ঢাকা ০১:১০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কানাইঘাটে কুশিয়ারা পানিতে বন্দী হাজারো মানুষ

  • Channel Jainta News 24
  • প্রকাশিত: ০৪:৪৭:১৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ জুলাই ২০২৪
  • ১৭ পড়া হয়েছে
১৭

কানাইঘাট প্রতিনিধি: সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অনেকটা উন্নতি হলেও কুশিয়ারা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় উপজেলার দিঘীরপাড় ও সাতবাঁক ইউনিয়নের বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। এই দুই ইউনিয়নের অন্তত ২৬টি গ্রামের লোকজন এখনও পানিবন্দী অবস্থায় দুর্বিসহ জীবন যাপন করছেন।

অনেক পরিবার এখনও আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছেন। তবে এখন পর্যন্ত উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার নি¤œাঞ্চল বন্যার পানিতে প্লাবিত রয়েছে।

ভারতের আসাম রাজ্যে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি বিরাজ করায় জকিগঞ্জ উপজেলার কুশিয়ারা নদীর কয়েকটি স্থানে ডাইক ভেঙে ও উপচে পানি প্রবেশ করায় কানাইঘাটের দিঘীরপাড় ইউনিয়নের জিৎপুর, নালুহারা, কুওরেরমাটি, মাঝরগ্রাম, দুয়ারীমাটি, সর্দারমাটি, মানিকপুর, ধনপুর, শাহপুর, মাটিজুরা, ছত্রনগর, রামপুর পূর্ব, কঠালপুর, মাছুগ্রাম, মানিকপুর, ধনমাইরমাটি কাপ্তানপুর, ঠাকুরেরমাটি গ্রাম এবং সাতবাঁক ইউনিয়নের জুলাই, ভবানীগঞ্জ, পূর্ব ঠাকুরেরমাটি, চরিপাড়া, লালারচক, পীরনগর, সাতপারি, আগচটি, দলইমাটি, জয়পুর গ্রামের বিস্তৃর্ণ জনপদ বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এ দু’টি ইউনিয়ন বাদে ৭টি এবং পৌরসভার বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হলেও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত আধা-পাকা ও কাঁচা বসত ঘরগুলো থেকে কাদা মাটি পরিস্কার করে বসবাসের উপযোগী করার চেষ্টা করছেন। কিন্তু অনেকে অর্থের অভাবে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ি-ঘরগুলো মেরামত করতে পারছেন না।

বিশেষ করে পর পর তিন দফা বন্যা হওয়ার কারনে কৃষকরা ব্যাপকহারে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। শেষ দফার বন্যায় শত শত আউস ধানের বীজতলা ও সবজি বাগান বিনষ্ট হওয়ার কারনে কৃষকরা দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। পানি কমার সাথে সাথে কানাইঘাট সুরমা নদীর ১৮টি ভাঙন কবলিত স্থান মেরামত করার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে অর্থ বরাদ্দ দেয়া হলেও এখনও অনেক ভাঙন দিয়ে নদীর পানি লোকালয়ে প্রবেশ অব্যাহত থাকায় কাজ শুরু করতে পারছেন না ঠিকাদাররা। নদীর পানি কমে গেলে দ্রুত ভাঙন কবলিত স্থানগুলো মেরামত করা হবে বলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা নাসরিন জানিয়েছেন।

তিন দফা বন্যায় উপজেলার প্রধান প্রধান সড়ক সহ গ্রামীণ, পাকা, ইটসলিং ও কাঁচা সড়কগুলো ব্যাপক আকারে ক্ষতি হয়েছে। বন্যায় সবমিলিয়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান ১’শ কোটি টাকার উপরে হবে বলে জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছেন। ২০২২ সালের ভয়াবহ বন্যার পর সম্প্রতি তিন বারের বন্যায় কানাইঘাট গাজী বোরহান উদ্দিন সড়কের প্রায় ৩৫ কিলোমিটার রাস্তা ব্যাপক আকারে ক্ষয়ক্ষতি হওয়ায় যান চলাচল থেকে শুরু করে মানুষজনকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সড়কটি যান চলাচল সহ মানুষের যাতায়াতে জন্য উপযোগী করার জন্য অর্থ বরাদ্দের দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

এদিকে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কানাইঘাট-শাহবাগ-দরবস্ত সড়কের টেকসই উন্নয়নের জন্য সড়ক ও জনপথের পক্ষ থেকে নতুন করে ৪২ কোটি ৫১ লক্ষ ৪২ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। সড়ক ও জনপথের কর্মকর্তারা সড়কের ক্ষতিগ্রস্ত অংশগুলো মেরামত সহ যাতে করে বন্যায় সড়কটি নতুন করে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় এজন্য সার্ভে করে মাস দু’এক এর মধ্যে কাজ শুরু করা হবে বলে জানা গেছে।

ট্যাগ:

কমেন্ট লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনি কমেন্ট করতে ইচ্ছুক?

