ঢাকা ০২:২০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আমরা একটা মানবিক বাংলাদেশ গড়তে চাই- ডা: শফিকুর রহমান

  • Channel Jainta News 24
  • প্রকাশিত: ০৫:২০:৪৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ এপ্রিল ২০২৫
  • ১০ পড়া হয়েছে
১৫

কুলাউড়ায়- ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে

আমরা একটা মানবিক বাংলাদেশ গড়তে চাই- ডা: শফিকুর রহমান

 

এম এম সামছুল ইসলাম, কুলাউড়া (মৌলভীবাজার) থেকে: মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলায় জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে আয়োজিত ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জামায়াতে ইসলামীর আমির ও কুলাউড়ার কৃতি সন্তান ডা: শফিকুর রহমান বলেন, জন্মস্থানের একটা মায়া একটা ভালোবাসা আছে। ২০০১ সালের নির্বাচনের পর আপনাদের সামনে ২৪ বছর পর কথা বলার সুযোগ হয়েছে। কুলাউড়ার মানুষ যেভাবে চিনে অন্য কেউ সেভাবে চিনে না। আমি কি যুদ্ধাপরাধী? না- অথচ আমার উপর যুদ্ধপরাধের মামলা দেয়ার চেষ্টা করেছে। যুদ্ধের সময় আমার বয়স ছিলো সাড়ে ১২ বছর। সাড়ে ১২ বছরের মানুষ যুদ্ধকালীন সময়ে মানুষ খুন করতে পারে- এটা বিশ্বাসযোগ্য কথা? চেষ্টা করা হয়েছে। কেউ আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগও দেয়নি, সাক্ষ্যও দেয়নি। হিন্দু ভাইয়েরাও তাতে রাজি হয়নি। আমি সেই সময় জামায়াতে ইসলামী ও করতাম না। আমি অন্য একটা সংগঠন করতাম। যেটা বলতে এখন লজ্জা হয়।

বিগত জালিম সরকারের আমলে আমরা ১১ জন শীর্ষ নেতাকর্মীকে হারিয়েছি ৫ শতাধিক মানুষ পঙ্গু হয়েছে। হাজার হাজার মানুষ হামলা মামলার শিকার হয়ে দেশ ছেড়ে বিভিন্ন দেশে আশ্রয় নিয়েছে। আমােেদর নিবন্ধন বাতিল করা হয়েছিল। আগষ্টের ১ তারিখ আমাদের নিষিদ্ধ করা হয়। সে সময় আল্লাহকে বলেছিলাম, ৪দিন পর আল্লাহর বিচার হয়েছে। জুলাই বিপ্লবে ছাত্রদের সাথে আমরাও ছিলাম। জালিমের মাথা আল্লাহ গুড়িয়ে দিয়েছেন।

২৬ হাজার কোটি টাকা শুধু আওয়ামী লীগের নেতারা পাচার করেছে। প্রশাসন কত টাকা পাচার করেছে আল্লাহই ভালো জানেন। তাদের ভাব ছিলো এমন তারা রাজা আর আমরা প্রজা। ওই সরকার কারো সাথে ভালো আচরণ করেনি। ৭ বছরের শিশুও আন্দোলন করেছে। এক মা দুধের শিশু সন্তান কোলে নিয়ে আন্দোলনে এসেছেন। সন্তানদেও সাথে সংহতি প্রকাশ করার জন্য তিনি আন্দোলনে নেমেছিলেন বলে সাংবাদিকদেও বলেছেন। এটা ছিলো জুলাই বিপ্লব।

আমি প্রত্যেকটা শহীদের বাড়িতে যদি যেতে পারতাম। তাদের সন্তান কুলে নিতে পারতাম। যাদের বাড়ি গিয়েছিলাম তাদের জিজ্ঞেস করেছি কেমন আছেন, তারা শুধু টপটপ করে চোখের পানি ফেলেছেন। জানতে চেয়েছিলাম-কি চান? তারা বলেছিলেন, জালিমের হাতে দেশটা যেন আর না যায়। দেশটা আপনাদের হাতে দেখতে চাই। এমন একটা দেশ দেখতে চাই চাদাবাজ, ঘোষখোর ও সুদখোরদেও ঠাঁই হবে না। আপনাদের চাওয়াই কি এক? যদি এক হয়, তাহলে লড়াই আমাদের শেষ না, লড়াই শুরু। শহীদের পরিবারের চোখের পানি যতদিন আমাদেও লড়াই মাত্র শুরু, এই লড়াই চলবে। যতদিন এই দেশে আল্লাহর আইন, মানবতার আইন, মানবিক আইন প্রতিষ্ঠিত না হয়।

বাংলাদেশকে আল্লাহ জালিমের কবল থেকে মুক্ত করেছেন। ফিলিস্তিনকেও যেন আল্লাহ জালিমের হামলা থেকে মুক্ত করে দেন।

