ঢাকা ১১:১১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২১ নভেম্বর ২০২৫, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ঐক্য আর সদিচ্ছায় উন্নয়নে দৃষ্টান্ত স্থাপন করল গোয়াইনঘাটের সতী গ্রামবাসী

  • Channel Jainta News 24
  • প্রকাশিত: ০৮:২৭:২৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫
  • ১৩ পড়া হয়েছে
১৯

গোয়াইনঘাটে দৃষ্টান্ত স্থাপন করল সতী গ্রামবাসী:

 

মতিউর রহমান গোয়াইনঘাট (সিলেট):

হাওর বাওর বেষ্টিত চির সবুজের গ্রাম সতী, এ গ্রামের প্রধান অর্থনীতি কৃষি। বোরো ধানের সোনালী ফসল এনে দেয় গ্রামের মানুষ কে সুখ, শান্তি আর সমৃদ্ধি। গ্রামটির অবস্থান, গোয়াইনঘাট উপজেলা সদর থেকে তিন কিলোমিটার পশ্চিমে, সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার ৪নং লেঙ্গুড়া ইউনিয়নের অধিভুক্ত গ্রাম এই গ্রামটির নাম সতী।

 

রাস্তাঘাট, শিক্ষা দীক্ষায় পিছিয়ে পড়া এ গ্রামটি সময়ের সাথে সাথে আনুপাতিক হারে উর্ধ্বগতি লাভ করছে। এ গ্রামে নেই কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, নেই তেমস সরকারি প্রয়োজনীয় সহযোগিতা। ইউনিয়নে নেই ইউপি চেয়ারম্যান, প্রশাসক দিয়ে চলছে নাগরিক সেবা।

বিভিন্ন সুবিধাবঞ্চিত সতী গ্রামবাসী, নিজের ভাগ্য উন্নয়নে নিজেরাই তৎপর হয়েছে।

 

এমন এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন সতী গ্রামবাসী, নিজস্ব অর্থায়নে খাল খননের মাধ্যমে দু-পারে ৬ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা নির্মাণ করেছেন, যার ব্যয় ৬০ লক্ষ টাকার উপরে।  একটি খালের দুপারে দুটি রাস্তার মধ্য দিয়ে হাওরের সাথে গ্রামের যোগাযোগ স্থাপিত হয়েছে। একই সাথে নৌকা ও গাড়ি দিয়ে যাওয়া যাবে হাওরে। এতে করে সহজে ধান ঘরে তোলা সম্ভব হবে। গ্রামের মানুষের দাবি এই প্রকল্পের মাধ্যমে কমপক্ষে একই সাথে ২০ টি সেবা পাওয়া যাবে। খালের দুপারে গাছ- গাছালির মাধ্যম সবুজের সমারোহ গ্রামটিকে করবে দৃষ্টি নন্দন, পানিতে মাছ চাষ,  খালের পানি দিয়ে চাষ হবে শত শত বিঘা জমি। হাওরের মাঠে গরু চরানো, বন্যার পানি প্রবাহ, বন্যা রোধ, পর্যটন বোর্ডের আওতায় ওয়াকওয়ে, সহ নানাবিধ সুবিধা পাবে গ্রামের মানুষ। সুবিধা পাচ্ছে আশপাশের মৌজার লোকজন, এতে করে মিটবে ফসলের চাহিদা, গোছাবে খাদ্য ঘাঠতি। দেশ হবে সমৃদ্ধ ও স্বনির্ভর। কৃষক গোলা ভরে তোলবে ধান, যা দেশের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখবে।

 

গ্রামের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সতী অগ্রনী যুব সংগের সাধারনসম্পাদক রাশেল আহমদ বলেন ” আমরা তরুণ প্রজন্মের ঐক্য ও শক্তিকে কাজে লাগিয়ে গ্রামের কৃষি অর্থনীকে শক্তিশালী করতে এ উদ্যোগ নেই। সরকারের কৃষি অধিদপ্তরের সহযোগিতা পেলে আমরা এ প্রকল্পকে আরো উৎপাদনশীল করে তুলতে পারবো বলে মনে করি। সরকারের কাছে আমাদের দাবি ঝড়বৃষ্টির থেকে রক্ষা পেতে আমাদের হাওরে অন্তত ৩-থেকে ৪-টি কৃষক ছাওনি তৈরী করে দিলে আমরা উপকৃত হবো। ”