সাংবাদিকদের তথ্য
ডেস্ক নিউজ

ডেস্ক নিউজ

জনপ্রিয় সংবাদ

প্রযুক্তির বাইরে নৈতিক মূল্যবোধে সমৃদ্ধ প্রজন্ম গড়ে তুলতে হবে- ডা. শামীমুর রহমান

Follow for More!

কানাইঘাটে কুশিয়ারা পানিতে বন্দী হাজারো মানুষ

প্রকাশিত: ০৪:৪৭:১৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ জুলাই ২০২৪
১৭

কানাইঘাট প্রতিনিধি: সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অনেকটা উন্নতি হলেও কুশিয়ারা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় উপজেলার দিঘীরপাড় ও সাতবাঁক ইউনিয়নের বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। এই দুই ইউনিয়নের অন্তত ২৬টি গ্রামের লোকজন এখনও পানিবন্দী অবস্থায় দুর্বিসহ জীবন যাপন করছেন।

অনেক পরিবার এখনও আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছেন। তবে এখন পর্যন্ত উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার নি¤œাঞ্চল বন্যার পানিতে প্লাবিত রয়েছে।

ভারতের আসাম রাজ্যে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি বিরাজ করায় জকিগঞ্জ উপজেলার কুশিয়ারা নদীর কয়েকটি স্থানে ডাইক ভেঙে ও উপচে পানি প্রবেশ করায় কানাইঘাটের দিঘীরপাড় ইউনিয়নের জিৎপুর, নালুহারা, কুওরেরমাটি, মাঝরগ্রাম, দুয়ারীমাটি, সর্দারমাটি, মানিকপুর, ধনপুর, শাহপুর, মাটিজুরা, ছত্রনগর, রামপুর পূর্ব, কঠালপুর, মাছুগ্রাম, মানিকপুর, ধনমাইরমাটি কাপ্তানপুর, ঠাকুরেরমাটি গ্রাম এবং সাতবাঁক ইউনিয়নের জুলাই, ভবানীগঞ্জ, পূর্ব ঠাকুরেরমাটি, চরিপাড়া, লালারচক, পীরনগর, সাতপারি, আগচটি, দলইমাটি, জয়পুর গ্রামের বিস্তৃর্ণ জনপদ বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এ দু’টি ইউনিয়ন বাদে ৭টি এবং পৌরসভার বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হলেও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত আধা-পাকা ও কাঁচা বসত ঘরগুলো থেকে কাদা মাটি পরিস্কার করে বসবাসের উপযোগী করার চেষ্টা করছেন। কিন্তু অনেকে অর্থের অভাবে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ি-ঘরগুলো মেরামত করতে পারছেন না।

বিশেষ করে পর পর তিন দফা বন্যা হওয়ার কারনে কৃষকরা ব্যাপকহারে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। শেষ দফার বন্যায় শত শত আউস ধানের বীজতলা ও সবজি বাগান বিনষ্ট হওয়ার কারনে কৃষকরা দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। পানি কমার সাথে সাথে কানাইঘাট সুরমা নদীর ১৮টি ভাঙন কবলিত স্থান মেরামত করার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে অর্থ বরাদ্দ দেয়া হলেও এখনও অনেক ভাঙন দিয়ে নদীর পানি লোকালয়ে প্রবেশ অব্যাহত থাকায় কাজ শুরু করতে পারছেন না ঠিকাদাররা। নদীর পানি কমে গেলে দ্রুত ভাঙন কবলিত স্থানগুলো মেরামত করা হবে বলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা নাসরিন জানিয়েছেন।

তিন দফা বন্যায় উপজেলার প্রধান প্রধান সড়ক সহ গ্রামীণ, পাকা, ইটসলিং ও কাঁচা সড়কগুলো ব্যাপক আকারে ক্ষতি হয়েছে। বন্যায় সবমিলিয়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান ১’শ কোটি টাকার উপরে হবে বলে জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছেন। ২০২২ সালের ভয়াবহ বন্যার পর সম্প্রতি তিন বারের বন্যায় কানাইঘাট গাজী বোরহান উদ্দিন সড়কের প্রায় ৩৫ কিলোমিটার রাস্তা ব্যাপক আকারে ক্ষয়ক্ষতি হওয়ায় যান চলাচল থেকে শুরু করে মানুষজনকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সড়কটি যান চলাচল সহ মানুষের যাতায়াতে জন্য উপযোগী করার জন্য অর্থ বরাদ্দের দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

এদিকে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কানাইঘাট-শাহবাগ-দরবস্ত সড়কের টেকসই উন্নয়নের জন্য সড়ক ও জনপথের পক্ষ থেকে নতুন করে ৪২ কোটি ৫১ লক্ষ ৪২ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। সড়ক ও জনপথের কর্মকর্তারা সড়কের ক্ষতিগ্রস্ত অংশগুলো মেরামত সহ যাতে করে বন্যায় সড়কটি নতুন করে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় এজন্য সার্ভে করে মাস দু’এক এর মধ্যে কাজ শুরু করা হবে বলে জানা গেছে।