
ডেস্ক নিউজ : সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলায় চিকনাগুল বাজারে অবৈধভাবে পশুর হাট বসিয়ে লাখ লাখ টাকা টোল আদায়ের অভিযোগ উঠেছে একটি চক্রের বিরুদ্ধে। চিকনাগুল বাজারের একাংশের সভাপতি জহির উদ্দিনের নামে রশিদ ছাপিয়ে চাঁদা উত্তলন করছে একটি চক্র। অপরদিকে সরকারি ভাবে লিজভুক্ত উপজেলার জৈন্তাপুর, দরবস্ত ও হরিপুর বাজার পশুর হাটের ইজারাদার পক্ষ অবৈধভাবে পশুর হাট বসানো নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে জানিয়েছেন এই পশুর হাটের জন্য আমাদের ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে আশা করছি শীঘ্রই উপজেলা প্রশাস অবৈধ হাটের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিবেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কতিপয় ব্যক্তি নিজেদের স্বার্থ হাসিল করতে চিকনাগুল বাগিচা বাজারে একটি গরুর হাট গড়ে তোলেন চা বাগান এবং সড়ক ও জনপথের জায়গা দখল করে। বাজারটি প্রতিষ্ঠা লাভের পর থেকে স্থানীয় লোকজনসহ হরিপুর, জৈন্তাপুর, দরবস্ত, গরুর বাজার কর্তৃপক্ষ তার বিরোধীতা করে আসছেন। কিন্তু চিকনাগুল বাজার কর্তৃপক্ষ পেশিশক্তি ব্যবহার করে অবৈধ বাজারটির কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসন ওই বাজারটির ব্যপারে পদক্ষেপ নিয়েছে কয়েকবার। কিন্তু বাজারটি বন্ধ করতে পারেনি।
স্থানীয় সূত্র জানা যায়, চিকনাগুল ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এবিএম জাকারিয়া চেয়ারম্যান থাকাকালীন সময়ে ইউনিয়ন পরিষদের ক্ষমতা বলে ইউনিয়নের আয়ের উৎস হিসেবে ১ লক্ষ টাকা মধ্যে ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত হাট বাজার ও ছোট খাটো খাল (ছড়া) থেকে বালু উত্তলনের জন্য ইউনিয়ন কার্কার্লয়ে জনসম্মুখে নিলামের মাধ্যমে এগুলো টেন্ডার পরিচালনা করেছেন যার প্রমান ইউনিয়নের নথিপত্রে রয়েছে। পরবর্তী চেয়ারম্যান আমিনুর রশিদ ক্ষমতায় এসে সরকারি বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে ১ লক্ষাধিক টাকার উপরে চিকনাগুল বাজার পশুর হাট নিলাম কার্যক্রমের মাধ্যমে ইজারাদার হিসেবে ইউনিয়নের কহাইগড় গ্রামের আব্দুল মতিনকে নিয়োগ প্রদান করেন। ইউনিয়ন পরিষদ কর্কৃত চালানপত্রে ১ লক্ষাধীক টাকার হিসেবে থাকলেও বাজার টি টেন্ডার হয় ২৯ লক্ষ টাকায়- পরবর্তীতে বাজার দখল নিয়ে একই এলাকার জহির উদ্দিন গং ও আব্দুল মতিন গংগদের মধ্যে সংঘাত সৃষ্টি হয় স্থানীয় মুরব্বি ও জৈন্তাপুর মডেল থানা পুলিশের মাধ্যমে বিষয়টি মিমাংসা হয়।

পরবর্তী বছরে একই পান্তায় আমিনুর রশিদ চেয়ারম্যান ৩৫ লক্ষ টাকায় বর্তমান লেসি জহির উদ্দিনকে কোনো আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াই বাজারে ইজারাদার হিসেবে নিয়োগ করেন। এই ঘটনায় বাজার দখল নিয়ে দুপক্ষের কামাল উদ্দিন (মেম্বার) সহ বেশ কয়েকজন গুরুত্বর আহত হন। এঘটনায় সাবেক চেয়ারম্যান আমিনুর রশিদ, বর্তমান চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান চৌধুরী সহ দু’পক্ষের বেশ কয়েক জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয় এবং আসামিদের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে সভা সমাবেশ মানববন্ধন করা হয় এছাড়া বিভিন্ন স্থানে ব্যানার পোস্টা লাগিয়ে আসামিদের গ্রেফতার ও ফাসির দাবিও জানানো হয়। এইসব ঘটনা পরবর্তী সদ্য সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান কামাল আহমদ উদ্যোগ নিয়ে বিষয়টি মিমাংসা করে দেন। ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আমিনুর রশিদ ১ লক্ষ ৯ হাজার টাকার টেন্ডার চালান রশিদ উপজেলায় জমা দিলে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা চালান বাতিল করেন এবং চিকনাগুল বাজার সরকারি কোন তালিকা ভুক্ত না হওয়ায় বাজার লিজ বন্ধ ঘোষণার নির্দেশ দেন।
