় ১৯জুন আদালতে আমার বাবা আব্দুল হকের দায়ের করা বালাগঞ্জ সিআর ৮৫নং মামলা বিএনপি নেতা তোফায়েল আহমদ সুহেল, সেজন আহমদ, লিটন আহমদ, শিওরখাল গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে সালমান খান, এমরান আহমদ, আমার স্বামী লিটন আহমদ, শিওরখাল কদমতলা গ্রামের আপ্তাব উল্যার ছেলে কামিলসহ আরও ৩-৪ জনকে সম্পূর্ণ উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে জড়ানো হয়েছে।

 

আদালতের নির্দেশে মামলাটি বালাগঞ্জ থানায় রুজু করা হলে বাদী-বিবাদীদের সমন্বয়ে উভয় পক্ষ স্বাক্ষরিত একখানা আপোষনামা সম্পাদন করা হয়। কিন্তু সংবাদ সম্মেলনে আমার মা এই মামলাটি নিয়েও অনেক কাল্পনিক কথা বলেছেন, যা মিথ্যাচার ছাড়া আর কিছু নয়।

 

হাবিবা অভিযোগ করে বলেন, ২৭ মে রাত ৯টায় আমার মা-বাবার বাড়িতে ভাঙচুর, ক্ষতিসাধন, টাকা-স্বর্ণালঙ্কার লুট ও অগ্নিসংযোগের নাটকীয় ঘটনা সাজিয়ে প্রতিশোধ পরায়ণ হয়ে আমার শশুরবাড়ির লোকজনের নামে ৪জুন আদালতে আমার দায়ের করা বালাগঞ্জ সিআর ৩৭নং মামলায় নির্দোষ-নিরিহ লোকজনকে অহেতুক হয়রানি করা হচ্ছে।

 

এছাড়া, আমার বিয়ের পর উডজেলার পশ্চিম গৌরীপুর ইউনিয়নের নলজুড় গ্রামে আমার মামা শশুর শিপন আহমদের বাড়িতে আমি কখনও অবস্থান করিনি।

 

 

কিন্তু, আমার স্বামীসহ স্বামীর আত্মীয়-স্বজনকে হয়রানি এবং সামাজিক মান-মর্যাদা ক্ষুন্ন করার হীন উদ্দেশ্য ৮জুলাই আদালতে আমার মায়ের দায়ের করা বালাগঞ্জ সিআর ৯৬ নং মামলার পরিপ্রেক্ষিতে আমি ও স্বামীর সন্ধানে আমার মামা শশুরের বাড়িতে পুলিশ পাঠিয়ে মামা শশুরের পরিবারকে হয়রানি করা হয়েছে।

 

আমার মা প্রতিশোধ পরায়ণ হয়ে সংবাদ সম্মেলনে আমার শশুরবাড়ির লোকজনসহ গ্রামের সালিশ নিরপরাধ মানুষদের বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট বক্তব্য দেওয়ায় আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

 

মিথ্যা মামলায় আমি ও আমার শশুরবাড়ির লোকজনসহ এলাকার সালিশ ব্যক্তিদের হয়রানি বন্ধে সাংবাদিকগণ ও আইন শংঙ্খলাবাহিনিসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।

ট্যাগ:

কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনি কমেন্ট করতে ইচ্ছুক?

সাংবাদিকদের তথ্য
ডেস্ক নিউজ

ডেস্ক নিউজ

জনপ্রিয় সংবাদ

পরনিন্দা থেকে বিরত থেকে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ বাড়াতে হবে:সিলেটে ধর্ম উপদেষ্টা

Follow for More!

সিলেটে মায়ের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে মেয়ে বললেন আমি স্বেচ্ছায় বিয়ে করেছি

প্রকাশিত: ০৫:৫৫:৩৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২ আগস্ট ২০২৫
১৭

অনলাইন ডেস্ক :: স্বেচ্ছায় বিয়ে করেন কলেজ পড়ুয়া তরুণী। সেই বিয়ে মেনে নিতে পারেনি তার পরিবার। এতে পরিবারের লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে তরুণীর স্বামী ও স্বামীর পরিবার, আত্মীয়-স্বজনের নামে অপহরণ মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ পাওয়া গেছে।

 

শুধু অপহরণ মামলা নয়, উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে কাল্পনিক বিভিন্ন ঘটনা সাজিয়ে উপুর্যপরি মামলা দিয়ে তার স্বামীসহ স্বামীর পরিবারকে ঘায়েল করার অপচেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন শিওরখাল কদমতলা গ্রামের লিটন আহমদের স্ত্রী খাদিজা বেগম হাবিবা (২১)।

হাবিবা শিওরখাল বড়জমাত গ্রামের আব্দুল হক ও হেপি বেগম দম্পত্তির মেয়ে।

 

২আগস্ট সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে হাবিবা আরো বলেন, ২৮জুলাই আমার মা হেপি বেগম বালাগঞ্জ উপজেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে করা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার আমি সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে আমার বক্তব্য তুলে ধরছি।

 