কুলাউড়া উপজেলায় ৩৪ চা বাগান রয়েছে। তারা হাড় ভাঙ্গা পরিশ্রম করেন। আমরা আগেও দাবি তুলেছি শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি নিশ্চিত হয়। আমরা ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, আইনজীবি চাই না, যাদের ভিতর মানুষত্ব নেই। আমরা চাই প্রকৃত মানুষ। যারা মানুষের কল্যাণের জন্য কাজ করবেন, তাদের প্রয়োজন।

আমরা একটা মানবিক বাংলাদেশ গড়তে চাই। যেখানে হিন্দু মুসলিম কিংবা মেজরিটি মাইনরিট বলে কিছু থাকবে না। দু:শাসন এবং জুলুমের কারণে আপনাদের মুখ দেখতে পারিনি। আজ প্রাণখোলে দেখতে চাই।

পবিত্র ঈদুল ফিতরের পরদিন ০১ এপ্রিল কুলাউড়া শহরের ঐতিহ্যবাহী ডাকবাংলো মাঠে আয়োজিত অনুষ্ঠানে কুলাউড়া উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির অধ্যাপক আব্দুল মুন্তাজিমের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক বেলাল আহমদ চৌধুরীর পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সিলেট মহানগরীর আমির মো: ফখরুল ইসলাম, কেন্দ্রিয় মজলিসে সুরা ও সিলেট জেলা আমির মাওলানা হাবিবুর রহমান, খেলাফত আন্দোলনের মৌলভীবাজার জেলা সভাপতি মাওলানা আব্দুল কুদ্দছ, মৌলভীবাজার জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মো: ইয়ামির আলী, মৌলভীবাজার জেলার ভারপ্রাপ্ত আমীর মাওলানা আব্দুর রহমান, মৌলভীবাজারের সাবেক জেলা আমির সিরাজুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট আব্দুর রব, মৌলভীবাজার -১ (জুড়ী_বড়লেখ) আসনের এমপি প্রার্থী মাওলানা আমিনুল ইসলাম, ঢাকা পল্টনের আমির মাহিন আহমদ খান, মৌলভীবাজারের পৌর আমির হাফিজ তাজুল ইসলাম, রাজনগর উপজেলা আমির মো: আবু রাইয়ান শাহিন, জুড়ী উপজেলা আমির হাজি আব্দুল হাই হেলাল, বড়লেখা উপজেলা আমির মো: এমদাদুল ইসলাম , কুলাউড়া ছাত্র সমন্নয়ক তারেক আহমদ প্রমুখ।

ট্যাগ:

কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনি কমেন্ট করতে ইচ্ছুক?

সাংবাদিকদের তথ্য
ডেস্ক নিউজ

ডেস্ক নিউজ

জনপ্রিয় সংবাদ

সিলেটে বিপ্লবী সাংস্কৃতিক ঐক্য’র আদি নববর্ষ উদযাপন

Follow for More!

আমরা একটা মানবিক বাংলাদেশ গড়তে চাই- ডা: শফিকুর রহমান

প্রকাশিত: ০৫:২০:৪৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ এপ্রিল ২০২৫
১৫

কুলাউড়ায়- ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে

আমরা একটা মানবিক বাংলাদেশ গড়তে চাই- ডা: শফিকুর রহমান

 

এম এম সামছুল ইসলাম, কুলাউড়া (মৌলভীবাজার) থেকে: মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলায় জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে আয়োজিত ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জামায়াতে ইসলামীর আমির ও কুলাউড়ার কৃতি সন্তান ডা: শফিকুর রহমান বলেন, জন্মস্থানের একটা মায়া একটা ভালোবাসা আছে। ২০০১ সালের নির্বাচনের পর আপনাদের সামনে ২৪ বছর পর কথা বলার সুযোগ হয়েছে। কুলাউড়ার মানুষ যেভাবে চিনে অন্য কেউ সেভাবে চিনে না। আমি কি যুদ্ধাপরাধী? না- অথচ আমার উপর যুদ্ধপরাধের মামলা দেয়ার চেষ্টা করেছে। যুদ্ধের সময় আমার বয়স ছিলো সাড়ে ১২ বছর। সাড়ে ১২ বছরের মানুষ যুদ্ধকালীন সময়ে মানুষ খুন করতে পারে- এটা বিশ্বাসযোগ্য কথা? চেষ্টা করা হয়েছে। কেউ আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগও দেয়নি, সাক্ষ্যও দেয়নি। হিন্দু ভাইয়েরাও তাতে রাজি হয়নি। আমি সেই সময় জামায়াতে ইসলামী ও করতাম না। আমি অন্য একটা সংগঠন করতাম। যেটা বলতে এখন লজ্জা হয়।

বিগত জালিম সরকারের আমলে আমরা ১১ জন শীর্ষ নেতাকর্মীকে হারিয়েছি ৫ শতাধিক মানুষ পঙ্গু হয়েছে। হাজার হাজার মানুষ হামলা মামলার শিকার হয়ে দেশ ছেড়ে বিভিন্ন দেশে আশ্রয় নিয়েছে। আমােেদর নিবন্ধন বাতিল করা হয়েছিল। আগষ্টের ১ তারিখ আমাদের নিষিদ্ধ করা হয়। সে সময় আল্লাহকে বলেছিলাম, ৪দিন পর আল্লাহর বিচার হয়েছে। জুলাই বিপ্লবে ছাত্রদের সাথে আমরাও ছিলাম। জালিমের মাথা আল্লাহ গুড়িয়ে দিয়েছেন।