বর্তমান চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান চৌধুরী একই পন্তায় গতবছরে বাংলা বৈশাখ মাসে ২৮ লক্ষ টাকায় বাজার নিলাম দেন। নিলাম পরবর্তী ইউনিয়নের ১৫ মৌজা, জহির উদ্দিন এবং আব্দুল মতিন গং ও স্থানীয় সরকার দলের লোকজনের মধ্যে বিরুদ্ধে সৃষ্টি হয়। এর প্রেক্ষিতে মোটা টাকার বিনিময়ে ১৫ মৌজার মুরব্বিদের মেনেজ করা হয়। পরবর্তীতে একটি পক্ষ কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে জেলা প্রশাসক বরাবর ৩ দিনের জন্য অস্থায়ী হাটের আবেদন করলে জৈন্তাপুর উপজেলা প্রশাসন টেন্ডার দেয়। ঐদিন সকালে চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান চৌধুরী উপজেলায় উপস্থিত হয়ে আবেদনকারী বাদশা মিয়া জুয়েল আহমেদ ডালিম সহ গংদের টেন্ডারের শিডিউল না কেনার অনুরোধ করেন। আলোচনা করে তাদের সাথে ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকায় সমঝোতা করেন। পরবর্তীতে চিকনাগুল ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার ফখরুল ইসলামের নামে শিডিউল কিনে সরকারি নিয়মনুযায়ী চালান জমা করেন। একি পন্তায় গত বৈশাখ মাসের ১ তারিখে চেয়ারম্যান পশুর হাট ২৮ লক্ষ টাকা নিলাম দিয়েছেন বর্তমান লেসি জহির উদ্দিনকে। প্রতিবারে ধারাবাহিকতদয় এইবারও মানিক, বাদশা,কামরান, ডালিম গংগ দের সাথে ৩ লক্ষ টাকা সমঝোতা করেছেন।
গত মে মাসের ২৬ তারিখে সিলেট জেলা প্রশাসক বরাবর অস্থায়ী হাটে জন্য লিখিত আবেদন করবেন শাহেদ আহমেদ ও বদরুল ইসলাম এবং চলতি জুন মাসের ২ তারিখে লিখিত আবেদন করবেন ইমরান আহমেদ আব্দুল মন্নান সহ চার জন। এবিষয়ে শাহেদ আহমেদ জানান, জেলা প্রশাসক বরাবরে আবেদন করেছি। ইউএনও, উপজেলা চেয়ারম্যানকে অনুলিপি কপি দিয়েছি ইউএনও উম্মে সালিক রুমাইয়া জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মহোদয় এর অনুমোদন কপি আসা মাত্র বাজার নিলাম টেন্ডারের সময়সূচী আমাদের জানাবেন। বর্তমান বাজার লেসি জহির উদ্দিন জানান, স্থানীয় সরকারের ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে তিনি বাজার পরিচালনা করছেন।
এবিষয়ে কথা বলতে ইউনিয়ন চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান চৌধুরীকে একাধিক বার কল দিয়েও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, প্রতি বছর বাজার নিয়ে উত্তেজনা মারামারি বিশৃঙ্খলা হয় এতে করে আমাদের ইউনিয়নবাসীর সুনাম ক্ষুন্ন হয়। আমরা এসব অনিয়ম ও অবৈধ পশুর হাট বন্ধে পূর্বে জেলা প্রশাসক ও জৈন্তাপুর উপজেলা প্রশাসন বরাবর অভিযোগ দিলেও স্থায়ী ভাবে বাজার বন্ধ হয়নি।
এ বিষয়ে ইউএনও উম্মে সালিক রুমাইয়া জানান, অস্থায়ী পশু হাটের জন্য অনুলিপি কপি পেয়েছি বাজার সংক্রান্ত জেলা প্রশাসকের কোনো অনুমোদন কপি আমি পাইনি বাজার নিলাম দেওয়ার এখতিয়ার আমার নেই , আমি এ উপজেলায় নতুন আসায় বাজার সংক্রান্ত বিষয়গুলো আমার জানা নেই । সরকারি অনুমোদন ছাড়া হাট বসানোর কোনো সুযোগ নেই। এতে সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে। এ অবৈধ হাট বন্ধের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Channel Jainta News 24 





















