ঢাকা ০৫:১৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সুনামগঞ্জে নদী ভাঙ্গণের কবলে গ্রাম শাল্লাবাসী :

  • Channel Jainta News 24
  • প্রকাশিত: ০৫:৩১:৫৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫
  • ৯ পড়া হয়েছে
১৬

নাইম তালুকদার : শাল্লা সুনামগঞ্জ ::

সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার গ্রাম শাল্লায় দুই শতাধিক পরিবারের লোকজন নদী ভাঙ্গণের কবলে পড়ে ইতিমধ্যে সর্বস্ব হারিয়েছেন অধিকাংশ পরিবার। সরকার কিংবা স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের কার্যকরী কোন পদক্ষেপ না থাকায় দিশেহারা গ্রামবাসী।

 

রবিবার সরেজমিনে ঘুরে ও গ্রাম শাল্লাবাসী’র সাথে কথা বলে জানা যায়, গ্রাম শাল্লায় লাখো হিন্দু, মুসলিম ভূমিহীন,দিনমুজুর ও কৃষকরা মিলেমিশে বসবাস করে আসছেন।

 

কিন্তু বিগত ২০১৯ সাল থেকে ভয়াবহ শুরু হওয়া নদীভাঙ্গনে ইতিমধ্যে এই গ্রামের দুই শতাধিক পরিবার তাদের বসতভিটা, দুটি বাজার নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। চলতি বছরের গত ১৬ই জানুয়ারী পর থেকে কালনী নদীর পানি কমতে শুরু করায় ব্যাপকভাবে নদীভাঙ্গণ দেখা দেয়ায় এতে আরো প্রায় শতাধিক পরিবারের ঘরবাড়ি হুমকির মধ্যে রয়েছে।

 

ফলে কালনী নদী তীরবর্তী এই গ্রামের মানুষজন তাদের বসতভিটা নিয়ে শংঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন বলে অভিযোগ তাদের। তারা বার বার জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের ধারস্থ হলেও কেবলই আশার বানী শুনে আসলেও কার্যকরী কোন পদক্ষেন না নেওয়াতে হতাশা গ্রামের দুই শতাধিক পরিবারের হাজাঁরো লোকজন। এই গ্রামের অধিকাংশ মানুষজন ভূমিহীন,অস্বচ্ছল দিনমুজুর । তারা এই মৌসুমটাকে অন্যর বোরোজমি বর্গা নিয়ে কৃষিজমি আবাদ করছেন। অবিলম্বে বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকার ও স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড কার্যকরী পদক্ষেপ না নিলে তারা আগামী জৈষ্ঠ মাস আগেই বসতভিটা হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়লে পরিবার পরিজন নিয়ে কোথায় অবস্থান করবেন জানা নেই তাদের।

 

এ ব্যাপারে গ্রামের ভূক্তভোগী ভূমিহীন কয়েকজন কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান,তার ইতিমধ্যে পনেরোটি বসতবাড়ি নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। বর্তমানে যে ষোল নম্বর বাড়িটিতে বসবাস করছেন যেভাবে নদীর পানি বাড়ার সাথে সাথে নদী ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে তার এই শেষ সম্বল এই বাড়িটি ও নদীগর্ভে বিলিন হয়ে যেতে পারে বলে তাহারা আশংঙ্কা প্রকাশ করছেন। অবিলম্বে এই দিনমুজুদের বাড়িটি রক্ষার পাশাপাশি তার এই গ্রাম শাল্লা অঞ্চলটি রক্ষা করতে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে সরকারের নিকট জোর দাবী জানান।

 

গ্রাম শাল্লার বাসিন্দা সমাজ কর্মী শহীদুল ইসলাম জানান, আমি একজন তৃণমূলের মানুষ হিসেবে এই গ্রামের মানুষজনকে রক্ষা করতে বার বার পানি উন্নয়ন বোর্ডের উধর্বতন কৃর্তপক্ষের ধারস্থ হয়ে ও আশার বাণী কেবলই শোনে আসলাম। কিন্তু বাস্তবে কথার সাথে কাজের কোন মিল না পাওয়াতে তিনি হতাশা ব্যক্ত করেন। তিনি বর্তমান অন্তবর্তী কালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার মাধ্যমে পানি মন্ত্রনালয়ের উপদেষ্টার নিকট জোর দাবী জানান,সরকার দ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপ না নিলে আগামী জৈষ্ট মাসের আগেই পুরো গ্রাম শাল্লা অঞ্চলটি নদীগর্ভে বিলিন হয়ে যেতে পারে।

 

এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জ -১ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মামুন হাওলাদার জানান,পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে গত ২০২৩ সালে জেলার বিভিন্ন এলাকাতে নদী ভাঙ্গণ রোধে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে পনি মন্ত্রনালয়ে একটি প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। মন্ত্রনালয়ে থেকে নির্দেশনা পেলেই এই জেলার যে সমস্ত জায়গা নদী ভাঙ্গণ দেখা দিয়েছে সেখানে প্রটেকশন ওয়াল নির্মাণের পাশাপাশি বস্তা ফেলে নদী ভাঙ্গনের কবল থেকে ভূক্তভোগীদের রক্ষার জন্য কাজ শুরু হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

ট্যাগ:

কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনি কমেন্ট করতে ইচ্ছুক?

