ঢাকা ০৪:২১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জামালগঞ্জের চান্দেরনগর গ্রামবাসীর উপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন

  • Channel Jainta News 24
  • প্রকাশিত: ০৩:৩৪:৩৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫
  • ১১ পড়া হয়েছে
১৫

স্টাফ রিপোর্টার সুনামগঞ্জ::

সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার ভীমখালি ইউনিয়নের কারেন্টের বাজারে রবিবার (২০ জুলাই) দুপুর ১২টায় চান্দেরনগর গ্রামের ভুক্তভোগী পরিবার ও আশপাশের এলাকার মানুষ মানববন্ধনে অংশ নেন। সম্প্রতি একের পর এক সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে এই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।

মানববন্ধনে কুরবান আলী বলেন, “গত দুই মাস ধরে আমরা পরিবার-পরিজন নিয়ে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছি। সন্ত্রাসীরা এতটাই হিংস্র হয়ে উঠেছে যে, গ্রামের মানুষ মুখ খুলতেও ভয় পাচ্ছে। তারা একের পর এক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।”

প্রথম হামলার ঘটনা ঘটে ২৪ মে ২০২৫ তারিখে সন্ধ্যায়, স্থানীয় কারেন্টের বাজারে। কুরবান আলীর ভাতিজা সালেনূর, আকমল হোসেন ও মইনুল ইসলামকে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে একদল দুর্বৃত্ত মারধর করে গুরুতর আহত করে।

দ্বিতীয় হামলা হয় ২৪ জুন বিকেলে। বাজারে যাওয়ার পথে মইনুল হক ও সাদিকুর রহমানকে বিবাদী আবুল খায়ের, ময়না মিয়া ও তোফায়েল গং অতর্কিতভাবে আক্রমণ করে। এতে মোট ৭ জন আহত হন, যাদেরকে পরবর্তীতে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেলে স্থানান্তর করা হয়। এ ঘটনায় খায়রুল হাসান বাদী হয়ে জামালগঞ্জ থানায় ১৯ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।

তৃতীয় হামলার ঘটনা ঘটে ২৮ জুন, যখন স্কুল-মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা বিবাদীদের বাড়ির পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় কটূক্তি ও ইভটিজিংয়ের শিকার হয়। অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছে তোফায়েল, শাহরিয়া, এরশাদ, আলামিন, তোফাজ্জল হোসেন, সফিক ও নূর।

চতুর্থ ও সর্বশেষ হামলা ঘটে ১৮ জুলাই রাতে, বিয়ের বরযাত্রা শেষে ফেরার সময় নদীপথে নৌকায় থাকা কুরবান আলী ও তার আত্মীয়-স্বজনদের উপর সংঘবদ্ধ হামলা চালানো হয়। আতঙ্কিত হয়ে তারা তৎক্ষণাৎ নৌকা ঘাটে ভিড়িয়ে আত্মরক্ষা করেন।

কারেন্টের বাজার কমিটির সভাপতি আফাজ উদ্দিন বলেন, “এই সন্ত্রাসীরা এখন পুরো গ্রামের জন্য হুমকি। দ্রুত প্রশাসনিক ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে পারে।”

ভুক্তভোগী সাদিকুর রহমান বলেন, “আমি এখনো ব্যান্ডেজ মাথায় রেখেই বাঁচার চেষ্টা করছি। এই হামলাকারীরা যদি ধরা না পড়ে, তাহলে আমরা কোনোদিন নিরাপদ হবো না।”

সাবেক ইউপি সদস্য সায়েম বলেন, “বিবাদ মীমাংসার জন্য বহুবার গ্রাম্য সালিশের চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু বিবাদীরা কোনো কিছুই মানতে রাজি নয়। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হস্তক্ষেপ ছাড়া আর কোনো পথ নেই।”

লোকমান আলী বলেন, “স্কুলে যেতে মেয়েরা ভয় পাচ্ছে। ইভটিজিং এখন নিত্যদিনের ঘটনা। প্রশাসন যদি ব্যবস্থা না নেয়, আমরা রাজপথে নামবো।”

ভীমখালি ইউপি চেয়ারম্যান আক্তারুজ্জামান জানান, “আমি একাধিকবার মীমাংসার উদ্যোগ নিয়েছি। কিন্তু আবুল খায়ের, ময়না মিয়া ও তোফায়েল গং সালিশে অংশ নেয়নি। বিষয়টি আমি আইনশৃঙ্খলা কমিটির মিটিংয়ে তুলে ধরেছি এবং প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছি।”

ট্যাগ:

কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনি কমেন্ট করতে ইচ্ছুক?