আমি প্রাপ্ত বয়স্ক একজন মেয়ে। দেশের প্রচলিত আইনে আমার ভবিষ্যৎ সম্পর্কে সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও মতামত প্রদানের এখতিয়ার রয়েছে। আমি অপহৃত হয়েছি তা সঠিক নয়।

 

২৮ এপ্রিল আমার পার্শ্ববর্তী শিওরখাল-কদমতলা গ্রামের আব্দুল খালিকের ছেলে লিটন আহমদের সাথে আমি স্বেচ্ছায় মুসলিম পারিবারিক আইনে ইসলামি শরিয়া মোতাবেক বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হই। ২লক্ষ টাকা দেনমোহরে আমাদের বিয়ের কাবিন করা হয়েছে। আমাকে কেউ অপহরণ করেনি।

 

বিয়ের প্রায় ৩মাস অতিবাহিত হয়ে গেছে, আমরা বাসা ভাড়া করে লুকিয়ে থেকেছি। শশুর বাড়িতেও যেতে পারিনি। আমার বাবাসহ তাদের পক্ষের লোকজন আমাদের বিয়ে মেনে নিচ্ছেন না।

 

 

আমার পিতা-মাতা প্রতিশোধ পরায়ণ হয়ে তাদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে আমাকে অপহরণের অভিযোগ সাজিয়ে আমার স্বামী, স্বামীর পরিবার, গ্রামের সালিশ ও রাজনৈতিক নিরপরাধ ব্যক্তিদের জড়িয়ে বিভিন্ন মিথ্যা মামলায় হয়রানি করা হচ্ছে। এতে আমি ও আমার স্বামী এবং স্বামীর পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।

 

আমার মাতা-পিতার এমন অন্যায়-অনৈতিক কর্মকান্ডে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। হাবিবা বলেন, ৩ জুন সিলেটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে আমার মায়ের দায়ের করা মামলার পরিপ্রেক্ষিতে ২১ জুলাই পিবিআই’র তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের মাধ্যমে ২২জুলাই ট্রাইব্যুনালের বিজ্ঞ বিচারকের সামনে উপস্থিত হয়ে আমি ও আমার স্বামী জবানবন্দি দিয়েছি।

 

জবানবন্দিতে আমি জানিয়েছি, লিটন আহমদের সাথে আমার ৮ বছরের প্রেমের সম্পর্কের বিষয়টি আমার পরিবারকে জানাই। তার সাথে বিয়ে দিতে রাজি হননি।

 

সম্পর্ক ছিন্ন করার জন্য আমাকে চাপ দেন, নির্যাতন করেন। জোর করে আমাকে অন্যত্র বিয়ে দিতে চান। আমার বিয়ের পর থেকে একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে আমার স্বামী ও স্বামীর পরিবারকে হয়রানি করা হচ্ছে।

 

উদ্দেশ্যপ্রণেদিত হয়ে ৩জুনের দায়ের করা অপহরণ মামলায় আমার স্বামীসহ আমার শশুরবাড়ি ও গ্রামের পঞ্চায়েত কমিটির সাবেক সেক্রেটারী বালাগঞ্জ উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তোফায়েল আহমেদ সুহেলসহ নির্দোষ-নিরপরাধ লোকজনকে জড়িয়ে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ ও সামাজিক মান-মর্যাদা বিনষ্ট করা হচ্ছে।

 

এই মামলায় আমার স্বামী লিটন আহমদসহ তার ভাই কয়েস আহমদ, সেজন আহমদ, সাজন আহমদ, বোন রিতা বেগম, হেলিমা বেগম, পশ্চিম হায়দরপুর গ্রামের তারিক উল্যার ছেলে কামাল আহমদ, শিওরখাল বড়জমাত গ্রামের হরুপ মিয়ার ছেলে এমরান আহমদকে অন্যায়ভাবে জড়িয়েছেন।

 

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ২৫মার্চ আমার স্বামীর ভাই কয়েস আহমদ আমার মায়ের কাছ থেকে কোনো টাকা ধার নেননি। টাকা ধার নেওয়ার আলাপ-আলোচনায় ও টাকা উদ্ধারে বড়জমাত গ্রামের পাঞ্চায়েত কমিটির সাবেক সেক্রেটারী বালাগঞ্জ উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক তোফায়েল আহমদ সুহেল জড়িত হওয়ার কোনো প্রশ্নই আসেনা।

 

ধার দেওয়া টাকা ফেরৎ চাওয়ার জেরে আমার মায়ের পরিবারকে ক্ষতিগ্রস্থ, নির্যাতন ও আমাকে অপহরণ করার অভিযোগ করা হয়েছে আমার স্বামী বিরুদ্ধে। এসব অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও সাজানো গল্প ছাড়া আর কিছুই নয়। মেয়ে হয়েও আজ মায়ের বিরুদ্ধে কথা বলতে হচ্ছে। আমার মা একজন মামলাবাজ নারী। কাল্পনিক ঘটনা সাজিয়ে নির্দোষ মানুষদের নামে মামলা করাই তার নেশা। কয়েক বছর আগে আমাদের ঘর জ্বালিয়ে স্থানীয় প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার চেষ্টা করা হয়েছে।

 