সাংবাদিকদের তথ্য
ডেস্ক নিউজ

ডেস্ক নিউজ

জনপ্রিয় সংবাদ

রাজনীতি থেকে অবসর নিলেন শমসের মবিন চৌধুরী

Follow for More!

সুনামগঞ্জে নদী ভাঙ্গণের কবলে গ্রাম শাল্লাবাসী :

প্রকাশিত: ০৫:৩১:৫৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫
১৬

নাইম তালুকদার : শাল্লা সুনামগঞ্জ ::

সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার গ্রাম শাল্লায় দুই শতাধিক পরিবারের লোকজন নদী ভাঙ্গণের কবলে পড়ে ইতিমধ্যে সর্বস্ব হারিয়েছেন অধিকাংশ পরিবার। সরকার কিংবা স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের কার্যকরী কোন পদক্ষেপ না থাকায় দিশেহারা গ্রামবাসী।

 

রবিবার সরেজমিনে ঘুরে ও গ্রাম শাল্লাবাসী’র সাথে কথা বলে জানা যায়, গ্রাম শাল্লায় লাখো হিন্দু, মুসলিম ভূমিহীন,দিনমুজুর ও কৃষকরা মিলেমিশে বসবাস করে আসছেন।

 

কিন্তু বিগত ২০১৯ সাল থেকে ভয়াবহ শুরু হওয়া নদীভাঙ্গনে ইতিমধ্যে এই গ্রামের দুই শতাধিক পরিবার তাদের বসতভিটা, দুটি বাজার নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। চলতি বছরের গত ১৬ই জানুয়ারী পর থেকে কালনী নদীর পানি কমতে শুরু করায় ব্যাপকভাবে নদীভাঙ্গণ দেখা দেয়ায় এতে আরো প্রায় শতাধিক পরিবারের ঘরবাড়ি হুমকির মধ্যে রয়েছে।

 

ফলে কালনী নদী তীরবর্তী এই গ্রামের মানুষজন তাদের বসতভিটা নিয়ে শংঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন বলে অভিযোগ তাদের। তারা বার বার জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের ধারস্থ হলেও কেবলই আশার বানী শুনে আসলেও কার্যকরী কোন পদক্ষেন না নেওয়াতে হতাশা গ্রামের দুই শতাধিক পরিবারের হাজাঁরো লোকজন। এই গ্রামের অধিকাংশ মানুষজন ভূমিহীন,অস্বচ্ছল দিনমুজুর । তারা এই মৌসুমটাকে অন্যর বোরোজমি বর্গা নিয়ে কৃষিজমি আবাদ করছেন। অবিলম্বে বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকার ও স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড কার্যকরী পদক্ষেপ না নিলে তারা আগামী জৈষ্ঠ মাস আগেই বসতভিটা হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়লে পরিবার পরিজন নিয়ে কোথায় অবস্থান করবেন জানা নেই তাদের।

 

এ ব্যাপারে গ্রামের ভূক্তভোগী ভূমিহীন কয়েকজন কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান,তার ইতিমধ্যে পনেরোটি বসতবাড়ি নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। বর্তমানে যে ষোল নম্বর বাড়িটিতে বসবাস করছেন যেভাবে নদীর পানি বাড়ার সাথে সাথে নদী ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে তার এই শেষ সম্বল এই বাড়িটি ও নদীগর্ভে বিলিন হয়ে যেতে পারে বলে তাহারা আশংঙ্কা প্রকাশ করছেন। অবিলম্বে এই দিনমুজুদের বাড়িটি রক্ষার পাশাপাশি তার এই গ্রাম শাল্লা অঞ্চলটি রক্ষা করতে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে সরকারের নিকট জোর দাবী জানান।

 

গ্রাম শাল্লার বাসিন্দা সমাজ কর্মী শহীদুল ইসলাম জানান, আমি একজন তৃণমূলের মানুষ হিসেবে এই গ্রামের মানুষজনকে রক্ষা করতে বার বার পানি উন্নয়ন বোর্ডের উধর্বতন কৃর্তপক্ষের ধারস্থ হয়ে ও আশার বাণী কেবলই শোনে আসলাম। কিন্তু বাস্তবে কথার সাথে কাজের কোন মিল না পাওয়াতে তিনি হতাশা ব্যক্ত করেন। তিনি বর্তমান অন্তবর্তী কালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার মাধ্যমে পানি মন্ত্রনালয়ের উপদেষ্টার নিকট জোর দাবী জানান,সরকার দ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপ না নিলে আগামী জৈষ্ট মাসের আগেই পুরো গ্রাম শাল্লা অঞ্চলটি নদীগর্ভে বিলিন হয়ে যেতে পারে।

 

এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জ -১ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মামুন হাওলাদার জানান,পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে গত ২০২৩ সালে জেলার বিভিন্ন এলাকাতে নদী ভাঙ্গণ রোধে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে পনি মন্ত্রনালয়ে একটি প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। মন্ত্রনালয়ে থেকে নির্দেশনা পেলেই এই জেলার যে সমস্ত জায়গা নদী ভাঙ্গণ দেখা দিয়েছে সেখানে প্রটেকশন ওয়াল নির্মাণের পাশাপাশি বস্তা ফেলে নদী ভাঙ্গনের কবল থেকে ভূক্তভোগীদের রক্ষার জন্য কাজ শুরু হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।