২৬ হাজার কোটি টাকা শুধু আওয়ামী লীগের নেতারা পাচার করেছে। প্রশাসন কত টাকা পাচার করেছে আল্লাহই ভালো জানেন। তাদের ভাব ছিলো এমন তারা রাজা আর আমরা প্রজা। ওই সরকার কারো সাথে ভালো আচরণ করেনি। ৭ বছরের শিশুও আন্দোলন করেছে। এক মা দুধের শিশু সন্তান কোলে নিয়ে আন্দোলনে এসেছেন। সন্তানদেও সাথে সংহতি প্রকাশ করার জন্য তিনি আন্দোলনে নেমেছিলেন বলে সাংবাদিকদেও বলেছেন। এটা ছিলো জুলাই বিপ্লব।

আমি প্রত্যেকটা শহীদের বাড়িতে যদি যেতে পারতাম। তাদের সন্তান কুলে নিতে পারতাম। যাদের বাড়ি গিয়েছিলাম তাদের জিজ্ঞেস করেছি কেমন আছেন, তারা শুধু টপটপ করে চোখের পানি ফেলেছেন। জানতে চেয়েছিলাম-কি চান? তারা বলেছিলেন, জালিমের হাতে দেশটা যেন আর না যায়। দেশটা আপনাদের হাতে দেখতে চাই। এমন একটা দেশ দেখতে চাই চাদাবাজ, ঘোষখোর ও সুদখোরদেও ঠাঁই হবে না। আপনাদের চাওয়াই কি এক? যদি এক হয়, তাহলে লড়াই আমাদের শেষ না, লড়াই শুরু। শহীদের পরিবারের চোখের পানি যতদিন আমাদেও লড়াই মাত্র শুরু, এই লড়াই চলবে। যতদিন এই দেশে আল্লাহর আইন, মানবতার আইন, মানবিক আইন প্রতিষ্ঠিত না হয়।

বাংলাদেশকে আল্লাহ জালিমের কবল থেকে মুক্ত করেছেন। ফিলিস্তিনকেও যেন আল্লাহ জালিমের হামলা থেকে মুক্ত করে দেন।

কুলাউড়া উপজেলায় ৩৪ চা বাগান রয়েছে। তারা হাড় ভাঙ্গা পরিশ্রম করেন। আমরা আগেও দাবি তুলেছি শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি নিশ্চিত হয়। আমরা ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, আইনজীবি চাই না, যাদের ভিতর মানুষত্ব নেই। আমরা চাই প্রকৃত মানুষ। যারা মানুষের কল্যাণের জন্য কাজ করবেন, তাদের প্রয়োজন।

আমরা একটা মানবিক বাংলাদেশ গড়তে চাই। যেখানে হিন্দু মুসলিম কিংবা মেজরিটি মাইনরিট বলে কিছু থাকবে না। দু:শাসন এবং জুলুমের কারণে আপনাদের মুখ দেখতে পারিনি। আজ প্রাণখোলে দেখতে চাই।

পবিত্র ঈদুল ফিতরের পরদিন ০১ এপ্রিল কুলাউড়া শহরের ঐতিহ্যবাহী ডাকবাংলো মাঠে আয়োজিত অনুষ্ঠানে কুলাউড়া উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির অধ্যাপক আব্দুল মুন্তাজিমের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক বেলাল আহমদ চৌধুরীর পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সিলেট মহানগরীর আমির মো: ফখরুল ইসলাম, কেন্দ্রিয় মজলিসে সুরা ও সিলেট জেলা আমির মাওলানা হাবিবুর রহমান, খেলাফত আন্দোলনের মৌলভীবাজার জেলা সভাপতি মাওলানা আব্দুল কুদ্দছ, মৌলভীবাজার জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মো: ইয়ামির আলী, মৌলভীবাজার জেলার ভারপ্রাপ্ত আমীর মাওলানা আব্দুর রহমান, মৌলভীবাজারের সাবেক জেলা আমির সিরাজুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট আব্দুর রব, মৌলভীবাজার -১ (জুড়ী_বড়লেখ) আসনের এমপি প্রার্থী মাওলানা আমিনুল ইসলাম, ঢাকা পল্টনের আমির মাহিন আহমদ খান, মৌলভীবাজারের পৌর আমির হাফিজ তাজুল ইসলাম, রাজনগর উপজেলা আমির মো: আবু রাইয়ান শাহিন, জুড়ী উপজেলা আমির হাজি আব্দুল হাই হেলাল, বড়লেখা উপজেলা আমির মো: এমদাদুল ইসলাম , কুলাউড়া ছাত্র সমন্নয়ক তারেক আহমদ প্রমুখ।