২৭মে বালাগঞ্জ থানায় দেয়া আমার মায়ের লিখিত অভিযোগ তদন্তে পুলিশ কোনো সত্যতা না পাওয়ায় মামলা নেয়নি। মামলা না নিতে তোফায়েল আহমদ সুহেল পুলিশকে চাপ দেওয়ার অভিযোগ অসত্যের প্রলাপ। মূলত আমার বিয়ের পর স্থানীয় একজন সালিশ ব্যক্তি হিসেবে তোফায়েল আহমদ সুহেল এই বিষয়টি মীমাংশার উদ্যোগ নেন। এতে আমার মা ক্ষুব্ধ হন। এই সুযোগে স্থানীয় কুচক্রী মহল সালিশ ব্যক্তি বিএনপি নেতা সোহেলকে রাজনৈতিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করতে তার নামে মামলা দিয়ে নাজেহাল করাসহ নানাভাবে মিথ্যাচার করা হচ্ছে।

 

লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, ১৫ জুন আমার পিতা-মাতার বাড়িতে ভাঙচুর, মালামাল লুটপাট, গোয়ালঘর, খড়েরঘর ও বসতঘরে পেট্রোল ছিটিয়ে আগুন লাগিয়ে ক্ষতি করা ও আগুনে ৩টা ষাঁড় গরু মারা যাওয়ার অভিযোগের কোনো সত্যতা নেই। মূলত ষাঁড়গুলো আগুনে পুড়ে মরেনি। এগুলো অন্যত্র বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে, যার প্রমাণাদি রয়েছে। থানা পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে এসব অভিযোগ মিথ্যা প্রতিয়মান হওয়ায় থানা পুলিশ মামলা নেয়নি।

 

অথচ প্রতিহিংসা পরায়ণ হয়ে মামলা না নিতে পুলিশকে বারন করেছেন বলে বিএনপি নেতা সুহেলকে জড়িয়ে মনগড়া অভিযোগ করা হয়েছে। ১৫ জুনের সাজানো ঘটনায় ১৯জুন আদালতে আমার বাবা আব্দুল হকের দায়ের করা বালাগঞ্জ সিআর ৮৫নং মামলা বিএনপি নেতা তোফায়েল আহমদ সুহেল, সেজন আহমদ, লিটন আহমদ, শিওরখাল গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে সালমান খান, এমরান আহমদ, আমার স্বামী লিটন আহমদ, শিওরখাল কদমতলা গ্রামের আপ্তাব উল্যার ছেলে কামিলসহ আরও ৩-৪ জনকে সম্পূর্ণ উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে জড়ানো হয়েছে।

 

আদালতের নির্দেশে মামলাটি বালাগঞ্জ থানায় রুজু করা হলে বাদী-বিবাদীদের সমন্বয়ে উভয় পক্ষ স্বাক্ষরিত একখানা আপোষনামা সম্পাদন করা হয়। কিন্তু সংবাদ সম্মেলনে আমার মা এই মামলাটি নিয়েও অনেক কাল্পনিক কথা বলেছেন, যা মিথ্যাচার ছাড়া আর কিছু নয়।

 

হাবিবা অভিযোগ করে বলেন, ২৭ মে রাত ৯টায় আমার মা-বাবার বাড়িতে ভাঙচুর, ক্ষতিসাধন, টাকা-স্বর্ণালঙ্কার লুট ও অগ্নিসংযোগের নাটকীয় ঘটনা সাজিয়ে প্রতিশোধ পরায়ণ হয়ে আমার শশুরবাড়ির লোকজনের নামে ৪জুন আদালতে আমার দায়ের করা বালাগঞ্জ সিআর ৩৭নং মামলায় নির্দোষ-নিরিহ লোকজনকে অহেতুক হয়রানি করা হচ্ছে।

 

এছাড়া, আমার বিয়ের পর উডজেলার পশ্চিম গৌরীপুর ইউনিয়নের নলজুড় গ্রামে আমার মামা শশুর শিপন আহমদের বাড়িতে আমি কখনও অবস্থান করিনি।

 

 

কিন্তু, আমার স্বামীসহ স্বামীর আত্মীয়-স্বজনকে হয়রানি এবং সামাজিক মান-মর্যাদা ক্ষুন্ন করার হীন উদ্দেশ্য ৮জুলাই আদালতে আমার মায়ের দায়ের করা বালাগঞ্জ সিআর ৯৬ নং মামলার পরিপ্রেক্ষিতে আমি ও স্বামীর সন্ধানে আমার মামা শশুরের বাড়িতে পুলিশ পাঠিয়ে মামা শশুরের পরিবারকে হয়রানি করা হয়েছে।

 

আমার মা প্রতিশোধ পরায়ণ হয়ে সংবাদ সম্মেলনে আমার শশুরবাড়ির লোকজনসহ গ্রামের সালিশ নিরপরাধ মানুষদের বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট বক্তব্য দেওয়ায় আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

 

মিথ্যা মামলায় আমি ও আমার শশুরবাড়ির লোকজনসহ এলাকার সালিশ ব্যক্তিদের হয়রানি বন্ধে সাংবাদিকগণ ও আইন শংঙ্খলাবাহিনিসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।