 

আর মাত্র কিছু দিন পর সোনালী ফসল ঘরে তোলার কাজে নিয়োজিত হবে দুই থেকে আড়াই হাজার কৃষক। কিন্তু বর্তমান আবহাওয়া অনুযায়ী বোরো মৌসুমে বজ্রপাত হওয়ার সম্ভাবনা প্রচুর এবং হাওর এলাকায় এর পরিমাণ খুবই বেশি। প্রতিবছর বজ্রপাতের কারণে হাওর এলাকায় প্রাণ হারান গ্রামের খেটে খাওয়া কৃষক। তাদের জীবনের নিরাপত্তার স্বার্থে জরুরি ভিত্তিতে  হাওরের বিভিন্ন জায়গায় ৩-৪ টি কৃষক ছাওনি নির্মাণ করা আবশ্যক হয়ে পড়েছে।

 

গ্রামবাসীর দাবি সরকারী অর্থায়নে রাস্তাটি আরসিসি ঢালাই প্রয়োজন ।।

এবিষয়ে গ্রামের বাসিন্দা স্বাস্থ্য কর্মী জাহাঙ্গীর কবিরের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন ” ঐক্যই মুক্তি এই লক্ষে উদ্ভুদ্ধ হয়ে গ্রামের সর্বসাধারনেকে ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা সুবিধা সম্পর্কে বুঝিয়ে আমরা এ প্রকল্ক হাতে নেই। এই খাল খনন সুধু আমাদের কৃষি কাজে সহযোগী হবে তাইনয় পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় খালের দুই পাড়ের রাস্তায় বন বিভাগের সহযোগীতা নিয়ে আমরা বৃক্ষ রুপন করবো, খালে মাছ চাষ করে এটাকে আমরা বহুমুখী উৎপাদনশীল প্রকল্পে গড়ে তুলতে চাই। সরকারের কাছে আমরা দুই পাশের রাস্তাটা টেকসই করতে ইটসলিং বরাদ্দ দিয়ে সহযোগিতা করার অনুরোধ জানাচ্ছি।”

ট্যাগ:

কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনি কমেন্ট করতে ইচ্ছুক?

সাংবাদিকদের তথ্য
ডেস্ক নিউজ

ডেস্ক নিউজ

জনপ্রিয় সংবাদ

ঢাকার তিনটি আসনে ‘বিশেষ বরাদ্দ: যা জানালেন উপদেষ্টা

Follow for More!

ঐক্য আর সদিচ্ছায় উন্নয়নে দৃষ্টান্ত স্থাপন করল গোয়াইনঘাটের সতী গ্রামবাসী

প্রকাশিত: ০৮:২৭:২৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫
১৯

গোয়াইনঘাটে দৃষ্টান্ত স্থাপন করল সতী গ্রামবাসী:

 

মতিউর রহমান গোয়াইনঘাট (সিলেট):

হাওর বাওর বেষ্টিত চির সবুজের গ্রাম সতী, এ গ্রামের প্রধান অর্থনীতি কৃষি। বোরো ধানের সোনালী ফসল এনে দেয় গ্রামের মানুষ কে সুখ, শান্তি আর সমৃদ্ধি। গ্রামটির অবস্থান, গোয়াইনঘাট উপজেলা সদর থেকে তিন কিলোমিটার পশ্চিমে, সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার ৪নং লেঙ্গুড়া ইউনিয়নের অধিভুক্ত গ্রাম এই গ্রামটির নাম সতী।

 

রাস্তাঘাট, শিক্ষা দীক্ষায় পিছিয়ে পড়া এ গ্রামটি সময়ের সাথে সাথে আনুপাতিক হারে উর্ধ্বগতি লাভ করছে। এ গ্রামে নেই কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, নেই তেমস সরকারি প্রয়োজনীয় সহযোগিতা। ইউনিয়নে নেই ইউপি চেয়ারম্যান, প্রশাসক দিয়ে চলছে নাগরিক সেবা।

বিভিন্ন সুবিধাবঞ্চিত সতী গ্রামবাসী, নিজের ভাগ্য উন্নয়নে নিজেরাই তৎপর হয়েছে।

 