সাংবাদিকদের তথ্য
ডেস্ক নিউজ

ডেস্ক নিউজ

জনপ্রিয় সংবাদ

জৈন্তাপুরে দাঁড়িপাল্লার সমর্থনে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

Follow for More!

জামালগঞ্জের চান্দেরনগর গ্রামবাসীর উপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন

প্রকাশিত: ০৩:৩৪:৩৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫
১৫

স্টাফ রিপোর্টার সুনামগঞ্জ::

সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার ভীমখালি ইউনিয়নের কারেন্টের বাজারে রবিবার (২০ জুলাই) দুপুর ১২টায় চান্দেরনগর গ্রামের ভুক্তভোগী পরিবার ও আশপাশের এলাকার মানুষ মানববন্ধনে অংশ নেন। সম্প্রতি একের পর এক সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে এই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।

মানববন্ধনে কুরবান আলী বলেন, “গত দুই মাস ধরে আমরা পরিবার-পরিজন নিয়ে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছি। সন্ত্রাসীরা এতটাই হিংস্র হয়ে উঠেছে যে, গ্রামের মানুষ মুখ খুলতেও ভয় পাচ্ছে। তারা একের পর এক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।”

প্রথম হামলার ঘটনা ঘটে ২৪ মে ২০২৫ তারিখে সন্ধ্যায়, স্থানীয় কারেন্টের বাজারে। কুরবান আলীর ভাতিজা সালেনূর, আকমল হোসেন ও মইনুল ইসলামকে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে একদল দুর্বৃত্ত মারধর করে গুরুতর আহত করে।

দ্বিতীয় হামলা হয় ২৪ জুন বিকেলে। বাজারে যাওয়ার পথে মইনুল হক ও সাদিকুর রহমানকে বিবাদী আবুল খায়ের, ময়না মিয়া ও তোফায়েল গং অতর্কিতভাবে আক্রমণ করে। এতে মোট ৭ জন আহত হন, যাদেরকে পরবর্তীতে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেলে স্থানান্তর করা হয়। এ ঘটনায় খায়রুল হাসান বাদী হয়ে জামালগঞ্জ থানায় ১৯ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।

তৃতীয় হামলার ঘটনা ঘটে ২৮ জুন, যখন স্কুল-মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা বিবাদীদের বাড়ির পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় কটূক্তি ও ইভটিজিংয়ের শিকার হয়। অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছে তোফায়েল, শাহরিয়া, এরশাদ, আলামিন, তোফাজ্জল হোসেন, সফিক ও নূর।

চতুর্থ ও সর্বশেষ হামলা ঘটে ১৮ জুলাই রাতে, বিয়ের বরযাত্রা শেষে ফেরার সময় নদীপথে নৌকায় থাকা কুরবান আলী ও তার আত্মীয়-স্বজনদের উপর সংঘবদ্ধ হামলা চালানো হয়। আতঙ্কিত হয়ে তারা তৎক্ষণাৎ নৌকা ঘাটে ভিড়িয়ে আত্মরক্ষা করেন।

কারেন্টের বাজার কমিটির সভাপতি আফাজ উদ্দিন বলেন, “এই সন্ত্রাসীরা এখন পুরো গ্রামের জন্য হুমকি। দ্রুত প্রশাসনিক ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে পারে।”

ভুক্তভোগী সাদিকুর রহমান বলেন, “আমি এখনো ব্যান্ডেজ মাথায় রেখেই বাঁচার চেষ্টা করছি। এই হামলাকারীরা যদি ধরা না পড়ে, তাহলে আমরা কোনোদিন নিরাপদ হবো না।”

সাবেক ইউপি সদস্য সায়েম বলেন, “বিবাদ মীমাংসার জন্য বহুবার গ্রাম্য সালিশের চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু বিবাদীরা কোনো কিছুই মানতে রাজি নয়। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হস্তক্ষেপ ছাড়া আর কোনো পথ নেই।”

লোকমান আলী বলেন, “স্কুলে যেতে মেয়েরা ভয় পাচ্ছে। ইভটিজিং এখন নিত্যদিনের ঘটনা। প্রশাসন যদি ব্যবস্থা না নেয়, আমরা রাজপথে নামবো।”

ভীমখালি ইউপি চেয়ারম্যান আক্তারুজ্জামান জানান, “আমি একাধিকবার মীমাংসার উদ্যোগ নিয়েছি। কিন্তু আবুল খায়ের, ময়না মিয়া ও তোফায়েল গং সালিশে অংশ নেয়নি। বিষয়টি আমি আইনশৃঙ্খলা কমিটির মিটিংয়ে তুলে ধরেছি এবং প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছি।”