এমন এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন সতী গ্রামবাসী, নিজস্ব অর্থায়নে খাল খননের মাধ্যমে দু-পারে ৬ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা নির্মাণ করেছেন, যার ব্যয় ৬০ লক্ষ টাকার উপরে।  একটি খালের দুপারে দুটি রাস্তার মধ্য দিয়ে হাওরের সাথে গ্রামের যোগাযোগ স্থাপিত হয়েছে। একই সাথে নৌকা ও গাড়ি দিয়ে যাওয়া যাবে হাওরে। এতে করে সহজে ধান ঘরে তোলা সম্ভব হবে। গ্রামের মানুষের দাবি এই প্রকল্পের মাধ্যমে কমপক্ষে একই সাথে ২০ টি সেবা পাওয়া যাবে। খালের দুপারে গাছ- গাছালির মাধ্যম সবুজের সমারোহ গ্রামটিকে করবে দৃষ্টি নন্দন, পানিতে মাছ চাষ,  খালের পানি দিয়ে চাষ হবে শত শত বিঘা জমি। হাওরের মাঠে গরু চরানো, বন্যার পানি প্রবাহ, বন্যা রোধ, পর্যটন বোর্ডের আওতায় ওয়াকওয়ে, সহ নানাবিধ সুবিধা পাবে গ্রামের মানুষ। সুবিধা পাচ্ছে আশপাশের মৌজার লোকজন, এতে করে মিটবে ফসলের চাহিদা, গোছাবে খাদ্য ঘাঠতি। দেশ হবে সমৃদ্ধ ও স্বনির্ভর। কৃষক গোলা ভরে তোলবে ধান, যা দেশের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখবে।

 

গ্রামের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সতী অগ্রনী যুব সংগের সাধারনসম্পাদক রাশেল আহমদ বলেন ” আমরা তরুণ প্রজন্মের ঐক্য ও শক্তিকে কাজে লাগিয়ে গ্রামের কৃষি অর্থনীকে শক্তিশালী করতে এ উদ্যোগ নেই। সরকারের কৃষি অধিদপ্তরের সহযোগিতা পেলে আমরা এ প্রকল্পকে আরো উৎপাদনশীল করে তুলতে পারবো বলে মনে করি। সরকারের কাছে আমাদের দাবি ঝড়বৃষ্টির থেকে রক্ষা পেতে আমাদের হাওরে অন্তত ৩-থেকে ৪-টি কৃষক ছাওনি তৈরী করে দিলে আমরা উপকৃত হবো। ”

 

আর মাত্র কিছু দিন পর সোনালী ফসল ঘরে তোলার কাজে নিয়োজিত হবে দুই থেকে আড়াই হাজার কৃষক। কিন্তু বর্তমান আবহাওয়া অনুযায়ী বোরো মৌসুমে বজ্রপাত হওয়ার সম্ভাবনা প্রচুর এবং হাওর এলাকায় এর পরিমাণ খুবই বেশি। প্রতিবছর বজ্রপাতের কারণে হাওর এলাকায় প্রাণ হারান গ্রামের খেটে খাওয়া কৃষক। তাদের জীবনের নিরাপত্তার স্বার্থে জরুরি ভিত্তিতে  হাওরের বিভিন্ন জায়গায় ৩-৪ টি কৃষক ছাওনি নির্মাণ করা আবশ্যক হয়ে পড়েছে।

 

গ্রামবাসীর দাবি সরকারী অর্থায়নে রাস্তাটি আরসিসি ঢালাই প্রয়োজন ।।

এবিষয়ে গ্রামের বাসিন্দা স্বাস্থ্য কর্মী জাহাঙ্গীর কবিরের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন ” ঐক্যই মুক্তি এই লক্ষে উদ্ভুদ্ধ হয়ে গ্রামের সর্বসাধারনেকে ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা সুবিধা সম্পর্কে বুঝিয়ে আমরা এ প্রকল্ক হাতে নেই। এই খাল খনন সুধু আমাদের কৃষি কাজে সহযোগী হবে তাইনয় পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় খালের দুই পাড়ের রাস্তায় বন বিভাগের সহযোগীতা নিয়ে আমরা বৃক্ষ রুপন করবো, খালে মাছ চাষ করে এটাকে আমরা বহুমুখী উৎপাদনশীল প্রকল্পে গড়ে তুলতে চাই। সরকারের কাছে আমরা দুই পাশের রাস্তাটা টেকসই করতে ইটসলিং বরাদ্দ দিয়ে সহযোগিতা করার অনুরোধ জানাচ্ছি।”